ঢাকা, ৯ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

যুবকের সঙ্গে যুবতীর বানোয়াট ছবি, হত্যা করা হলো যুবতীকে

মানবজমিন ডেস্ক

(১ বছর আগে) ২৯ নভেম্বর ২০২৩, বুধবার, ১২:১৩ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৬:৩৬ অপরাহ্ন

mzamin

বানোয়াট এক ছবিতে এক যুবকের সঙ্গে এক যুবতী। এমন একটি ছবি ভাইরাল পাকিস্তানে। ইন্টারনেটে তা ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে ওই যুবতীকে তার পিতা ও চাচা মিলে নিজেদের সম্মান রক্ষার নামে গুলি করে হত্যা করেছে। পুলিশ সন্দেহ করছে, ভাইরাল ছবিটি কারসাজি করে বানানো হয়েছে। অনলাইন বিবিসি বলছে, ঘটনাটি ঘটেছে কোহিস্তানে। কর্তৃপক্ষ বলছে, উপজাতির এক জিরগার (পরিষদ) প্রবীণ সদস্যদের নির্দেশে ১৮ বছর বয়সী ওই যুবতীকে তার পিতা ও এক চাচা গুলি করে হত্যা করে। এ অভিযোগে ওই যুবতীর পিতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আর চাচা রয়েছে পলাতক। নিহত যুবতীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। তার সঙ্গে ছবিতে যে যুবককে দেখা গেছে, জিরগা থেকে তাকেও হত্যা করতে বলা হয়েছে। কিন্তু তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। পুলিশ বলেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্য এক যুবতী ও এক যুবকের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর তাদেরকেও হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। তাদের ছবিও কারসাজি করে বানানো বলে পুলিশের ধারণা। তারা বলছে, দুটি ঘটনায়ই যে ছবি পাওয়া গেছে তা ফটোশপে এডিট করে বানানো। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া একাউন্টের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর নেপথ্যে কে বা কারা আছে তা জানতে তদন্ত করে যাচ্ছে পুলিশ। স্থানীয় পুলিশ দ্বিতীয় যুবতীকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়। কিন্তু আদালতের এক শুনানির পর তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এই যুবতী পরিবারে নিজের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন। 

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে খাইবার পখতুনখাওয়া প্রদেশের একটি পাহাড়ি এলাকা কোহিস্তান। ভীষণ রক্ষণশীল এলাকা এটি, দুর্গমও। কয়েক বছরে সেখানে এভাবে অনেক অনার কিলিংয়ের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। এসব হত্যা সংঘটিত করেন আত্মীয়রাই। তারা মনে করেন এর মধ্য দিয়ে পরিবারের সম্মান রক্ষা করা গেছে। সোমবার পাকিস্তানের জিও নিউজ রিপোর্ট করেছে, অনার কিলিংয়ের শিকার ওই যুবতীর বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় তারা জানতে পারে তাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত গ্রামের অন্যরাও। কোহিস্তানের মতো এলাকায় সম্মান রক্ষার জন্য এমন হত্যাকাণ্ডের রীতি প্রচলিত আছে উপজাতিদের মধ্যে। সেখানে কোনো নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগকে পরিবারের অন্যদের জন্য অসম্মানের দেখা হয়। সেখানকার রীতি অনুযায়ী, কোনো নারী অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়লে প্রথমে তার পরিবারকে নির্দেশ দেয়া হয়, নিজেদের মেয়েকে প্রথমে হত্যা করতে। তারপর অভিযুক্ত পুরুষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। 

মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো বলছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনার কিলিংয়ের কারণ ভিকটিম নারী পারিবারিকভাবে আয়োজন করা অন্য কোথাও বিয়ে করতে রাজি হন না। এক্ষেত্রে তাকে মেরে ফেলাকে উত্তম বলে মনে করা হয়। পাকিস্তানে প্রতি বছর এভাবে জীবন দিতে হয় কয়েক শত নারীকে। এসব ঘটনায় পুরুষকে হত্যার ঘটনা খুবই অল্প। 

২০১১ সালে কোহিস্তানে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গান গাওয়া ও হাতে তালি দেয়ার দৃশ্য ধারণ করা হয় তিন নারীর। এমন একটি ভিডিওতে একজন পুরুষকে নাচতে দেখা যায়। তবে তার নাচের দৃশ্যে ওই নারীরা ছিলেন না। তবু তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। এতে শত্রুতা সৃষ্টি হয়। তার জের ধরে হত্যা করা হয় চারজন পুরুষকে। এসব ঘটনায় দেশটিতে হতাশার সৃষ্টি হয়। কঠোর আইন করার জোর দাবি ওঠে।

 

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status