শেষের পাতা
চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় যেন গনিমতের মাল
জালাল রুমি, চট্টগ্রাম থেকে
২২ এপ্রিল ২০২৪, সোমবার
জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১লা মার্চ চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান আ. ন. ম. শামসুল ইসলামসহ ট্রাস্টি বোর্ডের ১২ সদস্যের সবাইকে সরিয়ে প্রতিষ্ঠানটি নিজের দখলে নেন সাতকানিয়া লোহাগাড়া আসনের তৎকালীন এমপি ড. আবু রেজা নদভী। এরপর থেকে আয়তনে দেশের বৃহত্তম এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে নদভীর একক শাসন। নিয়োগ, চাকরিচ্যুতি, প্রমোশনসহ সবকিছু চলছে নদভী ও তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানার নির্দেশে। আর এতে সহযোগী হিসেবে আছেন নদভী ঘোষিত ট্রাস্টি বোর্ড ভাইস চেয়ারম্যান কাজী দ্বীন মোহাম্মদ। এরমধ্যে আইআইইউসি থেকে নদভী, তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা প্রতি মাসে বেসিক সম্মানী নেন প্রায় ১৩ লাখ টাকা। যেখানে এর আগের ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান আ. ন. ম. শামসুল ইসলাম গাড়ির জ্বালানি বাবদ মাসে নিতেন ১ লাখ টাকা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সাতকানিয়া লোহাগাড়া আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন আবু রেজা নদভী। তবে শুরুতেই এই নির্বাচনে আবু রেজা নদভীর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে যখন সংশয় দেখা দেয় তখন তিনি নানা প্রভাবশালী ব্যক্তিকে আইআইইউসি ক্যাম্পাসে এনে সংবর্ধনা দেয়া ও সম্মানিত করার ব্যবস্থা করেন। এরমধ্যে তিনি গত বছরের ২৪শে অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর এপিএস হাফিজুর রহমান লিকু এবং গোপালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম বাদলের নেতৃত্বে পাঁচ নেতাকে চট্টগ্রাম নিয়ে আসেন। তাদের লাঞ্চ, ডিনার, রেডিসন ব্লুতে রাখা, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটিতে প্রমোদ ভ্রমণ করানো, নগদ সম্মানী দেয়া ইত্যাদি খাতে প্রায় ২০ লাখ টাকা আইআইইউসি’র তহবিল থেকে ব্যয় করা হয়। তাদের দেখভাল করা, রেডিসনের বুকিং ও পেমেন্ট করা, গাইড হিসেবে থাকা, উপহার ও সম্মানী দেয়া ইত্যাদি কাজের সম্পূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন অ্যাকাউন্টস ডিরেক্টর আফজাল আহমদ, নদভী ও কাজী দ্বীন মোহাম্মদের আস্থাভাজন একজন কর্মকর্তা। এভাবে চলছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অবস্থিত এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে হরিলুট।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের প্রায় সবাই ছিলেন জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন আরবি অনুবাদক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন জামায়াতের তৎকালীন চট্টগ্রাম মহানগরের আমীর মমিনুল হক চৌধুরীর জামাতা আবু রেজা নদভী। একপর্যায়ে সেখানের শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতিও পেয়েছিলেন নদভী। তবে আইআইইউসি দখল করে নিজেকে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান দাবি করেই শিক্ষক বকেয়া বেতনের নামে আইআইইউসি তহবিল থেকে শুরুতেই একটা বড় অঙ্কের টাকা তুলে নেন তিনি।
