খেলা
সিটিকে হারিয়ে হুঙ্কার আনচেলোত্তির
‘কেউ যা ভাবতে পারে না সেটাই করে দেখায় রিয়াল’
স্পোর্টস ডেস্ক
১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার
রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে ড্র করার পর ঘরের মাঠে ম্যানচেস্টার সিটিই এগিয়ে ছিল। তবে ম্যাচ শুরু হতেই রদ্রিগোর গোলে লিড নেয় রিয়াল। শেষ কোয়ার্টারে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান কেভিন ডি ব্রুইনা। এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও দুই দল একাধিক আক্রমণ করলেও গোলের দেখা পায়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে সিটিকে হারিয়ে চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে ওঠে রিয়াল। টাইব্রেকারে সিটির বার্নাডো সিলভা ও মাতেও কোভাচিচের শট ফিরিয়ে দিয়ে নায়ক বনে যান রিয়াল গোলরক্ষক লুনিন। ম্যাচ শেষে রিয়ালের গর্বিত কোচ কার্লো আনচেলোত্তি বলেন সবাই সেটা ভাবতে পারে না সেটাই করে দেখায় তার দল।
বুধবার ইত্তিহাদে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে নির্ধারিত সময় শেষে অতিরিক্ত সময়েও ১-১ গোলে ড্র থাকে ম্যাচ। এরপর টাইব্রেকারে সিটিকে ৪-৩ গোলে হারায় রিয়াল। একই দিনে আরেক কোয়ার্টার ফাইনালে আর্সেনালকে ১-০ গোলে হারায় বায়ার্ন মিউনিখ। সেমিফাইনালে রিয়ালের প্রতিপক্ষ বাভারিয়ানরা। টাইব্রেকারে প্রথম শট মিস করেন রিয়ালের লুকা মদ্রিচ। এরপর রিয়াল আর কোনো শট মিস করেনি আর সিটি গোলরক্ষক পরে আর কোনো শট সেভ করতে পারেনি। সেমিফাইনালে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের রেকর্ড ১৫বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়ালের প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ। এর আগে প্রথম লেগে ৩-৩ গোলে ড্র হয়েছিল।
ম্যাচ শেষে রিয়াল বস আনচেলোত্তি বলেন, “যা কেউ ভাবতে পারে না, তেমন কিছুই করে দেখায় রেয়াল মাদ্রিদ। আমরা শুরুটা করেছিলাম ভালো, গোল করে ফেলি শুরুর দিকেই। কিন্তু এরপরই খেলাটা বদলে যায়। ওরা প্রবল চাপে ফেলে আমাদের। এতটা নিচে নেমে রক্ষণ সামলানোর পরিকল্পনা আমাদের ছিল না। তবে এটি তো বড় ম্যাচ, এরকম পরিস্থিতি আসতেই পারে এবং তখন লড়াই করা জরুরি। পেনাল্টি শুটআউটে যখন ম্যাচ গড়াল, আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে আমরা যাব পরের ধাপে। পরিশ্রম দিয়ে হোক বা ত্যাগ দিয়ে বা যে কোনোভাবে, জয়টাই আসল।”
তিনি বলেন, ‘আমরা রক্ষণ খুব, খুব ভালোভাবে সামলেছি আজকে। লড়াইটা ছিল স্রেফ টিকে থাকার। মাদ্রিদ এরকমই এক ক্লাব, যখন মনে হয় কোনো উপায় নেই, তখনই আমরা কোনো একটি পথ খুঁজে নেই। আগেও অনেকবার আমরা এটা দেখেছি রেয়াল মাদ্রিদের ক্ষেত্রেৃ এই জার্সি, এই ব্যাজ এটিই কিছু একটা বের করে আনে ভেতর থেকে। কেউ যা ভাবতে পারে না, তেমন কিছুই করে দেখায় এই ক্লাব।’
এদিন স্বভাববিরুদ্ধভাবে অতি রক্ষণাত্মক স্টাইলে খেলেছে রিয়াল। তবে কৌশলটা বিপজ্জনক ছিল। সিটির স্রোতের মতো আক্রমণ, রক্ষণ দেয়াল ভেঙে দিতে পারতো যে কোনো সময়। সেই ঝুঁকিটা নিয়েই শেষ পর্যন্ত সফল হয় রিয়াল। ম্যাচের ৬৮ শতাংশ সময় বল ছিল ম্যানচেস্টার সিটির পায়ে, মোট ১৮টি কর্নারও পায় তারা। আর রিয়াল কর্নার আদায় করতে পারে কেবল ১টি। সিটি গোলে শট নেয় ৩৩টি, লক্ষ্যে ছিল ৯টি। রিয়াল গোলে শট নিতে পারে কেবল ৮টি। লক্ষ্যে ছিল ৩টি। যদিও আনচেলোত্তির মতে সিটিকে হারাতে রক্ষণাত্মক হওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। তিনি বলেন, ‘একটাই পথ ছিল এখান থেকে জিতে আসার, নিজেদের সুযোগ কাজে লাগানো, আমরা তা করেছি শুরুতে এবং এরপর রক্ষণ ভালোভাবে সামলানো। এই সিটির বিপক্ষে আর কোনো পথ নেই। আমরা যা করেছি, তাতে আমি গর্বিত। এই ধরনের বড় ম্যাচে যখন দল যখন নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দেয় ও সবকিছু ত্যাগ করে, তা ভালোবাসি আমি। আমার বিশ্বাস, ম্যানচেস্টার সিটিকে এখানে হারাতে অন্য আর কোনো উপায় ছিল না।’