বাংলারজমিন
প্রথম রোজাতেই ডোমারে বাজার বেসামাল
ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি
২৫ মার্চ ২০২৩, শনিবারগত কয়েক মাস থেকে নীলফামারীর ডোমারের বাজারে মুরগির দামের ঊর্ধ্বগতি থামছেই না। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা বা তারও বেশি দামে বিক্রি হয়ে রেকর্ড গড়েছে। যদিও চলতি বছরের শুরুতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি দাম ছিল সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা। তবে গ্রাহকরা বলছে, ব্রয়লারের দাম ২০০ টাকার বেশি হওয়া অযৌক্তিক। উপজেলার বাজারগুলোতে দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও চাহিদার তুলনায় মুরগির পরিমাণ কম থাকায় মুহূর্তের মধ্যেই দেশি মুরগি বিক্রি শেষ হয়ে যাচ্ছে। রোজার প্রথমদিন জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে সোনালী মুরগি ৩৫০ টাকা ব্রয়লার কাঁচা মাংস ৩৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। মুরগি ব্যবসায়ী মশিয়ার জানান, গতকাল সকালে মাত্র ১৬টি মুরগি কিনতে পেরেছি যা ৫ মিনিটেই বিক্রি হয়ে গেছে। ব্যবসায়ী মাহবুব জানান, রমজান মাসে দেশি মুরগির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে বাজার ও আড়তে ১ সপ্তাহ থেকে দেশি মুরগি পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রামে গ্রামে গিয়েও গৃহস্থের বাড়িতে মুরগি মিলছে না। এদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হলেও কোথাও ২৫০ টাকার নিচে ব্রয়লারের মুরগি বিক্রি হচ্ছে না। অন্যদিকে ডিমের বাজারেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। ব্রয়লারের ডিমের হালি ৪৫ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজার করতে আসা লিটন জানান, কাঁচা বাজার থেকে শুরু করে মুরগি পর্যন্ত সবকিছুর দাম বেড়েছে। দাম বাড়লেও বাজার মনিটরিং না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছেন। তবে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন আড়তে দাম বেশি হওয়ায় বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে। আনোয়ারা নামে এক মহিলা বলেন, প্রথম রমজানে সবাই মিলে মাংস-ভাত খাবো এই আসায় বাজারে এসেছি ব্রয়লারের মুরগি কিনতে। তবে মুরগির যে দাম বাধ্য হয়ে আধা কেজি কাঁচা ব্রয়লারের মাংস কিনলাম ১৭০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা বেশি উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেড়েছে ব্রয়লারের। তাছাড়া ফিডের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ তাই উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। এদিকে ফার্মের মালিক মনজু জানান, ফিডের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় আপাতত ফার্ম বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছি। মুরগির পাশাপাশি বেড়েছে সব সবজির দাম। বেগুন ৩০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা, পটল ও কায়তা ৬০ টাকা, সজনা ১২০ টাকা করলা ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে আদা ও রসুনেরও। আদা ২০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে ছাড়া সব সবজির দাম ৫০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, দুইদিন আগে বেগুন ২০ টাকা দরে কিনলেও রোজার প্রথমদিন ৫০ টাকা দরে বেগুন বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। ক্রেতারা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে বাজার করা দুষ্কর হয়ে পড়বে। নির্দিষ্ট আয়ের মানুষদের মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়াচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। জেলা ভোক্তা অধিকারেরর উপ-পরিচালক সামসুল আলম জানান, প্রতিদিনেই বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। রমজান উপলক্ষে জিনিসপত্রের দাম বাড়ালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।