এদিকে আইআইইউসি দখলে নিয়ে ‘যেমন খুশি তেমন’ নিয়োগ দিতে থাকেন আবু রেজা নদভী ও তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা চৌধুরী। প্রতিষ্ঠানটির নির্ধারিত বেতন কাঠামোর তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী বেতন, ভ্রমণ ও ডিউটি ভাতা নেয়া, বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উত্তোলন, বিধি-নিয়ম-নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিন শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেন তারা। নিয়োগপ্রাপ্তদের একটি বড় অংশের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নেই। এ ছাড়া নিয়োগ বাণিজ্য এবং আইআইইউসি’র টাকা আত্মসাতের ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয়ে বেশকিছু ডকুমেন্টস এসেছে মানবজমিনের কাছে।
জানা যায়, আইডিবি থেকে ঋণ নিয়ে আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে আইআইইউসি টাওয়ার নামে একটি বাণিজ্যিক টাওয়ার তৈরি করে। কথা ছিল, শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের একাডেমিক দক্ষতা বৃদ্ধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নে এই টাওয়ার থাকে প্রাপ্ত অর্থ ব্যয় করা হবে। আর এখন এই টাওয়ার থেকে প্রতি মাসে হাউজ রেন্ট হিসেবে পাওয়া প্রায় ৯০ লাখ টাকাকে কেন্দ্র করে বসেছে হরিলুটের আসর। এই টাওয়ার থেকে নদভী মাসিক সম্মানী হিসেবে নেন ১০ লাখ ৯ হাজার ৩৩৩ টাকা। তার স্ত্রী ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রিজিয়া সুলতানা চৌধুরী নেন ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এছাড়া নিজের অবস্থান ঠিকঠাক রাখতে নদভী এই আইআইইইসি টাওয়ার থেকে প্রতি মাসে আরও বেশ কয়েকজন ট্রাস্টি সদস্যকে মাসিক সম্মানীর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। যেখানে জয়েন্ট স্টক কোম্পানির নিয়মানুসারে কোনো ট্রাস্টি মেম্বারের সেখান থেকে সম্মানী তথা বেতন ভাতা নেয়ার সুযোগ নেই।
জানা যায়, আইআইইইসি টাওয়ার থেকে নদভীর একান্ত ঘনিষ্ঠ ট্রাস্টি সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যান কাজী দ্বীন মোহাম্মদ মাসিক ৬ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৭ টাকা মাসিক সম্মানী নেন। এ ছাড়া ট্রাস্টি সদস্য প্রফেসর সালেহ জহুরকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, খালেদ মাহমুদকে ১ লাখ টাকা, প্রফেসর ফসিউল আলমকে ৮০ হাজার টাকা, আব্দুর রহিমকে ৮০ হাজার ও বদিউল আলমকে ৫০ হাজার টাক মাসিক সম্মানী দেয়া হয়।
এ ছাড়া আইআইইউসি ক্যাম্পাস থেকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের বেতন-ভাতা পাওয়া নদভী ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েকজন শিক্ষক কর্মকর্তাকেও এই টাওয়ার থেকেও আলাদাভাবে সম্মানী দেয়া হয়। এরমধ্যে ট্রান্সপোর্ট বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর মাহি উদ্দিনকে ৭০ হাজার, প্রক্টর ইফতেখার উদ্দিনকে ২০ হাজার, রেজিস্ট্রার আক্তারুজ্জামান কায়সারকে ৭৫ হাজার, শিক্ষক জিয়াউর রহমানকে ২০ হাজার টাকা, কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখারকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়।
জানা যায়, আবু রেজা রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে ২০২১ সালে যখন আইআইইউসি দখলে নেন, তখন তিনি সম্মানী নিতেন ৪ লাখ টাকা। আর ২০২২ সালের ১লা জুলাই থেকে তিনি আইআইইউসি’র বাণিজ্যিক প্রকল্প আইআইইউসি টাওয়ার থেকে নিয়মিত সম্মানী নেয়া শুরু করেন ১০ লাখ ৯ হাজার ৩৩৩ টাকা। যা বছরে গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় সোয়া কোটি টাকা। এ ছাড়া কেবল অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ ও ডিউটি ভাতা খাতে নদভী ৪০ লাখ টাকা নিয়েছেন। বৈদেশিক ভ্রমণ ও ডিউটি ভাতা খাতে এই টাকার পরিমাণ আরও তিনগুণ হবে বলে আইআইইউসি’র হিসাব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। আর কাজ, মিটিং থাকুক বা না থাকুক বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির হলেই আবু রেজা নদভীকে ১০ হাজার টাকা তার মাসের ১০ লাখ টাকা বেতনের বাইরে দিতে হয়।
