বাংলারজমিন
হত্যার এক বছর পর পরিচয় মিললো সেই মা-মেয়ের
শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
২৪ মার্চ ২০২৩, শুক্রবারশ্রীনগরে লেপ মোড়ানো মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারের ১ বছর পর তাদের পরিচয় মিলেছে। গত বুধবার রাতে পলাতক স্বামী শাহিন পাহার ও অটোচালক মো. হাশেমকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে মুন্সীগঞ্জ জেলা পিবিআই। শাহিন পাহারের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া লাশ দুটি তার দ্বিতীয় স্ত্রী রিমতা বগম(২৫) ও ৮ মাসের কন্যা আমেনার। তিনি নিজেই তাদের হত্যা করেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৮ই মার্চ দুপুরে শ্রীনগর উপজেলার কোলাপাড়া ইউনিয়নের ব্রাক্ষম পাইকশা গ্রামের একটি পতিত জমি থেকে লেপ মোড়ানো এক যুবতী নারী ও কন্যা শিশুর লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর তাদের পরিচয় নির্ধারণ করার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ ব্যর্থ হয়। পরিচয়হীন ২ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শ্রীনগর থানায় মামলা হয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আগের দিন গভীর রাতে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে কেন্দ্র করে তদন্ত এগুলেও শ্রীনগর থানা পুলিশ এর কোনো কুলকিনারা করতে পারেনি। এ কারণে এর তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মুন্সীগঞ্জ। মুন্সীগঞ্জ পিবিআই’র ইন্সপেক্টর শাহিনুর আলমের উপর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পড়ে। কিছুদিনের মধ্যেই বের হয়ে আসে বালাসুর এলাকার রিমতা বেগম নামে এক নারী তার সন্তানসহ নিখোঁজ রয়েছেন। কিন্তু তার বাবার বাড়ির বিষয়ে কেউ কিছু বলতে না পারায় বিপাকে পড়ে পিবিআই। স্বামী শাহীন পাহারের সন্ধানে নেমে ১ বছর পর বুধবার রাতে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাহীনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় অটোচালক মো. হাশেমকে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লাশ উদ্ধারের ঘটনাস্থলে এসে শাহীন পাহার জানান, রিমতা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি পাবনা সদর উপজেলায়। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে সে কামারগাঁও এলাকায় ভাড়া বাড়িতে রেখে গোপনে সংসার করতো। তাদের সংসারে আমেনা নামের এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর শাহিনের প্রথম স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জেনে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এর সূত্র ধরে ৭ই মার্চ রাতে শাহিনের সঙ্গে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রিমতারও ঝগড়া বাধে। ঝগড়ার একপর্যায়ে শাহিন তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ৮ মাসের শিশুকন্য আমেনাকে একই কায়দায় হত্যা করে। লাশ গুম করার জন্য লেপ দিয়ে মুড়িয়ে বেঁধে রাখে। পরে তার পূর্ব পরিচিত অটোরিকশাচালক হাশেমকে ডেকে আনে। রাত পৌনে ১টার দিকে লাশ কোলাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইকসা এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। এরপর সে সিলেট, শরীয়তপুরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে লুকিয়ে থাকে। সর্বশেষ সে ঢাকায় অবস্থান নেয়। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা মুন্সীগঞ্জ পিবিআই’র ইনস্পেক্টর শাহিনুর আলম জানান, ২ লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। ঘাতক স্বামী ও অটোচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।