শেষের পাতা
হাতে প্রচারপত্র এক প্রার্থীর, ভোট চাইলেন অন্যজনের
কাজী সোহাগ, গাজীপুর থেকে
২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার
টঙ্গীর শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে সকাল থেকে তৎপর জমিলা খাতুন। স্থানীয় একটি গার্মেন্টে চাকরি করেন তিনি। হাতে আজমত উল্লা খানের ছবিসহ নৌকা প্রতীকের প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। কেন্দ্রটি জুড়ে তার তৎপরতা বেশ লক্ষণীয়। তার কাছে জানতে চাওয়া হলো কেমন হচ্ছে ভোট? বললেন এখানে খুব ভালো ভোট হচ্ছে। পাল্টা প্রশ্ন করে জানতে চাইলেন আপনি কী ভোট দিয়েছেন। উত্তরের অপেক্ষা না করে নিচু স্বরে বললেন ভোটটা কিন্তু জাহাঙ্গীরের মাকে দিবেন। জানতে চাইলাম- আপনি তো আজমত উল্লা খানের প্রচারণা চালাচ্ছেন তাহলে জাহাঙ্গীরের মা’র জন্য ভোট চাচ্ছেন কেন? তিনি জানালেন, আজমত উল্লা খানের প্রচারণা করছি বাধ্য হয়ে। আসলে জাহাঙ্গীরের মাকে ভোট দিবো। এখানে অনেক ভোটারই আছেন তারা জাহাঙ্গীরের মাকে ভোট দেবেন।
তার সঙ্গে থাকা শাহিনুর ইসলামেরও একই বক্তব্য।
এখানে প্রায় ৮০ জনের আহ্বায়ক টিম রয়েছে। আমি আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছি। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটি সদস্য সকাল থেকে নৌকা প্রতীকের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার জন্য ভোট চাচ্ছি। তিনি জানান, এখানকার ভোটারদের উৎসাহিত করা হচ্ছে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দেয়ার জন্য। এখানে কোনো ধরনের অস্থির পরিবেশ নেই বরং সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় এই নেতা জানান, আমার কেন্দ্রে সাতটি ইভিএম মেশিন রয়েছে। এর মধ্যে একটি মেশিন সাড়ে দশটার দিকে নষ্ট হয়। পরে আমরা প্রিজাইডিং অফিসারকে বলে ওই মেশিন ঠিক করিয়েছি। শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে আসা শারমিন আক্তার মানবজমিনকে বলেন, বুধবার রাত থেকে শুনছিÑ এখানে নানা ধরনের গণ্ডগোল হতে পারে। তবে ভোটকেন্দ্রে এসে কোনোরকম গণ্ডগোল দেখলাম না। কেউ ভোট দেয়ার জন্য চাপও দেয় নাই। তিনি বলেন- অনেকটা ভয় নিয়েই ভোটকেন্দ্রে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে পরিবেশ দেখেছি ভিন্ন। প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। দলীয় নেতারা ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন।
পাগাড়ের জাবের অ্যান্ড জুবায়ের গার্মেন্ট ফ্যাক্টরির সামনের গলিতে অবস্থিত পাগাড় সূর্যোদয় ক্যাথলিক জুনিয়র হাইস্কুল ভোটকেন্দ্র। এই কেন্দ্রে দুই পাশের গলিতে দেখা গেল নৌকা প্রতীকের নেতাকর্মীদের অবস্থান। একই চিত্র দেখা গেল বিবি মরিয়ম স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সেন্ট অ্যান্তনিস হাই স্কুল ভোটকেন্দ্র। এই এলাকায় সবচেয়ে বেশি ছয় হাজার ভোটার রয়েছে বিবি মরিয়ম স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে। এখানে ভোট দিয়ে বের হয়ে এসে ভোটার হাবিব মানবজমিনকে বলেন, নিজের ভোট নিজে দিতে পেরেছি খুব সহজেই। ইভিএমে ভোট দিতে পেরে আমি আনন্দিত ও আপ্লুত।
ভোট মনিটরিংয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা: এদিকে সকাল থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন মনিটরিং করেন ঢাকা থেকে যাওয়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে মনিটরিংয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তবে তারা কোনো ভোটকেন্দ্রে সশরীরে যাননি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে গাজীপুরে অবস্থান করা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী মানবজমিনকে বলেন, ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকা প্রতীকের জন্য কাজ করছেন। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার টিকিট পাওয়া এডভোকেট আজমত উল্লা খানের পক্ষে নির্বাচনী কাজ করতে ২৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় একটি সমন্বয়ক টিম গঠন করে আওয়ামী লীগ।
পাঠকের মতামত
সারা দেশে একই চিত্র। এজন্যই তো তড়িঘড়ি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা হয়েছে।