জানা যায়, কয়েক মাস আগে পিএইচপি থেকে কথিত চাইনিজ গাড়ি বলে একটি রেঞ্জ রোভার গাড়ি কেনেন আবু রেজা নদভী। সংসদ সদস্য হিসেবে শুল্ক ছাড় পাওয়ার পর নদভীর এই গাড়িটি ক্রয় বাবদ ৬৫ লাখ টাকা মূল্য পরিশোধ করতে হয় আইআইইউসি টাওয়ারের ফান্ড থেকে।
আইআইইউসি’র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুরানিক সায়েন্স বিভাগের একজন অধ্যাপক জানান, আবু রেজা নদভী আইআইইউসি’র প্রায় অর্ধ কোটি টাকা খরচ করিয়ে তার ব্যক্তিগত খেয়ালির লেখা ৬টি নন-একাডেমিক বই আরবী ও বাংলা ভাষায় প্রকাশ করেন। এদের মধ্যে কয়েকটি তার পিতা মাওলানা ফজলুল্লাহর জীবনী নিয়ে লেখা। এসব বই আবার আইআইইউসি’র লাইব্রেরিকে কিনতে বাধ্য করেন ট্রাস্টি চেয়ারম্যান আবু রেজা নদভী।
জানা যায়, সংসদ সদস্য হিসেবে ঢাকায় গেলে এমপি হোস্টেলে থাকতেন আবু রেজা নদভী। তবে গত ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনে এমপি পদ হারানোর পর নদভী ও তার পরিবারের জন্য ঢাকার বনানীতে একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করা হয়। নদভীর ব্যক্তিগত এই ফ্ল্যাটের অগ্রীম টাকা, ফার্নিচার ক্রয়, সুপারভাইজারের বেতন এগুলোর সবটাই আইআইইউসি’র অ্যাকাউন্টস পরিশোধ করছে। এ ব্যাপারে ১লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ থেকে ৩১শে জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত দুই বছরের জন্য একটা চুক্তি করা হয়। চুক্তির তারিখ উল্লেখ করা হয় ৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪। এই চুক্তি অনুসারে মাসের ভাড়া দেয়া হচ্ছে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এই ফ্ল্যাটের জন্য নদভীর অনেক আগের ব্যক্তিগত সহকারী, উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হতে না পারা আহমদুল হক বাবু নামের এক ব্যক্তিকে সুপারভাইজার হিসেবে ৫০ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০শে মার্চ, ২০২৪ তারিখে রেজিস্ট্রার এ এফ এম আকতারুজ্জামান কায়সার স্বাক্ষরিত এই নিয়োগপত্রে সুপারভাইজারের নিয়োগ ১লা জানুয়ারি, ২০২৪ থেকে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়। অথচ চুক্তিপত্র অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই ফ্ল্যাটের ভাড়া দেয়ার কথা। কোম্পানিকা মালের মতো এই অতিরিক্ত ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা কার স্বার্থে ব্যয় করা হলো তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট অনেকেই পে্রশ্ন তুলেছেন।
তাছাড়া নদভীর জন্য ঢাকায় ঘর ভাড়া নেয়া এবং এর সামগ্রিক ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কোনো কমিটির মিটিংয়ে উত্থাপন করা বা অনুমোদন নেয়া হয়নি। বিষয়টা একটু জানাজানি হলে অ্যাকাউন্টস ডিরেক্টর আফজাল আহমদ তার দায় এড়ানোর জন্য তাড়াহুড়ো করে ১৮ই মার্চ, ২০২৪ তারিখে নিজে স্বাক্ষর করে তা ৭ নম্বরে ফাইন্যান্স কমিটির মিটিংয়ের অন্তর্ভুক্ত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, গত বছর আবু রেজা নদভী তার এনজিও সংস্থা আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আইআইইউসি’র সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করিয়েছে। এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ায় আইআইইউসি’র ডোনার ও দাতা সংস্থাগুলো নদভীর আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের দিকে নিয়ে যেতে আর কোনো বাধা রইল না। যেখানে ট্রাস্ট আইন অনুযায়ী, ট্রাস্টি কিংবা তাদের পরিবারিক অংশীদারিত্ব থাকা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করার কোনো সুযোগ নেই।
