বাংলারজমিন
শিবগঞ্জে টিসিবি পণ্য বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবারবগুড়ার শিবগঞ্জে টিসিবি’র পণ্য বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কার্ড ফেরত নিয়ে অন্যদের দেয়া হয়েছে টিসিবি কার্ড। প্রতিবার বিতরণের পর এসব কার্ড ফেরত নিয়ে অন্যদের বিতরণ করা হয় বলে জানা গেছে।
গতকাল সকাল থেকে মোকামতলা ইউনিয়নে মাহে রমজান উপলক্ষে বিতরণ করা হয় টিসিবি পণ্য। সরজমিন মোকামতলা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে গেলে দেখা যায় টিসিবি পণ্য নিতে আসা বিভিন্ন এলাকার নারী পুরুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। যাদের হাতে থাকা টিসিবি কার্ডের নামের সঙ্গে তাদের নাম ঠিকানার কোনো মিল নাই। এ ছাড়া টিসিবি’র কার্ডে নাম থাকা ব্যক্তিরা জানান, তাদের কার্ড ফেরত নেয়া হয়েছে। সেসব কার্ড অন্য ব্যক্তিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এতে করে তারা কয়েক মাস ধরে টিসিবি পণ্য পাচ্ছেন না। এ সময় টিসিবি পণ্য নিতে আসা লাইনে দাঁড়ানো চাকলমা গ্রামের লিওন মিয়া জানান, আমার হাতে থাকা কার্ডটি আমার নয়। রফিকুল নামের এক ব্যক্তির নাম লেখা আছে কার্ডে। মুরাদপুর গ্রামের বেলাল হোসেন নামের টিসিবি পণ্য নিতে আসা ব্যক্তির হাতে লক্ষ্মীপুর গ্রামের আসমা বেগম নামের এক ব্যক্তির কার্ড দেখা যায়। এ সময় বেলাল হোসেন জানান, আসমা বেগমকে চিনি না। এই কার্ড আমার নয়। আমার মতো সবার কাছেই এমন অবস্থা। এ অবস্থায় টিসিবি পণ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিতরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কাশিপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের মর্জিনা বেগম নামের এক নারী জানান, আমি টিসিবি’র কার্ড পেয়েছিলাম। সেই কার্ডে আমার নাম ও ছবি ছিল। প্রথমবার টিসিবি পণ্য নিতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদে সেই কার্ড ফেরত নিয়েছে। আমি অসহায় দরিদ্র মানুষ। আমার স্বামী প্রতিবন্ধী। একই রকম বক্তব্য দিয়ে ঐ গ্রামের নাজিরা বেগম জানান, আমি স্বামী পরিত্যক্তা। আমার কার্ড ইউনিয়ন পরিষদে ফেরত নিয়েছে। এখন শুনছি আমার কার্ড দিয়ে অন্যরা টিসিবি পণ্য কিনছে। আমি টিসিবি পণ্য পাই না। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এই ইউনিয়নের টিসিবি কার্ড প্রাপ্ত সিংহভাগ মানুষই টিসিবি পণ্য থেকে বঞ্চিত। তাদের কার্ড বর্তমানে তাদের হাতে নেই। মোকামতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান হাবিব সবুজের মুঠো ফোনে কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলে তার ফোন ব্যস্ত পাওয়া যায়। মোকামতলা ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার গোলাম রব্বানী জানান, এসব বিষয়ে চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করেন। তারাই কার্ড বিতরণ করেছে। তারাই জমা নিয়েছে। এ সময় তার দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম শম্পা জানান, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম থাকে তাহলে আমরা সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।