খেলা
লঙ্কার বিপক্ষে শুরু বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি
স্পোর্টস রিপোর্টার
৪ মার্চ ২০২৪, সোমবার
৮ই জুন ২০২৪, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে দুই দলের মুখোমুখি হতে এখনো প্রায় ৩ মাস বাকি। তার আগে নিজেদের মাটিতে লঙ্কার বিপক্ষে প্রস্তুতিটা একটু আগে সেরে নেয়ার সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। ২০২৩ সালে ৩১শে ডিসেম্বর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়েই বছরটা শেষ করে বাংলাদেশ। বিপিএল শেষে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এ বছরের আন্তর্জাতিক ব্যস্ততা আজ শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি দিয়েই। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। বলার অপেক্ষা রাখেনা এই বছর টাইগারদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা শুরু হচ্ছে এই সিরিজের মধ্যদিয়েই। শুধু তাই নয় দেশের ক্রিকেটের নয়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর যাত্রা শুরু হচ্ছে লঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই। টাইগার দলনেতাও দারুণ আত্মবিশ্বাসী। তিন ফরম্যাটেই জয় চান তিনি। তবে সেখানে থাকতে হবে পরিকল্পনার ছাপ ও মাঠের পারফরম্যান্স। তিনি বলেন, ‘আগে যে অবস্থায় ছিলাম তার থেকে ভালো ক্রিকেট খেলা শুরু হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই যে, হোমে ম্যাক্সিমাম ম্যাচ যেন আমরা জিততে পারি। টেস্ট খেলার যে গুরুত্বটা, এটা যেন সবার মধ্যে আরও বিল্ডআপ হোক। আমরা যখন বাইরে যাবো সেখানে যেন লড়াই করতে পারি। ওয়ানডেতে আমরা মাশাল্লাহ ভালো করতেছি। কিন্তু দল হিসেবে বড় কোনো টুর্নামেন্ট আমরা পায় নাই। সেই প্ল্যান নিয়েই আগাবো দেশের হয়ে যেন ট্রফি নিয়ে আসতে পারি। আর টি-টোয়েন্টিতে শেষ বছরটা খুব ভালো গেছে। আগের থেকে অনেক ইম্প্রুভ হয়েছে, আরও ভালো করলে সামনের দিকে যেকোনো টিমের বিপক্ষে ভালো খেলতে পারবো।’
আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। তবে সিরিজ শুরুর আগে লঙ্কার কোচ সিলভার জানিয়েছেন সব ফরম্যাটে তারাই এগিয়ে আছে। তিনি বলেন, ‘আমি তো বলবো শ্রীলঙ্কাই ফেভারিট। তবে যা বললাম, দুই দলই খুব ভালো। সিরিজ জেতা তাই অনেক কঠিন হবে। আমরা সেরা ক্রিকেট খেলতে চাই।’ দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে বন্ধুত্ব থাকলেও মাঠে ক্রিকেটে বৈরিতাও কম নয়। সব শেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউজের টাইম আউট কাণ্ডে দুই দেশের ক্রিকেটে এখনো বইছে গরম হাওয়া। তাই লঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে বিষয়টি আরও একবার উঠে আসে অধিনায়ক শান্তর সামনে। যদিও তিনি জানিয়েছেন এই সব নিয়ে ভাবতে চান না। শান্ত বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আসলে বাইরের বিষয়গুলো নিয়ে খুব একটা চিন্তা করছি না। আমার মনে হয় খুব ভালো একটা সিরিজই হবে। দুইটা দলই জেতার জন্য নামবে। জেতার জন্য যেভাবে পরিকল্পনা করা দরকার সেভাবে করবো। আর আশা করছি ভালো সিরিজই হবে।’
অন্যদিকে দুই দলের মাঠের লড়াইয়ে পরিসংখ্যান দেখলে অবশ্য লঙ্কান প্রধান কোচের দাবি উড়িয়ে দেয়া যাবে না। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছে ২০২২-এর ১লা সেপ্টেম্বর। শ্বাসরুদ্ধকর সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা জিতেছে ২ উইকেটে। মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যানেও এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। ১৩ ম্যাচের লড়াইয়ে বাংলাদেশ জিতেছে ৪ ম্যাচ, ৯ ম্যাচ জিতেছে শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে ২০২৩ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে হিসাব করলে এগিয়ে বাংলাদেশ। এই সময়ে ১৪ ম্যাচ খেলে ১০টিই জিতেছে বাংলাদেশ, হেরেছে ৩টি ও ১ ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করেছে। শ্রীলঙ্কা এ সময় ১৩ ম্যাচ খেলে জেতে ৫ ম্যাচ, হেরেছে ৭ ম্যাচ ও পরিত্যক্ত হয়েছে ১ ম্যাচ।
এই সিরিজে মাঠে নামার আগে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতিটাও দারুণ বলতে হবে। দলের প্রায় সব ক্রিকেটারই ব্যস্ত ছিল দেশের সবচেয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) অধিনায়ক শান্ত সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে খুব বেশি কিছু করতে না পারলেও তার যোগ্যতার প্রমাণ দেয়ার কিছু নেই। যেকোনো মুহূর্তে তিনি জ্বলে উঠতে পারেন। এ ছাড়াও লিটন দাস, সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়, তাওহীদ হৃদয় ও শেষ মুহূর্তে দলে সুযোগ পাওয়া জাকির আলী অনিকরা আছেন দারুণ ফর্মে। বল হাতে দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামও আছেন ছন্দে। তবে লম্বা বিপিএল খেলে ক্রিকেটাররা ক্লান্ত থাকারও একটি ভয় আছে। আর প্রতিপক্ষও কম নয়। তবে অধিনায়ক মনে করেন তারা কোনো চাপেও নেই আর বিপিএল খেলে ক্লান্তও নয়। তিনি বলেন, ‘চাপ অনুভব করছি না। আমাদের খেলায় আমরা ফোকাস করছি। আমাদের হাতে যেটা আছে, যেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি সেটা নিয়েই ভাবছি, সেটাই করবো। চাপ... প্রত্যেক আন্তর্জাতিক সিরিজই চাপ। সেটা আমাদের জন্য, সেটা প্রতিপক্ষ দলের জন্যও। সবাই পর্যাপ্ত পরিণত এগুলো সামলানোর জন্য। আর বিপিএলের জন্য ক্লান্ত আমার মনে হয় এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট যে জায়গায়, সবাই ওইভাবে মেন্টেইন করে মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে। আমার মনে হয় না এটা নিয়ে কেউ চিন্তা করছে বা ক্লান্ত আছে।’