শুধু নদভী নয়, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অধিকাংশই ইচ্ছামতো এই হরিলুটের ভাগবাটোয়ারা পাচ্ছেন। গত ৩রা এপ্রিল স্ত্রীকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুরতে গেছেন প্রায় ১০ লাখ টাকা বেতনে আইআইইউসি’র বর্তমান ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ। যাওয়ার সময় আইআইইউসি’র কোনো পর্ষদের অনুমোদন ছাড়াই ১০ হাজার ডলার সমপরিমাণ অর্থ ভিসি’র নামে বরাদ্দ দেয়া হয় ক্যাশ চেকের মাধ্যমে। সেখানে সফরের কারণ হিসেবে আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পর্ষদেই তার এই সফরসংক্রান্ত বিষয়ে অনুমোদন নেই। পরে জানা যায়, আমেরিকায় পড়াশুনা করতে যাওয়া সন্তানকে দেখতেই স্ত্রীকে নিয়ে আইআইইউসি’র টাকায় সেখানে গেছেন তিনি। কতোদিনের এই সফর জানা না গেলেও সেখানে থাকা বাবদ আনোয়ারুল আজিমকে প্রতিদিন ৪শ’ ডলার করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
আইআইইইসি ক্যাম্পাসে গলফ মাঠ না থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির জন্য কিছুদিন আগে কেনা হয় ১১ লাখ টাকায় দুইটি গলফ কার। গলফ কার দু’টি অধিকাংশ সময় পড়ে থাকে গ্যারেজে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ও নিরাপত্তা বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মো. মাহিউদ্দিন এগুলো নিয়ে মাঝেমধ্যে ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে নদভীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মাহিউদ্দিনের বিরুদ্ধেও শেষ নেই অভিযোগের।মাহিউদ্দিনের নির্দেশে ও তত্ত্বাবধানে আইআইইউসি’র ৮টি কার, ২টি মাইক্রোবাস ও ১টি এম্বুলেন্স এক মাস নদভীর নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত হয়। বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনে লোক সমাগমের জন্য মাহিউদ্দিনের অনুমোদনে ১৫টি বাস ও ৫টি কার দেয়া হয়। এসব পরিবহনের জ্বালানি খাতে প্রায় ৫ লাখ টাকা মাহিউদ্দিন আইআইইউসি’র অ্যাকাউন্টস বিভাগ থেকে দেয়ার ব্যবস্থা করে। রাতের অন্ধাকারে নিজের অনুগত সিকিউরিটি অফিসার ও সিকিউরিটি গার্ডদের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসের আবু বকর হলের পাশ থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকার দামি গাছ কেটে বিক্রি করে দেন মাহিউদ্দিন। সেই টাকা আইআইইউসি’র ফান্ডে জমা না দিয়ে নদভীর নির্বাচনী ফান্ডে জমা দেয়া হয়। নদভী খুশি করার পুরস্কার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা সংশ্লিষ্ট মোট ১৫টি কমিটির সদস্য হয়েছেন এই শিক্ষক।
এদিকে অভিযোগ সমূহের বিরুদ্ধে জানতে ড. আবু রেজা নদভীকে বেশ কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে বিস্তারিত পরিচয় দিয়ে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।
নদভীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ও আইআইইউসি ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী দ্বীন মোহাম্মদের কাছে এই ট্রাস্ট সদস্যদের বিপুল পরিমাণ টাকা সম্মানীর নামে লুটপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মানবজমিনকে বলেন, ‘কোন ট্রাস্ট মেম্বার আইআইইউসি থেকে টাকা নেন না। টাকা নেয়ার বিষয়টি সত্য নয়।’ আগ্রাবাদের আইআইইউসি টাওয়ার থেকেই টাকা যাচ্ছে জানালে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং এই বিষয়ে ট্রেজারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। পরে ট্রেজারার আফজাল আহমদকে ফোন দেয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।
পাঠকের মতামত
এই ভন্ডের বিরুদ্ধে মামলা করুন। এর দূর্নীতির দায়ে ফাসি হওয়া উচিৎ।
very sad.
