শেষের পাতা
উৎসবের নগরী বরিশাল
স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে
২৯ মে ২০২৩, সোমবার
প্রতীক পাওয়ার পর বরিশালে চলছে জমজমাট প্রচারণা। রাস্তাঘাট ছেয়ে গেছে পোস্টারে। ঘরে ঘরে যাচ্ছে প্রার্থীর কর্মীরা লিফলেট হাতে। দুপুরের পর থেকেই রাস্তায় নেমে পড়ে মাইকবাহী গাড়িগুলো। এক কথায় ১২ই জুনকে কেন্দ্র করে বরিশাল উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
২৬শে মে’র পর থেকে ৩ দিনের প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে আছে নৌকা। প্রতিটি ওয়ার্ডে রয়েছে নির্বাচনী কার্যালয়। সকাল থেকেই দলে দলে কর্মীরা লিফলেট হাতে যাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। প্রার্থী ছুটছেন ঘরে ঘরে। করছেন সভা, উঠান বৈঠক। দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব থাকলেও সেটা প্রচার প্রচারণায় লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যদিও এখন পর্যন্ত মহানগর বা জেলা আওয়ামী লীগর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ মাঠে দেখা না গেলেও তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা মাঠে নেমে পড়েছে।
প্রচার প্রচারণায় ২য় অবস্থানে রয়েছে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা। তারা মাঠে নামিয়েছে দুই সহস্রাধিক নারী কর্মী। রয়েছেন তার মুরিদরাও। দলের নেতাকর্মীরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকটা নিভৃতে। তবে উঠান বৈঠাক, পোস্টার বা লিফলেট এবং মাইকিং এ দলটি নৌকার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।
জাতীয় পার্টি এখন পর্যন্ত প্রচার প্রচারণায় বেশ পিছিয়ে। তাদের নেতা আছে, কিন্তু কর্মী সংকট প্রকাশ্যে এসেছে। পোস্টার বা মাইকিং চলছে। তবে তা নৌকা বা অন্য প্রার্থীদের চেয়ে অনেকটাই কম। প্রার্থী নিজে একের পর এক সভা বা উঠান বৈঠক করে যাচ্ছেন।
বিএনপি নেতা মরহুম আহসান হাবিব কামালের পুত্র কামরুল আহসান রূপনের প্রচার প্রচারণা অনেকটাই কম। এখন পর্যন্ত মাঠে তেমন সাড়া ফেলতে পারেননি। শনিবার এক বৈঠকে তিনি বিএনপি’র ভোট তার ঘড়ি মার্কায় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তার আশাটা পূরণ হওয়াটা কঠিন মনে করছেন অনেকেই। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তার কোনো নির্বাচনী অফিসও চোখে পড়েনি।
মেয়র প্রার্থী নৌকার পরপরই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নির্বাচনী আমেজকে উৎসবে পরিণত করেছে কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট, ঘরে ঘরে প্রচারণা কোনোটাতেই পিছিয়ে নেই তারা। অনেক এলাকায় পোস্টার টাঙ্গানোর জায়গাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দুপুরের পর থেকেই কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরদের মাইকিং এ উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করছে।
ওদিকে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। বিধি মেনে কোনো দেয়াল লিখনও চোখে পড়েনি। প্রার্থীরা পলিথিনে মুড়ে পোস্টার লাগিয়েছেন। রয়েছে হাতে বিলি করার লিফলেট। প্রচারে ব্যবহার হচ্ছে মাইকিং। এ সবই বিধিসম্মত। নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করলেই জরিমানাসহ শাস্তির খড়গ ঝুলছে। প্রশাসন তদারকির জন্য ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছেন। তারা মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সবাই নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলবেন। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে সচেষ্ট থাকবো। যেটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।
এদিকে বহিরাগতদের ব্যাপারে কঠোর হয়েছে পুলিশ প্রশাসন। বিএমপি পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, নগরীর প্রবেশমুখগুলোতে একাধিক চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ বা মাস্তানি করতে পারে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাঠে আমাদের বিশেষ শাখার পুলিশ সদস্যরাও কাজ করছেন। তাই সবাইকে বিধি মেনে চলার জন্য তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।