বাংলারজমিন
‘আমাগো বাড়তি কোনো আয়োজন নেই’
হায়দার আলী, শিবচর (মাদারীপুর) থেকে
২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবার‘ইফতারের জন্যে যা কিছু দরকার, কোনো কিছুরই জোগান নাই। আধাকেজি ছোলা আনছে। আর মুড়ি। এ ছাড়া চিনির দাম বেশি, ফল-মূল কেনার সামর্থ্য নাই। খেজুরের অনেক দাম। ইফতার নিয়া কোনো আয়োজন নাই আমাগো!’ শিবচরের বন্দরখোলা ইউনিয়নের কাজিরসূরা এলাকার বৃদ্ধ কমলা বেগম (৭০)’র সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন। ‘আমরা গরিব মানুষ। ক্ষেতে-খামারে কাজ কইরা কোনোমতে সংসার চালাই। বর্তমানে সবকিছুর দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে খুব কষ্ট হয় চলতে। সামনে ঈদ। গরুর মাংসের কথা তো ভাবতেই পারি না। মন চাইলে ব্রয়লার মুরগি খাইতাম। এহন তো মুরগি কেনাও যায় না। ২৭০ টাকা কেজি।’ সরজমিন উপজেলার চরাঞ্চলে দেখা গেছে, রমজানে ইফতার নিয়ে খেটে খাওয়া মানুষের বাড়তি কোনো আয়োজন নেই। অনেকেই ভাত দিয়ে সেরে নেন ইফতার। ঈদ নিয়ে তাদের কপালে এখনই দুশ্চিন্তার ভাঁজ। সরজমিন শুক্রবার উপজেলা বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কোথাও কোথাও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ থেকে ৩৪০ টাকা, লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা করে। বাজারে আসা ক্রেতারা জানান, রমজানের আগে থেকেই মাংসের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ঈদে মাংসের দাম আরও বৃদ্ধির আশংকা করছি। দাম বেড়ে গেলে ঈদে মাংস কেনাই দায় হয়ে উঠবে! এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধিতে বিক্রেতারাও হতাশ। তাদের বিক্রি কমে গেছে। মো. জসিম নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘রমজানে খরচ বেড়ে যায়। তারপর সবকিছুর দামও বাড়ে। আমাদের আয়-রোজগার তো বাড়ে না। তিনি বলেন, রমজানে ইফতার নিয়ে বাড়তি আয়োজন করার চেষ্টা করে প্রায় সবাই।
কিন্তু যে হারে সবকিছুর দাম বেড়েছে, তাতে ইফতারে ছোলা-মুড়ির সঙ্গে বাড়তি কিছু হয়ে উঠছে না। খেজুরের দাম অনেক, অন্যান্য ফলের দামও আকাশছোঁয়া। মৌসুমে ফলের মধ্যে তরমুজ, বাঙ্গিও বিক্রি হচ্ছে চড়াদামে। সব মিলিয়ে নিম্নআয়ের মানুষের পক্ষে ‘কয়েক পদের’ ইফতারের আয়োজন করা এখন স্বপ্ন।