অধ্যাপক হুমায়ন সাহেবের বদ্দারহাটে ১৫ লক্ষ টাকার লোহার ব্রিজ বিক্রি করে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা জমা দেওয়া, বদ্দারহাটে বালি ভরাট করে ২০ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত বিল করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া, ইংরেজি বিভাগের বিভিন্ন ভাইবা ও থিসিস ডিফেন্স বোর্ডে অনুপস্থিত থেকে চেয়ারম্যানের ভাতা নেওয়া সহ আরো অনেক দুর্নীতির উপর একটি সচিত্র তদন্তমূলক প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য এই প্রতিবেদককে বিনীত অনুরোধ করছি।
ট্রেজারার এর নাম না থাকলে কি হয়েছে, নিউজটার প্রত্যেক টা লাইন ১০০% সত্য। নিয়োগ বানিজ্যের খবর আরো ভাল করে দেয়া দরকার ছিল। লেকচারার ৪/৫ লাখ, এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ৭/৮ লাখ, অফিসার ২/৩ লাখ, পিয়ন/ ক্লিনার ১ লাখ টাকা করে নিয়ে নিয়োগ বানিজ্য চলেছে। লেকচারার এর যোগ্যতার নিয়ম হল : মিনিমাম সিজিপিএ ৩.৫০ থাকতে হবে আউট অফ ৪ এ। সেখানে টাকার বিনিময়ে শুধু সিজিপিএ ৩.০০ থাকলেই টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন ভিসি ও ট্রাস্টের লোকেরা। এরা টাকার বিনিময়ে যে সব শিক্ষক স্যার ও ম্যাডাম নিয়োগ দিয়েছে, সবাই অযোগ্য। কিভাবে এরা ছাত্র ছাত্রীদের কে পড়াবে? তবে এরা শুধু পাওয়ার দেখায় ক্লাসে এবং সব জায়গায়।
আরো অনেক কাহিনী আছে দাদা: ১. প্রতিদিন দুপুর বেলা ১০/১২ আইটেম দিয়ে ছাত্রদের ক্যানটিন থেকে ফ্রি লাঞ্চ খাবে ভিসি সহ তার সব সহযোগীরা: ভিসি,প্রো ভিসি, ট্রেজারার, আফজাল আহমেদ, মাহী উদ্দিন, ফয়সাল আহমেদ, জিয়া উদ্দিন ও আরও অনেকে। গরু, দেশি মুরগী, পোলাও, খিচুড়ি, মাছ, ডিম, ভর্তা, ছোট মাছ, রোস্ট, মেজবানি, আহা, আরো কত কি!!! আর পুরো বিলটা সাধারণ ছাত্রদের উপর চাপিয়ে দিয়ে লাঞ্চ এর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ২. মাঝে মাঝে আবার ছাগল খাসি জবাই করে চলে উনাদের ভূরি ভোজ। ৩. বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে গরু জবাই করে নামকা ওয়াস্তে কিছু মাংস সাদা ভাত সাধারণ কর্মচারী দের খাওয়ায়ে বাকী মাংস বাসায় নিয়ে যান ট্রাস্ট, ভিসি ও তার সহযোগীরা। ৪. ভিসি আনোয়ারুল আজমের কোন প্রভিডেন্ট ফান্ড নাই, তারপরেও উনি শিক্ষক কর্মকর্তাদের কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে ১ কোটি টাকা জোর করে নিয়ে গেছেন। অথচ কোন শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে লোন চাইলে মাসের পর মাস তাদের ঘুরানো হয়, হয়রানি করা হয়। কিন্তু নিয়ম ছিল, লোনের আবেদনের ১ সপ্তাহের মধ্যে লোন অনুমোদন করে চেক দেয়া। ৫. ট্রান্সপোর্ট এর চেয়ারম্যান মাহি উদ্দিন খুবই চরিত্রহীন, কুলাংগার, দুর্নীতিবাজ, নারীলোভী। ছাত্রীদের গায়ে হাত দেয়ার ও যৌন হয়রানির কারণে ঢাকা ক্যাম্পাসে তার বিরুদ্ধে জুতা ও ঝাড়ু মিছিল হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই বদমাশ এখন BBA ডিপার্টমেন্টের ফিমেল ক্যাম্পাস এ ক্লাস করায়। ছাত্রীরা এতে খুবই আতংকিত হয়ে থাকে। কিন্তু ভয়ে কিছুই বলতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিন ১২০/১৩০ টা গাড়ি যাতায়াত করে। গাড়ি গুলোর তেলের টাকা চুরি, ইঞ্জিন চুরি, পার্টস, ব্যাটারি চুরি এখন নিয়মিত