ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিশ্বজমিন

পার্লামেন্টে ভোট এড়িয়ে পেনশনের বয়স বৃদ্ধি, ম্যাক্রনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ফরাসিরা

মানবজমিন ডেস্ক

(১ বছর আগে) ১৭ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার, ৪:২৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:২৮ পূর্বাহ্ন

mzamin

ফ্রান্সের পেনশন আইন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। এর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে পশ্চিম ইউরোপের দেশটি। পার্লামেন্টেতো সমালোচিত হয়েছেনই, বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। প্যারিসের রাস্তায় দেখা যাচ্ছে বিক্ষোভ, গ্যাস, লাঠি, আগুন। 

বিবিসি জানিয়েছে, পার্লামেন্টে কোনো ভোট ছাড়াই পেনশন আইন সংস্কার করতে চাইছেন ম্যাক্রো। তিনি চান ৬৪ বছর থেকে ফরাসি নাগরিকরা পেনশন পাবেন। এতদিন পেনশন পাওয়ার বয়স ছিল ৬২। এত বড় একটি পরিবর্তনে তিনি স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নেন। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বিষয়টি নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ম্যাক্রন তা না করে, নিজের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই আইন বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছেন। 

জানা গেছে, পার্লামেন্টে বামপন্থিরা ম্যাক্রনের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এ কারণেই পার্লামেন্টকে এড়িয়ে আইনটি প্রণয়নের চেষ্টা করছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন
ভোটাভুটি ছাড়াই পার্লামেন্টে বিল পাস করানো হবে বলে ঠিক করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তবে সরকারের এমন স্বেচ্ছাচারী আচরণের নিন্দা জানাচ্ছেন দেশটির রাজনীতিবিদ ও সাধারণ জনগণ। পার্লামেন্টেই অনেক আইনপ্রনেতা সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন। কেউ কেউ জোরে জোরে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে থাকেন। 

ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন বলেন, সংবিধানের ৪৯:৩ আর্টিকেল অনুসারেই এই বিল পাশ করা হচ্ছে। তবে পার্লামেন্ট সদস্যরা সরকারের এমন আচরণ কোনোভাবেই মানতে পারছেন না। দেশটির ডানপন্থী বিরোধী নেতা লা পেন জানিয়েছেন, ম্যাক্রনের বিরুদ্ধে একটি অনাস্থা প্রস্তাব ডাকা হচ্ছে। এছাড়া বামপন্থী দল লা ফ্রান্স ইনসুমিসের নেতা ম্যাথিলদে পানোত টুইটারে ম্যাক্রনের সমালোচনা করে বলেন, তিনি ফ্রান্সে একটি সরকারজনিত সংকট সৃষ্টি করেছেন অথচ তার কোনো পার্লামেন্টারি বৈধতা নেই। 

ম্যাক্রনের এমন ঘোষণার প্রেক্ষিতে রাস্তায় নেমে এসেছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা জাতীয় সঙ্গীত গাইতে গাইতে সরকারের বিরুদ্ধে বড় প্রতিবাদ সমাবেশ গড়ে তুলেন। প্যারিসসহ দেশটির বড় শহরগুলোতে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ট্রেন ইউনিয়নগুলোও আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। উত্তেজিত জনতা দেশটির পার্লামেন্টের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

এদিকে বিক্ষোভভকারীদের টার্গেট করে কঠিন অবস্থান নিয়েছে ফ্রান্সের পুলিশ। তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস, জলকামান ব্যবহার করে চলেছে। ভয়াবহভাবে পেটানো হয়েছে তাদেরকে। পুলিশি আক্রমণের মধ্যেও বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আন্দোলন থেকে এখন গ্রেপ্তার শুরু করেছে পুলিশ। শত শত আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় একটি গণমাধ্যম। তবুও আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষ যোগ দিচ্ছেন। রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয়া ছাড়াও কেউ কেউ পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা জবাবও দেয়ার চেষ্টা করছেন। পাথর ছোঁড়ার ঘটনাও ঘটেছে প্যারিসে। 

কিছুক্ষণের মধ্যেই ফ্রান্সের অন্য শহরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সরকার নিজের ইচ্ছামতো আইন চাপিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন সমীক্ষা যেখানে বলছে যে, দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ এই প্রস্তাবের বিরোধী, সেখানে সরকার নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিল পাশ করতে চাইছে। ইউনিয়নগুলি এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে একদিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সরকার সিদ্ধান্ত বদল না করলে আগামী ২৩ মার্চ দেশব্যাপী ধর্মঘট পালন করা হবে।
উল্লেখ্য, ফরাসি পার্লামেন্টে এখন ম্যাক্রনের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। বিল পাস করার জন্য তাদের রক্ষণশীলদের ভরসায় থাকতে হয়। কিন্তু রক্ষণশীলতা এই আইনের বিষয়ে সমর্থন দেবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। অপরদিকে বামপন্থিরা ম্যাক্রনের বিরোধী। ফলে পার্লামেন্টে ভোট হলে এই বিল পাশ করা সম্ভব হত না। ফলে এই উপায় বেছে নিয়েছেন ম্যাক্রন।

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status