শেষের পাতা
সুনামগঞ্জে ২৩ কোটি টাকার ব্রিজের গোড়ার মাটি ধসে নদীতে
এমএ রাজ্জাক, সুনামগঞ্জ থেকে
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শনিবার
সুনামগঞ্জের আবুয়া নদীর ওপর ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ফতেহপুর-তাহিরপুর সেতুটি উদ্বোধনের আগেই গোড়ার মাটি নদীতে ধসে যাচ্ছে। সেতুর গোড়ায় ড্রেজিংয়ের বালু-মাটি ডাম্পিং করার কারণে এ ধসের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে সেতুটি এখন হুমকির মধ্যে পড়েছে। ব্রিজের গোড়ায় মাটি আটকানোর জন্য বাঁশের চাটাই দিয়ে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ।
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর, তাহিরপুর ও নিয়ামতপুর সড়কের আবুয়া নদীর ওপর ২০১৮ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ৪৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৪ ফুট প্রস্থের সেতু নির্মাণ করে। ২০২২ সালে সেতুর কাজ শেষ হয়। কিন্তু অ্যাপ্রোচ সড়ক না থাকায় সেতুটি কাজে আসছিল না। বর্তমানে সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৩০ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করছে মেসার্স কামরুল অ্যান্ড ব্রাদার্স অ্যান্ড সালেহ আহমদ জয়েন্টভেঞ্চার নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের মধ্যে রয়েছে মাটি ভরাট, কার্পেটিং, দুই পাশে সিসি ব্লক নির্মাণ। অ্যাপ্রোচ সড়কের জন্য ড্রেজারের মাধ্যমে দূর থেকে বালু, মাটি এনে সেতুর গোড়ায় স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ড্রেজিং করা পানিমিশ্রিত মাটির চাপে সেতুর গোড়ার মাটি নদীতে ধসে যাচ্ছে এবং কয়েক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় যুবলীগ নেতা লুৎফুর রহমান নাঈম জানান, এই ব্রিজের মাধ্যমে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে। কিন্তু সেতুর কাজ শেষ না হওয়া এবং উদ্বোধনের আগেই গোড়ায় অপরিকল্পিক ভাবে ড্রেজিংয়ের বালু-মাটি রাখা হয়েছে। যার কারণে ড্রেজিংয়ের বালি, মাটির চাপে গোড়ায় ফাটল দেখা দিয়ে নদীতে ধসে পড়ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-ঠিকাদার রণজিৎ চৌধুরী রাজন বলেন, গোড়ায় মাটির রাখার কারণে সেতুর কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। কিছু দুষ্কৃতকারী রাতে মাটির ডাম্পিংয়ের বাঁধ কেটে দেয়ায় নদীর পাড়সহ এখন সেতুটি হুমকির মুখে পড়েছে। সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, অ্যাপ্রোচ সড়কে মাটি ভরাটের জন্য ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে সেতুর গোড়া থেকে পাম্পিং করে উপরে উঠানো হচ্ছিলো। পাম্পিংয়ের পানির কারণে সেতুর তলদেশের কিছু মাটি ধসে গেছে। তাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এখানে মাটি ডাম্পিং বন্ধ করতে বলেছি। যেটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা দ্রুত মেরামত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মফিজুর রহমান জানান, ফতেপুর সেতু এলাকা পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলেছি। চিঠি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশটুকু দ্রুত মেরামত করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সওজ কর্তৃপক্ষকে কঠোরভাবে কাজ মনিটরিং এবং সেতু এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য বলে দেয়া হয়েছে।