ঢাকা, ১০ মে ২০২৫, শনিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

ডনের সম্পাদকীয়

পারমাণবিক যুদ্ধ হলে ক্ষতি কল্পনাতীত, সংযত হওয়ার এখনই সময়

মানবজমিন ডেস্ক
১০ মে ২০২৫, শনিবার
mzamin

ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের সঙ্গে শত্রুতায় জড়িয়ে পড়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিমানবন্দরগুলো বন্ধ রয়েছে। পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বাজার ব্যবস্থা প্রান্তসীমায়। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করেছে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ইসরাইলে তৈরি ভারতের ২৫টি ড্রোন গুলি করে তারা ভূপাতিত করেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভারতের ড্রোন হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। ৭ই মে শুরুতেই আজাদ জম্মু কাশ্মীর ও পাঞ্জাবে আগ্রাসী হামলা চালিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে সিন্ধু সহ বিভিন্ন স্থানে বৃহস্পতিবার ড্রোন হামলা জোরালো করেছে। ভারতীয় মিডিয়ায় দাবি করা হয়েছে যে, ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরে বিভিন্ন টার্গেটে হামলা করেছে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তান সরকার তা অস্বীকার করেছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো পেহেলগাম হামলার অপ্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছে ভারত। তারা কথিত ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করছে। জবাবে পাকিস্তান শুরুতে তাদের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। 
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, তার দেশ সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চায়। অন্যদিকে তার সেনাবাহিনী উত্তেজনা বৃদ্ধি না করার পক্ষে কথা বলেছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো, এখনো উস্কানিমূলক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। পাকিস্তানে এখনো তারা বেসামরিক লোকজনের জীবনকে বিপন্ন করছে। ফলে তাদের সংলাপ এবং উত্তেজনা না বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি উচ্চ মাত্রায় প্রশ্নবিদ্ধ।  

বৃহস্পতিবার একটি ইতিবাচক ঘটনা ঘটেছে উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের বিবৃতিতে। তিনি বলেছেন, দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং ডিজিএমও’দের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো বিদেশি বন্ধুরা যখন সংযত হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন, তখন সংকট নিরসনে সক্রিয়ভাবে সাহায্য করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট উদাসীনতা দেখা গেছে। এই উদাসীনতা পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীদের জন্য শুধু বিভ্রান্তিকরই নয়। একই সঙ্গে এই উত্তেজনা শুধু এই দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বিষয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। একই সঙ্গে তা পুরো দক্ষিণ এশিয়া এমনকি মধ্যপ্রাচ্যকে আক্রান্ত করতে পারে। 

তাই ইসলামাবাদ এবং নয়াদিল্লির সঙ্গে জাতিসংঘ এবং যেসব দেশের ভালো সম্পর্ক আছে তাদের উচিত এই উত্তাপকে  ঠাণ্ডা করার জন্য ভূমিকা পালন করা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের প্রতিই সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সঙ্গে কথা বলেছেন ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। উপসাগরীয় দেশগুলো, ইরান এবং অন্যরা সহ বিদেশি শক্তিগুলোর উচিত একটি কূটনৈতিক সমাধানের  জন্য তাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করা। 

উভয় দেশেই উগ্রপন্থা স্পষ্ট। কিন্তু  ভারতীয় মিডিয়া, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক পরিমণ্ডল তাদের দেশের সংঘর্ষ নিয়ে মেতে আছে। সম্ভবত তারা যুদ্ধকে বলিউডের অ্যাকশন ফিল্মের মতো ভাবছে। কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা তার চেয়ে অনেক বেশি অন্ধকারময়। এমনকি যদি একটি সাধারণ পর্যায়ের যুদ্ধ হয় তাহলে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি এবং অপরিসীম ক্ষতি হবে উভয়পক্ষে। উপরন্তু পারমাণবিক যুদ্ধ হলে কী ঘটে তা কল্পনার অতীত। তাই শুভবুদ্ধির উদয় হোক। যুদ্ধের দিকে এই যাত্রা বন্ধ হোক। বিদেশি প্রচেষ্টার পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে এবং ডিজিএমও’দের মধ্যে যোগাযোগ অবশ্যই অব্যাহত থাকা উচিত। এর লক্ষ্য হওয়া উচিত উত্তেজনা হ্রাস করা এবং আরও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়া।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status