খেলা
লেগ স্পিনে নতুন স্বপ্ন নিয়ে অভিষেক রিশাদের
স্পোর্টস রিপোর্টার
১ এপ্রিল ২০২৩, শনিবার
নতুন স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হলো লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের। গতকাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগে রিশাদের হাতে জাতীয় দলের ক্যাপ তুলে দেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে একাদশে জায়গা পান ২০ বছর বয়সী রিশাদ। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বাংলাদেশের ৮০তম ক্রিকেটার তিনি। আগে কেবল দুজন লেগস্পিনার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন- জুবায়ের হোসেন লিখন ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। কিন্তু দলে স্থায়ী হতে পারেননি কেউই।
২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক হয় জুবায়েরের। চার বছর পর চেষ্টা করা হয় আমিনুলকে দিয়ে। তারও চার বছর পর এলেন রিশাদ। ক্যারিয়ারে একটিই টি-টোয়েন্টি খেলেছেন জুবায়ের। ওই ম্যাচে দুই ওভারে ২০ রান খরচ করে ২ উইকেট নিলেও আর সুযোগ পাননি। এর আগে ৬ টেস্ট ও ৩ ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। টেস্টে তার বোলিং দেখে সেই সময় সাকিব বলেছিলেন, ৪০০ উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা আছে জুবায়েরের। কিন্তু সেই সম্ভাবনা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি। আমিনুলের শুরুটাও ছিল আশা জাগানিয়া। অভিষেক থেকে টানা তিন ম্যাচে নেন ২টি করে উইকেট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩৪ রানে ৩ উইকেট তার ক্যারিয়ার সেরা। সব মিলিয়ে ১০ ম্যাচে ১২ উইকেট নেওয়ার পর ছেদ পড়ে তার ক্যারিয়ারে। ২০২১ সালের নভেম্বরের পর আর সুযোগ পাননি তিনি। বাংলাদেশের কোচ হিসেবে নিজের প্রথম দফায় জুবায়েরকে খেলান হাথুরুসিংহে। সেবার লেগ স্পিনের দিকে বাড়তি জোরও দেন তিনি। লেগ স্পিনারের সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই প্রস্তুত করা হচ্ছে রিশাদকে। ১৬ বছর বয়স থেকেই তার ওপর নজর নির্বাচকদের। ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলার পর হুট করেই তাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচের বিসিবি একাদশে খেলানো হয়। তিনি জায়গা পান অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও। পরে তাকে নেওয়া হয় বাংলাদেশ ‘এ’ দলে। গত কয়েক বছরে নিয়মিতই ‘এ’ দল, বিসিবি একাদশে ছিলেন রিশাদ। এইচপি দল বা নানা সময়ে স্পিন ক্যাম্পে তিনি নিয়মিত মুখ। এখনকার স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের সঙ্গেও তিনি কাজ করেছেন বিভিন্ন সময়ে। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে সে অর্থে ম্যাচ পাননি রিশাদ। ২০১৮ সালে স্বীকৃত ক্রিকেটে অভিষেকের পর প্রায় ৫ বছরে তিন সংস্করণ মিলিয়ে স্রেফ ২৮টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তবে পারফরম্যান্সও কোনো সংস্করণেই বলার মতো নয়। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩ ম্যাচে শিকার ২০ উইকেট। গত বছরের মার্চে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে অভিষেকে উইকেটশূন্য থাকার পর আর কোনো ম্যাচে সুযোগ পাননি। যে সংস্করণে তিনি জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন, সেই টি-টোয়েন্টিতে ১৪ ম্যাচে তার শিকার ৬ উইকেট, ওভারপ্রতি দিয়েছেন ৯ রান। টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়ার পর রিশাদকে নিয়ে প্রধান কোচ হাথুরুসিংহে বলেন, ‘‘ওর (রিশাদ) জন্য এটি নতুন শুরু। আমাদের মনে হয়, ওর যথেষ্ট স্কিল আছে এবং ওর মধ্যে স্পেশাল কিছু আছে, দীর্ঘ মেয়াদে আমরা যা ভালো করে তুলতে পারি। এখানে যা-ই হোক না কেন, ও ভালো করুক বা না করুক, ভবিষ্যতের জন্য আমরা কিছু আক্রমণাত্মক স্পিনার খোঁজার চেষ্টা করছি।’’ আর গতকাল টসের সময় অধিনায়ক সাকিব বলেন, “ক্রিকেট যেভাবে এগিয়ে চলছে, লেগ স্পিনাররা দারুণ কার্যকর, যদি কোনো দলের তা থাকে। এজন্যই আমরা লেগ স্পিনারদের দেখতে চাই পরখ করে, তাদের উৎসাহিত করতে চাই। আশা করি, আমরা গোটা দুই লেগ স্পিনার পাবো, যারা ৫-১০ বছর আমাদেরকে সার্ভিস দিতে পারবে।”