বাংলারজমিন
আলফাডাঙ্গায় অনিয়মের অভিযোগে অধ্যক্ষ বরখাস্ত
আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
১৩ জুন ২০২৪, বৃহস্পতিবারঅর্থ কেলেঙ্কারি, অসুস্থ না হয়ে চিকিৎসাজনিত ছুটি ভোগ করা ও নিজ ক্ষমতা বলে নিজের প্রতিষ্ঠানে ছেলেকে সিকিউরিটি গার্ডে নিয়োগের চেষ্টা করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শিয়ালদী আদর্শ আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আনিচুর রহমানের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভায় সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন তিনি।
অনিয়মের ঘটনায় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পহেলা জুন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সানোয়ার আহমেদ। লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগকে কেন্দ্র করে তৎকালীন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আনিচুর রহমান অনিয়ম করে নিজ ছেলেকে নিয়োগের চেষ্টাসহ সুনির্দিষ্ট ৫টি অভিযোগসহ ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর গভর্নিং বডির মিটিংয়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১০ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্য নোটিশের জবাব না দিয়ে পরবর্তীতে দুই ধাপে ২৮ দিনের চিকিৎসাজনিত ছুটির আবেদন করেন এবং অফিস থেকে দাপ্তরিক অনেক ফাইল নিয়ে নিজ জিম্মায় বাড়িতে রেখে ব্যক্তিগত কাজের মধ্যে সময় পার করেন।
এছাড়া, জানুয়ারি মাসে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান খানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে অফিসের কার্যক্রম চলমান রাখেন। সাবেক অধ্যক্ষর ২১ দিনের ছুটি মঞ্জুর করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দপ্তর বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করে কমিটি। আনিচুর রহমান ১৪ই জানুয়ারি পর্যন্ত অসুস্থ না থেকেও রেজিস্ট্রার ডাক্তারের ভুয়া চিকিৎসা পরামর্শ মোতাবেক ছুটি নেন। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি তদন্তপূর্বক ৫ দিনের সময় দিয়ে মাদ্রসায় যোগদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করার পরেও তিনি যোগদান করেননি। বরং ১৯শে ডিসেম্বর ২০২৩ সালে আবারও মেডিকেল ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। এ সময়ের মধ্যে তার চাকরির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় তিনি ২৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৪ সালে অবসরে চলে যান।
সাবেক অধ্যক্ষ দাপ্তরিক কাগজপত্র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে বুঝিয়ে না দেয়ায় আলফাডাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গত ৭ই মার্চ ২০২৪ সালে লিখিত স্বাক্ষরিত নোটিশে মাদ্রাসার দাপ্তরিক কার্য নথিপত্র, ব্যাংক চেক, জমার বহিঃ, এফডিআর স্লিপ ও আর্থিক একাডেমিক সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র সিজার লিস্ট করে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু সাবেক অধ্যক্ষ আনিচুর রহমান শিক্ষা অফিসারের নির্দেশ উপেক্ষা করে কোনো কাগজপত্র বুঝিয়ে দেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। অনিয়মের ঘটনায় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলেন। এ নিয়ে সাবেক অধ্যক্ষ আনিচুর রহমান জানান, আমি সরকারি বিধি মোতাবেক ছুটি নিয়ে অবসরে গিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোজ্জামেল হক বলেন, সাবেক অধ্যক্ষকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র বুঝিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করার পরেও বুঝিয়ে দেননি। বিষয়টি লিখিতভাবে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবগত করেছি।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমীন ইয়াসমীন বলেন, ১০ই জুন মাদ্রাসার সভাপতি, সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান অধ্যক্ষকে এনে শুনানি করেছি এবং ম্যাধমিক শিক্ষা সুপারভাইজারকে দায়িত্ব দিয়েছি উভয়কে নিয়ে সমাধান করতে।