বাংলারজমিন
যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ
গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা
১৯ মার্চ ২০২৩, রবিবারগাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যৌতুক না পেয়ে সাগরী রানী (২১) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। নিহত সাগরী রানী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের খুকশিয়া কালুগাড়ী গ্রামের শ্রী দীনেশ চন্দ্রের মেয়ে। পিতা মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গতকাল দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানানো হয়। তিনি জানান, গাইবান্ধা সদর উপজেলার পাটহাটি (হরিবাসর) গ্রামের মৃত সুনীল চন্দ্রের ছেলে সুশীল (২৭) চন্দ্রের সঙ্গে প্রায় ৩ বছর পূর্বে সাগরী রানীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হওয়ার পর মারা যায়। প্রায় ২ বছর আগে থেকে সুশীল চন্দ্র তার স্ত্রী সাগরী রানীর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় পারিবারিক সামান্য বিষয় নিয়ে সাগরী রানীকে মারপিটসহ মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। দীনেশ চন্দ্র আরও বলেন, যৌতুক দাবির বিষয়টি তার মেয়ে বাড়িতে জানানোর পর তাকে নিতে গেলে সুশীল চন্দ্র ও তার পরিবারের লোকজন জানায় সাগরী রানীকে আর নির্যাতন করবে না। এরই একপর্যায়ে গত ৮ই মার্চ সকাল ৯টার দিকে সাগরী রানী বাড়ি চলে গেছে বলে ফোন করে জানায় সুশীল চন্দ্র। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে বাড়ির পাশে ননদের বাড়িতে সাগরী রানীকে দেখতে পাই। এ সময় সাগরী রানীকে বাড়িতে নিয়ে আসতে চাইলে সাগরী রানীর কাছে আর যৌতুক দাবি করবে না বলে সুশীল ও তার পরিবারের লোকজন জানায়। এরপর তারা সাগরী রানীকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাগরী রানী মারা গেছে বলে ফোন করে জানানো হয়। দীনেশ চন্দ্র বলেন, ঘটনস্থলে গিয়ে মেয়েকে মাটিতে শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পাই। সাগরী রানীর গলায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে নির্যাতন করে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে মেয়ের হত্যার বিচার চেয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন দিনেশ চন্দ্র। উল্লেখ্য, ঘটনার দিন সকালে খবর পেয়ে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশ সাগরী রানীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। উক্ত ঘটনায় নিহতের পিতা দীনেশ চন্দ্র বাদী হয়ে গাইবান্ধা সদর থানায় এজাহার দাখিল করেন। কিন্তু পুলিশ আজও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন দীনেশ চন্দ্র। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহতের মাতা উষা রানী, চাচী, সবি রানী, ভাই শ্রী মন্টু চন্দ্র ও উত্তম চন্দ্র। এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, উপরোক্ত ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।