অনলাইন
রাষ্ট্র সংস্কার শীর্ষক আলোচনা
‘ছাত্র আন্দোলনের স্মৃতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অধ্যায় লেখা হবে’
স্টাফ রিপোর্টার
(৩ সপ্তাহ আগে) ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৪:৩২ অপরাহ্ন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের কথা স্মরণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌস বলেছেন, ‘নিহতদের মধ্যে ৭৪ জন শিশু। ৪০০ জন মানুষ অন্ধ হয়ে গেছে, এক চোখ কিংবা দুই চোখ। ২০ হাজার জন মানুষ পঙ্গু হয়ে গেছে চিরতরে। এসব যদি মাথায় না রেখে আমরা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের কথা বলি তাহলে সহজে বিষয় না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্মৃতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অধ্যায় লেখা হবে।’
রাজধানীর মহাখালীর সেনা কল্যাণ টাওয়ারের একটি কনফারেন্স রুমে বুধবার ‘রাষ্ট্র সংস্কারে সকলের একাত্মতা ও অংশগ্রহণ প্রয়োজন’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। আলোচনার আয়োজন করে গুড গভর্নেন্স নামের একটি সংগঠন।
তিনি বলেন, ‘এরশাদ সরকারের নয় বছরে ৩৭০ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে ৬১ জন মানুষ নিহত হয়েছিলেন। আর শেখ হাসিনার সরকার মাত্র দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) ১ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। যুদ্ধ অবস্থা ছাড়া পুরো পৃথিবীতে এটি খুবই বিরল। কোনো একটি সিভিল সরকার তার জনগণের মধ্যে ১ হাজার জনকে হত্যা করেছে। খুব বেশি নজর খুঁজে পাবেন না।’
আলোচনা সভায় বিচারক ইকতেদার আহমেদ বলেন, ‘২০০৮–এর নির্বাচন থেকে ২০১৮ পর্যন্ত নির্বাচন অবৈধ। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে হয়ে গেছে। ভোট গ্রহণ রাতে হয় না। দিনেই হয়। এসব নির্বাচনের মাধ্যমে যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তারা সবাই অবৈধ।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, ‘সমাজের সবাই নেতৃত্বদানকারী। এখানে কাউকে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। গুড গভর্নেন্স মানে কোনো পক্ষ–বিপক্ষ নয়, নিরপেক্ষ। তার কোনো পক্ষ থাকতে পারে না। সব জনগণের জন্য যেটা কল্যাণকর সেটা হচ্ছে সুশাসন।
গণ সংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘১৯৬৯ পর ১৯৭১ এসেছে। কিন্তু ১৯৭১ সালের পর এসে দেখলাম তারা ১৯৭০–এ এসে দাঁড়িয়ে আছে। ৭১ সালকে অস্বীকার করার মতো ঘটনা ঘটেছে।’
আলোচনা সভায় মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের ঐক্য ধীরে ধীরে দুর্বল হচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে। প্রতিটি ইট এক নম্বর হলেই একটি এক নম্বর বিল্ডিং সম্ভব। ভালো নাগরিক ছাড়া ভালো সরকার হয় বলে আমি মনে করি না।’
সংস্কার পার্টির নির্বাহী আহ্বায়ক মেজর (অব.) আমীন আহমেদ আফসারী বলেন, ‘এই সরকারের ফেল মানে সবার ফেল। এটা সবার সরকার, সেই বিশ্বাসটা সবাইকে ধারণ করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সরকারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাহলে আমাদের সকলেরই পাশ হবে।’
বিচারপতি সিকদার মকবুল হক বলেন, ‘আন্দোলনে যেসব আত্মত্যাগ করা হয়েছে তার ফসল এখনো আমাদের কাছে আসেনি। এর জন্য সবাইকে একত্রিত হতে হবে।’
আলোচনা সভার সভাপতির বক্তব্যে সাবেক বিচারপতি মকবুল বলেন, ‘যারা কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছে তারা দেশের ভালো চায়। শুধু যে আন্দোলন ছাত্ররাই করেছে তাই নয়। জনগণও সঙ্গে ছিল।’
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক একেএম শরিফুল ইসলাম খানের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সিকদার মকবুল হক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিচারক ইকতেদার আহমেদ।