শেষের পাতা
বিশ্বব্যাংকের কথা শুনতে হবে, কারণ তারা টাকা দেয়
স্টাফ রিপোর্টার
২১ জুন ২০২৪, শুক্রবার
বিশ্বব্যাংকের কথা শুনতে হবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, কারণ সংস্থাটি আমাদের টাকা দেয়। আমাদের টাকা লাগবে। আপনি টাকা দেন, আপনার কথা শুনবো। গতকাল বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতি: প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য ও পুষ্টি’- শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটি আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি। মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকার জনবান্ধব সরকার। অনেকেই বলে সরকার শিগগিরই পড়ে যাবে, কই সরকার তো পড়ে না। দেউলিয়া তো হলো না। বিশ্বব্যাংক কিছু বোঝে না, আপনি সবকিছু বোঝেন? আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, বাজেট দিলাম, এটা দেখেন। বোঝার চেষ্টা করেন। না বুঝে মন্তব্য করবেন না। আমরা বাজেট দিয়েছি অনেক চিন্তাভাবনা করে। অর্থনীতি নিয়ে প্রিম্যাচিউর বক্তব্য দেবেন না। আমি আপনাদের নিরাশ করতে চাই না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। কিন্তু বিশ্বব্যাংক ঠিকই ঋণ দিচ্ছে। এই আন্তর্জাতিক সংস্থা বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথেই আছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই বাজেট জনবান্ধব। বাজেটে যেসব প্রস্তাব পেয়েছি, সেগুলো আমরা দেখবো। বাজেট এখনো পাস হয়নি। আপনাদের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনা আছে, সেটা সম্ভব। একইসঙ্গে পরামর্শ দেয়ার সুযোগ রয়েছে। সেটা নেয়ারও সময় আছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির অবদান অপরিসীম। খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারে ভূমিকা রাখছেন কৃষক। তাই সরকার এই খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
সভায় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, মানুষের পকেটে টাকা আছে। এক সময় গ্রামে মাছ-মাংস পাওয়া যেতো না, এ দশা এখন নেই। মানুষের পকেটে টাকা না থাকলে লাখ টাকা দিয়ে কোরবানি দিতো না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এক সময় বড় বোয়াল সারাদিন বিক্রি হতো না, বাজারে সকাল থেকে সন্ধ্যা পড়ে থাকতো। এখন বড় বোয়ালের তিনজন ক্রেতা দাঁড়িয়ে থাকেন। গ্রামের মানুষেরও সক্ষমতা বেড়েছে। তিনি বলেন, ভর্তুকির কারণে রিজার্ভ কমেছে। ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ১৪ বিলিয়ন গেছে সার-তেল আমদানির জন্য। ৪৮ বিলিয়ন থেকে এমনিতে ২০ হয়নি। তিনি বলেন, বাজারে কোনো পণ্যের যেন ঘাটতি না থাকে সেজন্য আমরা কাজ করছি। মিয়ানমার থেকে আদা, মরিচ আমদানির চেষ্টা করছি। ১২ মাস ভোক্তার কোনো পণ্যের যেন কোনো ঘাটতি না থাকে। সামনে আরও ভালো সময় আছে-এমন আশাবাদ রেখে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে শুক্লমুক্ত কোটা ফ্রি সুবিধা পাচ্ছি। তিন মাসের রিজার্ভ আছে, রেমিট্যান্স বেড়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি সাজ্জাদুল হাসান বলেন, ১৫ বছরের বাজেট পর্যালোচনায় দেশজ উৎপাদন ৬ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে দারিদ্র্যের হার ১৮ শতাংশ কমে এসেছে। আগে আয়ু ছিল ৪২ বছর, বর্তমানে তা বেড়ে ৭২ বছর হয়েছে। তিনি বলেন, কৃষির উৎপাদন বেড়েছে। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার কালে ৩০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল, বর্তমানে তা উদ্বৃত্ত রয়েছে।
সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি ড. জিয়াকুন শি ও সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমসহ আরও অনেকে।
পাঠকের মতামত
হিম মানুষ সুদের উপরে টাকা লইয়া বোয়াল কিনতাছে আর আলু কিনতাছে ৬০ টাকা কেজি বাড়তাছে জিডিপি আর মুদ্রাস্ফিতি পাবলিকরে বিশ্ব ব্যাংক বুইঝা কী লাভ কন?
আসলে আমরা বাজেট বুঝিনা! বাজেটকে কেন জানি বাজে আলাপ মনে হয়! বছরে লাখো কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে, তা বিশ্ব ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে টেনেহিঁচড়ে অর্থ ব্যবস্থা সচল রাখার চেষ্টা চলছে, কাজেই বাজেট বোঝার দরকার কি?