বাংলারজমিন
সুনামগঞ্জে বন্যা, ঘর ছাড়ছেন মানুষ
এম.এ রাজ্জাক, সুনামগঞ্জ থেকে
(৯ মাস আগে) ১৮ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১:২৫ অপরাহ্ন

সুনামগঞ্জে গত তিনদিন ধরে ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যা দেখা দিয়েছে। জেলা শহর সহ বিভিন্ন উপজেলার ২ শতাধিক গ্রামের মানুষ বন্যার পানিতে কবলিত হয়ে পড়েছেন। জেলা শহরের সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ও ছাতক পয়েন্টে ১৩৮ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা শহরে পানি প্রবেশ করায় অনেকেই আশ্রয় নিচ্ছেন বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে। মঙ্গলবার ভোর রাতে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে ৫০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। বসতভিটায় বন্যার পানি ওঠায় সোমবার রাত থেকেই পরিবার পরিজন ও গৃহপালিত পশু নিয়ে এদিক ওদিক ছুটছেন শ্রমজীবী মানুষগুলো। ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলার সড়কগুলো একের পর এক ডুবে গেছে। জেলার ছাতক থেকে গোবিন্দগঞ্জ সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। তাহিরপুর থেকে জেলা শহরে যেতে শক্তিয়ারখলা নামক সড়কটি ডুবে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া, সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জ, ধর্মপাশা, দিরাই, জগন্নাথপুর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলার অধিকাংশ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব উপজেলার গ্রামের মানুষজন পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে রয়েছেন। গত দুইদিন ধরে জেলা শহর সহ বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
এদিকে পাহাড়ি ঢলে জেলার দোয়ারাবাজার, ছাতক ও তাহিরপুর সীমান্তবর্তী বীরেন্দনগর,লামাকাটা, কলাগাঁও, চারাগাঁও, বাশতলা,লালঘাট, লাকমা, বড়ছড়া, রজনী লাইন, রাজাই এলাকার সীমান্ত এলাকার রাস্তাঘাট ঢলের তোড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বর্তমানে সুনামগঞ্জ পৌর শহরে বিপদসীমার ৬৭ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমার পানি। ছাতকেও বিপদসীমার ১৪৫ সে.মি বা ৪.৭৬ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বিশ্বম্ভরপুরে বিপদসীমার ৪৩ সে.মি বা ১.৪১ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে, সেজন্য পানি বিপদসীমার উপরে থাকতে পারে। তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় পয়েন্টে ১৫৯ মি.মি, ছাতকে ৯৫ মি.মি, সুনামগঞ্জ পৌর শহরে ৬৮ মি.মি এবং দিরাইয়ে ৬৬ মি.মি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, নদীতে পানি টইটুম্বুর রয়েছে। নদীতে আর পানি ধারণ ক্ষমতা নাই। বন্যার আশংকা রয়েছে। এছাড়াও আগামী দুইদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীও রয়েছে। অতিরিক্ত ত্রাণ সামগ্রীর জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছি।
পাঠকের মতামত
হাওরের মধ্য দিয়ে ব্রিজ তৈরি করলে এ সমস্যার সমাধান হবে আশা করি।
হাওরের মধ্যদিয়ে রাস্তা তৈরির মাসুল দিতে হচ্ছে।