বাংলারজমিন
আদমদীঘিতে বীরনিবাস নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবারপ্রধানমন্ত্রী চলতি বছরের ১০ই জানুয়ারি সারা দেশে ২য় পর্যায়ে বীরনিবাস নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনীর পর বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার স্থানীয় প্রশাসন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরনিবাস নির্মাণের জায়গা নির্ধারণ করার জন্য ৩২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে তাগাদা দেন। এরপর অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পুরাতন জরাজীর্ণ মাটির তৈরি বাড়ি ভেঙে বীরনিবাসের জায়গা নির্ধারণ করে দেন। বাড়ি ভাঙার পর তারা পরিবার নিয়ে কেউটিনের বেড়া দিয়ে আবার কেউ অন্যের বাড়িতে পরিবার নিয়ে সাময়িকভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেন। কিন্তু বীরনিবাস নির্মাণে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় কাজের ধীরগতির কারণে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে। তারা আসন্ন কাল বোশেখী ঝড় ও বর্ষায় দুর্ভোগের আশঙ্কায় জারুরিভাবে তাদের বীরনিবাস নির্মাণ সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিয়েও সুফল মিলছে না বলে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেছেন। জানা গেছে, টেন্ডারের মাধ্যমে এসব বীরনিবাস নির্মাণের জন্য মেসার্স সুমা এন্টারপ্রাইজ ১৬টি ও স্বপ্নীল ইঞ্জিনিয়ার ট্রেডার্স ১৬টি বাড়ি নির্মাণের জন্য কাজ পায়। তবে বীরনিবাস নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করার পর দীর্ঘ ৭০ দিন অতিবাহিত হলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে ১৩টি বীরনিবাসের ভিত্তি স্থাপন ও কিছু কিছু বীরনিবাসে ইট বালু দিয়ে গাঁথুনি ছাড়া তেমন কিছুই চোখে পড়েনি। এইসব নির্মাণ কাজ শুরুর আগেই পানির জন্য সাবমারসিবল পাম্প বসানোর বিধান থাকলেও তা কোনো বীরনিবাসেই বসানো হয়নি। ফলে পানির অভাবে ইট বালুর গাঁথুনির কিউরিং কাজ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তার ও সাদেক আলী বলেন, মাটির ঘর ভেঙে পরিবার নিয়ে টিনের বেড়ার ঘরে কষ্ট করে বসবাস করছি। তাদের বীরনিবাস নির্মাণে কিছুটা অগ্রগতি হলেও বেশ কিছুদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে রয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলী বলেন, তার বীরনিবাস নির্মাণে শুধু ভীত করে ফেলে রাখা হয়েছে। কাজের কোনো অগ্রগতি নেই। বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান বলেন, কাজ শুরুর আগেই পানি সরবরাহের জন্য সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন না করার কারণে ইট বালুর গাঁথুনি কাজে পর্যাপ্ত কিউরিং হচ্ছে না। এ ছাড়া ঠিকাদারের অবহেলায় কাজের ধীরগতির কারণে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগের আশঙ্কা করছি। এ কাজের ঠিকাদার রানা আহম্মেদ জানায়, বীরনিবাস নির্মাণের বিল না পাওয়ায় কাজের গতি কমেছে। উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী রশিদুল ইসলাম জানান, কিছুদিনের মধ্যে ঠিকাদার বিল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন জানান, দ্রুত বীরনিবাস নির্মাণ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগাদা দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার জানান, বীরনিবাস নির্মাণে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ঠিকাদারদের কাজের বিল প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালকে অবগত করা হয়েছে। আশা করি খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল প্রদান করা হবে।