শেষের পাতা
বগুড়ায় একটি হিন্দু বাড়িতেও হামলা হয়নি
প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
১২ আগস্ট ২০২৪, সোমবারহঠাৎ হিন্দুরা লাঠিসোটা হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়লেন। স্লোগান দিচ্ছেন ‘তুমি কে আমি কে বাঙালি বাঙালি’। ‘আমার দেশ তোমার দেশ বাংলাদেশ
বাংলাদেশ’, ‘স্বাধীনতার এ কী হাল, নিয়ে গেল ঘরের চাল’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছে। প্ল্যাকার্ডে অনেক কিছু লেখা। অন্যতম একটি হলো ‘এই বাংলাদেশ আমার পূর্ব পুরুষের রক্তে গড়া, এই দেশ ছেড়ে যাবো না।’
বগুড়ার ব্যস্ততম এলাকা সাতমাথায় এসে সকাল থেকে জড়ো হয় চেনা-অচেনা কিছু হিন্দুত্ববাদীরা। তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদের ব্যানারে দুপুর পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় শহরজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। তাদের দাবি আন্দোলনে বিজয়ীরা তাদের বাড়িঘরে আগুন, ভাঙচুর করছে। তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলছে। অথচ প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের তথ্যমতে উল্লেখ করার মতো কোনো ঘটনা বগুড়াতে একটিও ঘটেনি। তাহলে কেন তারা কোন কারণে মারমুখী অবস্থায় রাস্তায় নামলো তার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে হিন্দুদের সামনে রেখে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা সড়কে অবস্থান করছিল বলে অনেকেই বলেছেন। শেখ হাসিনা পালানোর আগেই বগুড়ার আওয়ামী লীগ আত্মগোপনে ছিল। তারা শহরের মূল অংশ এড়িয়ে চললেও ঘাপটি মেরে বসে আছে। বিকাল-সন্ধ্যায় তাদের ছোট ছোট দল শহরের অলিগলির চায়ের দোকানকেন্দ্রিক একত্রিত হওয়ার চেষ্টা করছে। শহরে কললী, চেলোপাড়া, জলেশ্বরীতলা, বাদুড়তলা এলাকায় এমন ছোট ছোট দলে বের হতে দেখা যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগই হিন্দুদের ওপর ভর করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে।
এখনো থানাগুলো পুলিশশূন্য। একটা শহরে পুলিশ না থাকলে যে কেউ অসৎ উদ্দেশ্য সহজেই হাসিল করতে পারে। আওয়ামী লীগও তেমনটাই করার চেষ্টা করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওদিকে বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হয় বগুড়াতে উল্লেখ করার মতো হিন্দুদের ওপর অত্যাচার, জুলুম করা হয়েছে কিনা। উত্তরে তিনি মানবজমিনকে বলেন, ছোটখাটো দুই একটি ঘটনা নিজেদের মধ্যে হলেও উল্লেখ করার মতো এই জেলায় কিছুই ঘটেনি। হিন্দুদের আন্দোলনের পেছনে অন্য কোনো শক্তি কাজ করছে কিনা সে বিষয়ে খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।