খবর। এসব চুরির মূল হোতা এই মাহি উদ্দিন। এই মাহি উদ্দিন বিবিএ ডিপার্টমেন্টের নীতি নির্ধারনীদের একজন। তাই সে নিজের ছাত্র ছাত্রীদের খাতা অন্যদের দিয়ে দেখায়, ঠিকমতো ক্লাস করায় না। সে স্যার ও ম্যাডামদের রেজাল্ট নিজের ইচ্ছামত চেঞ্জ করে দেয়। কেঊ তার কথায় রেজাল্ট চেঞ্জ করতে না চাইলে স্যার ম্যাডামদের চাকুরী খেয়ে ফেলার হুমকি দেয়। তার প্রিয় ছাত্রদের কে নিজের ইচ্ছামত পরীক্ষার হলে বসায় এবং ডি গ্রেডের ছাত্রকে এ প্লাস দেয়। বিবিএর চেয়ারম্যানও তার ভয়ে কিছু বলতে পারে না।
একজন মৌলভীর উন্নয়নের গল্প
আবু রেজা নদভী সাহেব আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে আই আই ইউ সি লুটপাট করে খাওয়ার জন্য। মানবজমিন সকল পত্রিকায় লিখলেও এদের কিছু হবে না। তারা টপ টু বটম সব ঠিক করে লুঠ করতেছে।জামাতে প্রতিষ্ঠান করেছে। এরা লুঠপাঠ করতেছে।জামাত কে শিক্ষা দিচ্ছে।
অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ হুমায়ুন সাহেবের প্রচেষ্টার ফসল এই রিপোর্ট। উনি চাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অথবা ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হতে। এইজন্য উনি বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান এবং ভিসি মহোদয়কে সরানোর জন্য প্রাণপণে লড়াই করে যাচ্ছেন।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০ ২০১০ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আর্থিক বিষয়ের জন্য মাননীয় ট্রেজারার অধ্যাপক হুমায়ুন কবির সাহেব একক ভাবে দায়ী থাকবেন। কিন্তু ওনার নামটা এত বড় রিপোর্টের মধ্যে কোথাও একটি বারের জন্য আসেনি সুতরাং এই রিপোর্টটা একটা মনগড়া এবং হলুদ সাংবাদিকতার প্রতিফলন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এতে আর কোন সন্দেহ রইল না। যদিও এই রিপোর্টের মধ্যে হিসাব পরিচালককে ট্রেজারার বানানো হয়েছে এতেই বুঝা যায় সাংবাদিক সাহেব কতটুকু সাংবাদিকতায় অজ্ঞ। যাইহোক অধ্যাপক হুমায়ুন সাহেবকে দুদকের কাছে নিয়ে গেলে এবং ওনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই রিপোর্টের পিছনে কার কি ইন্ধন আছে তলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে আশা করি।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০ ২০১০ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আর্থিক বিষয়ের জন্য মাননীয় ট্রেজারার অধ্যাপক হুমায়ুন কবির সাহেব একক ভাবে দায়ী থাকবেন। কিন্তু ওনার নামটা এত বড় রিপোর্টের মধ্যে কোথাও একটি বারের জন্য আসেনি সুতরাং এই রিপোর্টটা একটা মনগড়া এবং হলুদ সাংবাদিকতার প্রতিফলন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এতে আর কোন সন্দেহ রইল না। যদিও এই রিপোর্টের মধ্যে হিসাব পরিচালককে ট্রেজারার বানানো হয়েছে এতেই বুঝা যায় সাংবাদিক সাহেব কতটুকু সাংবাদিকতায় অজ্ঞ। যাইহোক অধ্যাপক হুমায়ুন সাহেবকে দুদকের কাছে নিয়ে গেলে এবং ওনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই রিপোর্টের পিছনে কার কি ইন্ধন আছে তলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে আশা করি।
