খেলা
টিকে থাকতে মানসিকভাবে শক্ত হতে চান দিপু
স্পোর্টস রিপোর্টার
৬ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার
‘শাহাদাত দিপু ও মুশফিক হাসান দু’জনই আমাদের এইচপি ইউনিটে কাজ করছে। এইচপি’র প্লেয়ার ওরা। আমরা যথেষ্ট কনফিডেন্ট, রেড বল ক্রিকেটে সুযোগ পেলে ওরা নিজেদের মেলে ধরতে পারবে’- আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট দলে তরুণ দুই ক্রিকেটারের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। টাইগার শিবিরে সুযোগ পেয়ে এই দুই তরুণ ক্রিকেটারও দেখছেন অনেক দূরের স্বপ্ন। সুযোগ পেলে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণে মুখিয়ে আছেন দু’জন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চলছে আফগান মিশনে অনুশীলন। দিপু তার হঠাৎ বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে বেশ আবেগাপ্লুত। টেস্ট দলে সুযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘খুশি তো লাগবেই, এটা স্বাভাবিক। সবারই স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলে খেলার। আমারও একই।
টেস্ট স্কোয়াডে সুযোগ পেলেও এখনো তার স্বপ্নপূরণ অনেকটা দূরের বিষয়। আফগানদের বিপক্ষে একাদশে সুযোগ পেলে পাবেন নিজেকে প্রমাণের পথ। আর জাতীয় দলে টিকে থাকা সহজ ব্যাপার না। ঘরোয়া লীগের সঙ্গে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পার্থক্য দিপু টের পেয়েছেন ‘এ’ দলের হয়ে খেলে। এখন টিকে থাকতে তার নজর কোথায়? দিপু জানালেন শক্ত হতে চান মানসিকভাবে। তিনি বলেন, ‘আমি ডে বাই ডে নিজের স্কিলটা উন্নতি করার চেষ্টা করবো। মানসিকভাবে আরও শক্ত হওয়ার চেষ্টা করবো। এটাই আমার কাজ। যতই উন্নতি করবো, আমার জন্য খেলাটা সহজ হবে।’ ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের একজন ছিলেন দিপু। এই কয়েক বছরে তার সতীর্থদের অনেকেই গায়ে জড়িয়েছেন বাংলাদেশের জার্সি। তিনি অবশ্য এসব নিয়ে ভাবেননি কখনোই। তিনি বলেন ‘এসব ব্যাপার নিয়ে আমি কোনোদিন চিন্তা করিনি। চিন্তা করেছি, যখনই আমাকে ডাকবে খেলার জন্য প্রস্তুত থাকবো।’
দিপুর টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার অন্যতম কারণ বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে সমপ্রতি দ্বিতীয় আনঅফিসিয়াল টেস্টে ৭৩ ও ৫০ রানের দারুণ দু’টি ইনিংস। যদিও লাল বলের ঘরোয়া লীগে প্রথম শ্রেণির ২০ ম্যাচে ৩৬.১৪ গড়ে করেছেন ২টি সেঞ্চুরি মাত্র। সবশেষ লাল বলের ক্রিকেটে ভালো কিছু করতে পারেননি ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। জাতীয় লীগে ৬ ইনিংস খেলে স্রেফ ১১৫ রান করেছিলেন ১৯.৫৮ গড়ে। পরে বিসিএল ৫ ইনিংসে ২ ফিফটিতে ১৯৪ রান করেন ৩৮.৭৯ গড়ে। ‘এ’ দলে সুযোগ পাওয়াতেই তার বদলে যায় মানসিকতা। তিনটি ম্যাচেই ভালো করার প্রতি তার নজর ছিল দারুণ ভাবে।
এ নিয়ে দিপু বলেন, ‘আমি এ টিমে খেলছিলাম। তিনটা ম্যাচ ছিল ওইখানে। এটা নিয়েই ফোকাসড ছিলাম। এ টিমে ভালো করার। বাকিটা আমি জানতাম না, বা কী হবে না হবে।’ শনিবার মাগরিবের আযানের পর পর নির্বাচকরা দিপুকে ফোন দিয়ে জানান তার জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার কথা। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেই আনন্দের সংবাদটি জানান মা’কে। ছোটবেলা থেকে ক্রিকেটার হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে করেছেন অনেক ত্যাগ স্বীকার। অনেক ছোটবেলায় বাবাকে হারালেও ভাই আর মায়ের সাপোর্টে আজ দিপু এই পর্যায়ে। নিজের স্ট্রাগল নিয়ে দিপু বলেন, ‘আমার বাবা যখন মারা গেছেন তখন আমি ছোট ছিলাম। ওই রকমভাবে বুঝতে পারি নাই বিষয়টা। আস্তে আস্তে যখন বড় হচ্ছিলাম, আমার বড় ভাই আমাকে সাহায্য করছিল। এবং সুদীপ্ত ভাই ছিল, সে ক্রিকেটে অনেক হেল্প করেছিল। জিনিসপত্র থেকে শুরু করে সবকিছু দিয়ে আরকি। ওইভাবেই আসলে ওইখান থেকে আস্তে ধীরে আগানো।’