বাংলারজমিন
গমের ব্লাস্ট রোগে পুড়ছে রাজবাড়ীতে কৃষকের স্বপ্ন
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবারগমের ব্লাস্ট রোগে পুড়ছে রাজবাড়ী কৃষকের স্বপ্ন। পরিপক্ব হওয়ার আগেই গমের শীষে সোনালী বর্ণ, নেই দানা। জেলা সদরের একশ’ একর জমির গমে দেখা দিয়েছে এই ব্লাস্ট রোগ। হঠাৎ এ রোগ দেখা দেয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি অফিসকে জানানোর পরও সরজমিন আসেননি কোনো কর্মকর্তা। শুধু ফোনে পরামর্শ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। এবার গম চাষে তাদের লোকসান গুনতে হবে। চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কৃষকদের মধ্যে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী বারি-৩৩ জাতের বীজ সরবরাহ করলেও তা ছিল চাহিদার তুলনায় কম। ফলে বারি-২৮ ও ২৯ সহ বিভিন্ন পুরনো জাতের বীজ বপন করেন অনেক কৃষক। এসব পুরনো জাতের বীজ বপন করায় বিক্ষিপ্তভাবে দেখা দিয়েছে ব্লাস্ট রোগ। জানা যায়, এ বছর রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। জেলায় চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে। সদর উপজেলার রাজাপুর, শায়েস্তপুর ও কৈজুরি মাঠে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশ এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে চাষ হয়েছে গমের। বাতাসে ঢেউ খেলছে গমের সোনালি শীষ। দেখে মনে হচ্ছে গম পেকে গেছে। ধরে দেখার পর বোঝা যায় গমের বেশির ভাগ শীষে দানা নেই। শীষের সঙ্গে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছও। রাজাপুরের চাষি ওমর আলী বলেন, ‘গমের ফলনে শুরু থেকে এ রোগটা দেখা দিয়েছে। এরপর কৃষি অফিসে জানালেও তারা মাঠে এলো না। শুধু ফোনে বলে এই-ওই ওষুধ দেন। রোগ শুরুর সময় যদি কৃষি অফিসের লোকজন আসতেন তাহলে হয়তো আমাদের এত বড় ক্ষতি হতো না। মো. ওহাব মোল্লা নামের এক কৃষক বলেন, ‘একটু লাভের আশায় ৪০ বিঘা জমিতে প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ করে গমের আবাদ করছি। কিন্তু এবার তো কোনো ফলন হয়নি। ভেবেছিলাম ফলন তোলার পর গম বিক্রি করে সব ধারদেনা শোধ করবো। এখন তো পুরোটাই লস। তাদের মতো সোনাই, আক্কাস, কাদের জলিলসহ অনেকেই এবার গম চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান বলেন, এবার গমের ফলন বেশ ভালোই দেখা যাচ্ছে। তবে সদর উপজেলার বসন্তপুরের কিছু কিছু স্থানে ব্লাস্ট রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। চাষিদের রোগ দমনের পরামর্শ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী চাষিরাও ছত্রাক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছে। আগামী মৌসুমে ব্লাস্ট প্রতিরোধী বারি-৩৩ জাতের গম চাষের পরামর্শ দিয়েছি।