এ সংবাদ টা সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য এখানে উল্লেখিত একটা নামই যথেষ্ট!!! ১. আ্যাকাউন্টস ডিরেক্টর আফজাল আহমেদ। ২. ট্রেজারার আফজাল আহমেদ। এ পত্রিকায় উল্লেখিত দুটো পদধারী ব্যাক্তিই একজন। যদি ও তাহার প্রথম পদ তা সত্যি। তবে দ্বিতীয় পদ টা মিথ্যা। তাহলে IIUC এর সম্মানিত ট্রেজারার কে? উত্তর ঃ প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির চৌধুরী। এখন আমার প্রশ্ন (ক) এ পত্রিকায় উনার নাম একবার এর জন্য ও কেন উল্লেখ করা হয়নি? ২/ একজন আ্যাকাউন্টস ডিরেক্টর এর নাম দুটো পদে দেখানো হলো কেন? ৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন টাকা ট্রেজারার এর signature ছাড়া পাস হয় না। তাহলে উনার নাম একবার এর জন্য ও কেন ব্যাবহার করা হয়নি? বুঝতে হবে, এ সংবাদ বস্তুনিষ্ঠ নয়। এখনে অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে। আমার মনে হচ্ছে এটা একটা ষড়যন্ত্র।
সবাইকে একদিন মরতে হবে। আবু রেজাকেও একদিন মরতে হবে। রিজিয়া সুলতানা কেও একদিন মরতে হবে। তারপর পূঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে আল্লাহর কাছে হিসাব দিতে হবে। আর আবু রেজা এগুলো ভালো করেই জানে।
রিপোর্ট করতে গিয়ে অতিরিক্ত অভিযোগ করে ফেলেছে মানব জমিন। বলেছে ড. আবু রেজা নদভী আরবি অনুবাদে কাজ করতেন। অথচ উনি দাওয়াহ ডিপার্ট্মেন্টের একজন শিক্ষক ছিলেন। উনি অধ্যাপক। মানলাম অন্যান্য কিছু অভিযোগের সত্যতা আছে কিছু কিছু; কিন্তু বাড়াবাড়ি ত হয়েছে এই পত্রিকাটির।
একটা উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এরা ধ্বংস করে দিলো...
দুদক কোথায়।
গরিবের পোলা আফজাল আহমদ ওরফে (কালা মিয়া সওদাগর এর পোলা) এখন ফুলে কাঁঠাল গাছ. ভেরি রুড
আবু রেজা নদভী ও তো আলেম না, ও আসলে জালেম, ও আলেম সমাজের কলংক? " ঘুষ খাইবার সুযোগ পাইনা, তাই ঘুষ খাইতে পারি না! সেই জন্যই আমি সাধু"? এরা সুযোগ পেলে নিজের মায়ের গয়না টা ও লুট করে খাবে ! এই পিষাসের দল । আল্লাহ এদের বিদ্যা দিয়েছে, আর চুরি করার বুদ্ধি দিয়েছে, কিন্তু হেদায়েত দেয় নাই। ও দয়াময় আল্লাহ দয়াকরে এ আলেম সমাজের কলংক এ দূর্নীতি বাজ দের কে হেদায়েত দান করুন।
গজব পড়ুক সকল গুন্ডা, পান্ডা ও তাদের দোসরদের উপর।
একজন আলেম জালেম হয়ে উঠার গল্প। আরও কিছু দিন পর শুনব, একজন আলেম নামের জালেমের উত্তান পতন।
ড. আবু রেজা নদভী একজন কওমী ঘরাানার লোক। এই প্রতিষ্টানটি তার হাতে এভাবে ধর্ষিত হচ্ছে ভেবে মর্মাহত হলাম। সাবাস নদভী ! সাবাস আল্লামা ফজলুল্লাহ (র:) এর পুত্র !!!
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অথরিটি যেমন দুর্নীতি গ্রস্থ, এখানে পড়াশোনা শিক্ষাত্রীরাও একই মাত্রার বেয়াদপ এবং সন্ত্রাসী প্রকৃতির হয়। এরা ইসলামী সেন্টিমেন্ট কাজে লাগিয়ে দুনিয়ার আকাম -কুকাম করে বেড়ায়। এরা শিবিরের রগ কাটা রাজনীতি থেকে এখনো বের হতে পারেনি। আমি নিজেই এর ভুক্তভুগি।
বাংলাদেশটাকে উনারা নিজেদের মামুর বাড়ি মনে করে
উনি ভালো মানুষ। একা খায়নি, আত্মীয় স্বজন সবাইকে নিয়ে খেয়েছেন।
জামায়াতের প্রতিষ্টান গুলো শুধু জামায়াতের লোকদেরই কাজে আসত। সাধারণের জন্য বিশেষ কিছু ছিলনা। এখন জুতা নদভীর কাজে আসছে। এই জুতা নদভী আবার জামায়াত নেতার জামাতা। জামায়াত নেতার মেয়েও জুতা নদভীর অপকর্মের সহযোগী। হায়! বুকটা ফাইট্টা যায়।
আওয়ামী গুন্ডাবাহিনীর কাছেত পুরো দেশই জিম্মি। আইআইইইসিত কোন ছার।
সারাদেশ লুটেরাদের দখলে।