খেলা
বাফুফে’র ডাকে সাড়া দেননি ছোটন
স্পোর্টস রিপোর্টার
২৮ মে ২০২৩, রবিবার
হঠাৎ করেই নারী ফুটবল দলের সঙ্গে আর কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। মৌখিক ঘোষণা দেয়া সফল এ কোচ গতকাল অনুশীলনে যোগ দেননি। তাকে ছাড়াই গতকাল অনুশীলন করেন সাবিনা-কৃষ্ণারা। জানা যায়, গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ ছোটনকে কাজে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অনুরোধে সাড়া দেননি অসন্তোষ নিয়ে বিদায় নিতে চাওয়া ছোটন।
মেয়েদের বয়সভিত্তিক থেকে শুরু করে জাতীয় দলÑ সব আন্তর্জাতিক সাফল্যই এসেছে ছোটনের কোচিংয়ে। আজকের সাবিনা, সানজিদা, কৃষ্ণা, মারিয়াদের নিজের সন্তানের মতো লালন করে গড়ে তুলেছেন, তাদের দিয়েছেন মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর মন্ত্র। অথচ তার কাজের যোগ্য মূল্যায়ন করেনি বাফুফে। কিছুদিন আগেও খোদ বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ভিনদেশি টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলির কাজের ফিরিস্তি গাইতে গিয়ে সরাসরি অস্বীকার করেন ছোটনের অবদান। নিজেদের মধ্যে আলোচনায় প্রায়ই সালাউদ্দিন বলে থাকেন, মেয়েদের ফুটবলে ছোটনের তেমন কোনো অবদান নেই। সবকিছুই নাকি করেছেন পল স্মলি। পল চলে গেলে নাকি ৯ মাসেই ভেঙে পড়বে মেয়েদের ফুটবলের অবকাঠামো। এতদিন এসব মুখ বুঝেই সহ্য করেছেন ছোটন। নিজের কাজটুকুতেই দিয়েছেন সব মনোযোগ। এখন আর এসব সহ্য করতে চান না নারী দলের এই সফল কোচ। মাহফুজা আক্তার কিরণের সঙ্গে আলাপের পর ছোটন বলেন, ‘কিরণ আপা আমার অত্যন্ত প্রিয় ও শ্রদ্ধেয় একজন মানুষ। তার প্রতি আমার সম্মান ও ভালোবাসা আগের অবস্থানেই রয়েছে, তবে আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল।’ আলোচনার জন্য কিরণ ছোটনকে ফেডারেশনে আসার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু আজ ফেডারেশনে না যাওয়ার কথা জানিয়ে ছোটন বলেন তিনি আর অনুশীলন করাবেন না। কিরণ ছাড়াও বাফুফের অন্যান্য স্টাফরাও ছোটনকে কাজে ফেরার অনুরোধ করেছেন। সবার অনুরোধই প্রত্যাখ্যান করেছেন ছোটন। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন অনুরোধ করলেও তিনি তার অবস্থান পরিবর্তন করবেন না জানিয়ে বলেন, ‘সভাপতি অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব, কিন্তু আমার ব্যক্তি স্বাধীনতা রয়েছে। আমি আর কাজ করতে চাই না। সেই অবস্থানেই থাকব।’ মে মাসের শেষ সপ্তাহ চললেও, এখনও এপ্রিল মাসের সম্মানী পাননি ছোটন। ৩১শে মে পর্যন্ত তিনি ফেডারেশনের সঙ্গে থাকলেও অনুশীলনে যাবেন না। আজ বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে সেরা কোচের পুরস্কার গ্রহণ করবেন ছোটন। জানা যায়, আগামীকাল ফেডারেশনে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন তিনি। ছোটন পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর বাফুফে ছাড়তে পারেন তার দুই সহকারী এবং অন্যরাও। গোলরক্ষক কোচ মাসুদ আহমেদ উজ্জ্বল চাকরি ছাড়ছেন বলে জানা গেছে। পদে পদে ছোটনদের পল স্মলির কাছে দিতে হয় জবাবদিহি। সেটাও মানা যেত, যদি কাজের মূল্যায়ন হতো, মিলত যোগ্য পারিশ্রমিক। সেটাও তো হচ্ছে না। এমনকি বাফুফের সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে সুইপার পর্যন্ত যখন ঈদ বোনাস পান, তখন কোচদের ভাগ্যে জোটে না উৎসব-ভাতা। এভাবে আর কতদিন? হয়তো এসব বঞ্চনা সইতে না পেরেই সরে দাঁড়াচ্ছেন ছোটনরা?