শেষের পাতা
সরকারি জাহাজ কম দরে বিক্রি
কমোডর মতিউরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
স্টাফ রিপোর্টার
১৫ জুলাই ২০২৪, সোমবারসরকারি লঞ্চ কম দরে বিক্রির অভিযোগে চট্টগ্রাম নেভাল ট্রেনিংয়ের কমান্ড্যান্ট কমোডর মতিউর রহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনায় সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান শুভ্র বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মতিউর রহমান ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সাবেক ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার (অ্যাডমিন) এ এম রানা, সাবেক ক্যাপ্টেন ও জিএম (প্রোডাকশন) আনিছুর রহমান মোল্লা, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শওকত ইমরান ও মেসার্স এস বি কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মো. সাইদুজ্জামান সাইদ। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা নিয়মবহির্ভূতভাবে, প্রতারণা, কারচুপি ও পরস্পর যোগসাজশে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের এমভি সৃজনী লঞ্চটি দাখিলকৃত সর্বোচ্চ দর ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি করেননি। এর পরিবর্তে তারা সংশোধিত দর ২৫ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে ১০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৫০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের নিজস্ব ক্রয়/বিক্রয়/টেন্ডার সংক্রান্ত বিধিমালার কার্যপ্রণালী অংশের ১৬.৩ ধারায় বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কৃতকার্য দরদাতা পারফরমেন্স গ্যারান্টি প্রদানে ব্যর্থ হলে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে। এ ছাড়া উক্ত বিধিমালার দিকনির্দেশনা অংশের ২৫.৪ ধারায় বলা হয়েছে, স্থানীয় পণ্যের জন্য ৪৫ দিনের বেশি এবং আমদানিকৃত পণ্যের জন্য ১০০ দিনের বেশি পণ্য সরবরাহে বিলম্ব হলে ক্রয়াদেশ/চুক্তি বাতিল করা যেতে পারে এবং সেক্ষেত্রে পারফরমেন্স গ্যারান্টি বাজেয়াপ্ত করা যাবে।
টেন্ডারের ১ নং শর্তে বলা হয়েছে, দরপত্র দাখিলের পূর্বে ক্রয় ইচ্ছুক ব্যক্তি/দরপত্রদাতা বর্ণিত জলযান ভালোভাবে দেখতে পারবেন। না দেখার অজুহাতে দরপত্র দাখিলের পর কোনো ওজর আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। টেন্ডার কমিটি টেন্ডারের ১ নং শর্ত ভঙ্গ করে এবং খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের নিজস্ব ক্রয়/বিক্রয়/টেন্ডার সংক্রান্ত বিধিমালার কার্যপ্রণালী অংশের ১৬.৩ ধারা এবং দিকনির্দেশনা অংশের ২৫.৪ ধারা অনুসরণ না করে নিজেদের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
তারা বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার মাধ্যমে মেসার্স এসবি কনস্ট্রাকশনকে তার দাখিলকৃত সর্বোচ্চ দর ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রয় করেননি। বরং এসবি কনস্ট্রাকশনের জামানত বাজেয়াপ্ত না করে এবং নিয়মানুযায়ী দ্বিতীয়বার দরপত্র আহ্বান না করে এসবি কনস্ট্রাকশনের কাছেই সংশোধিত দর ২৫ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। এর মাধ্যমে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অবশিষ্ট অর্থ অর্থাৎ ১০ লাখ ৭৫ হাজার ৫৫০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।