শেষের পাতা
সিলেটে প্রচারণার প্রথমদিনেই হামলা, সশস্ত্র মহড়া
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৩ জুন ২০২৩, শনিবার
সিলেট সিটি নির্বাচনের প্রচারণার প্রথমদিনই অঘটন ঘটেছে নগরের শামীমাবাদ আবাসিক এলাকায়। জাতীয় পার্টির প্রার্থীর লিফলেট বিতরণের সময় রাইয়ান নামের এক কর্মীর উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে যুবকরা সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয় নগরীর শামীমাবাদে।
গতকাল জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলের মিডিয়া শাখা থেকে মহানগর সদস্য সচিব আব্দুস শহীদ লস্কর বশির জানিয়েছেন, নগরীর শামীমাবাদ এলাকায় জাতীয় পার্টির লিফলেট বিতরণের সময় নজরুল ইসলাম বাবুলের সর্মথক রাইয়ান আহমদের উপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। শামীমাবাদ জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা। যুবলীগ নেতা শামীমের গ্রুপের অনসারী তুষারের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন এসে হামলা চালায়। তিনি জানান, জাতীয় পার্টির লিফটলেট বিতরণের সময় ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুরুজ মিয়া বাধা দেন রাইয়ানকে। পরে তুষারকে ইশারা দিয়ে তার উপর হামলা চালানো হয়। লিফলেট নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
এ সময় সে গুরুতর আহত হলে তাৎক্ষণিক ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয় বাসিন্দারা। রায়হান মাথা ও ঘাড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এ ঘটনায় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে- ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুরুজ মিয়া মানবজমিন’র কাছে হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, সঠিক কী ঘটেছে চোখে দেখিনি। আমরা মসজিদের ভেতরে ছিলাম। পরে বেরিয়ে এসে ঘটনা শুনেছি। জুমার নামাজের পর মসজিদের সামনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।
এ সময় রায়হান নামের ওই ছেলে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে লাঙ্গলের লিফলেট বিতরণ করছিল। এ নিয়ে স্থানীয়রা বাধা দিলে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই ছেলে দৌড়ে চলে যায়। আমি মসজিদ থেকে বেরিয়ে এসে তাকে পাইনি। তিনি জানান, এ ঘটনার পর জাতীয় পার্টির প্রার্থীর ছেলে ৪-৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে। এ সময় আমরা তাদের চলে যাওয়ার অনুরোধ করি। এরপরও তারা সশস্ত্র মহড়ার মাধ্যমে এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। পরে দেখে নেবে বলেও হুমকি দিয়ে যায়। তিনি জানান, বিষয়টি আমি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে অবহিত করেছি।
এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গতকাল শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। সকাল থেকে সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদিরের কাছ থেকে প্রার্থীরা প্রতীক সংগ্রহ করেন। প্রথমেই প্রতীক পান আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। নৌকা প্রতীক পেয়ে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা। সিলেটের মানুষ নৌকার পক্ষে রয়েছেন। আমরা নিয়মতান্ত্রিক প্রচারণা চালাবো। সিলেটের মানুষের মন জয় করে ভোটের মাধ্যমে আগামী ২১শে জুন নির্বাচনে জয়লাভ করতে চাই। এজন্য তিনি সিলেট নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। প্রতীক পেয়ে বেরিয়ে এসে তিনি নৌকার লিফলেট বিতরণ করেন। প্রতীক বরাদ্দের পর পরই নগরের মোড়ে মোড়ে ব্যানার ও পোস্টার সাঁটানোর হিড়িক পড়ে। পাশাপাশি মাইকিং শুরু করা হয়।
জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল প্রতীক গ্রহণের পর বেরিয়ে এসে জানান, ভোটের পরিবেশ স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ থাকলে সিটি নির্বাচনে লাঙ্গলেরই জয় হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, পরিবেশ আশঙ্কায় অনেকেই মাঠে থাকেননি। এখন নির্বাচন কমিশনের উচিত পরিবেশ স্বাভাবিক রেখে ভোট নিরপেক্ষ রাখা। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসান বলেন, প্রার্থীরা যেভাবে আচরণবিধি ভেঙে প্রচারণা চালাচ্ছেন তাতে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। সব প্রার্থীর জন্য সমান লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে তিনি নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানান।