বাংলারজমিন
একজন মানবিক পুলিশ সদস্য জীবন মাহমুদ
লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, রবিবার
জীবন মাহমুদ। বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য। ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামের দফাদার বাড়ির মো. শাহাবুদ্দিনের একমাত্র সন্তান তিনি। বর্তমানে বরিশাল জেলা পুলিশের এসএফ শাখায় কর্মরত রয়েছেন জীবন মাহমুদ। পুলিশে চাকরির পাশাপাশি একজন মানবিক মানুষ হিসেবেও ইতিমধ্যে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করেছেন তিনি।
জানা যায়, দেশজুড়ে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত হওয়া নিজ এলাকার সহস্রাধিক অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন পুলিশ সদস্য জীবন মাহমুদ। এমনকি সম্প্রতি আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে মানবিক সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ঘূর্ণিঝড়ে ঘর বিধ্বস্ত হওয়া বেশ কয়েকটি অসহায় পরিবারকে পুনর্বাসন করে দেন পুলিশ সদস্য জীবন। এ ছাড়া, গত ৫ই জানুয়ারি টাকার অভাবে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে না পারা দরিদ্র পরিবারের ৩ শিক্ষার্থীকে নিজস্ব অর্থায়নে ফরম পূরণের ব্যবস্থা করে দেন পুলিশের এই মানবিক সদস্য। নিজস্ব অর্থায়নে ও বিভিন্নজনের সহযোগিতায় এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন জীবন। বিকলঙ্গ ১১ জনকে কৃত্রিম হাত-পা লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।
দীর্ঘদিনের মানবিক এই কাজের মাধ্যমে পুলিশ সদস্য জীবন মাহমুদ অর্ধশত অসহায় পরিবারকে কর্মসংস্থান, প্রায় অর্ধশত প্রতিবন্ধীকে হুইল চেয়ার উপহার, ৫ জন হতদরিদ্র পরিবারকে নতুন টিনসেড ঘর করে দিয়েছেন। এ ছাড়া বেওয়ারিশ লাশ দাফনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছেন জীবন মাহমুদ।
অন্যদিকে, চাকরির সুবাদে বরিশালে অবস্থান করায় সেখানে কোনো অসহায় রোগী চিকিৎসা করাতে না পারলে খবর পেলেই সেসব রোগীদের কাছে ছুটে যান জীবন। নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে সেসব রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়ে দেন তিনি। কেবল চিকিৎসা-ই নয়, তাদের ওষুধ কেনাসহ বাড়িতে পৌঁছানোর টাকা প্রদান করেন জীবন মাহমুদ। রক্তদানেও এগিয়ে রয়েছেন তিনি। এ পর্যন্ত মুমূর্ষু ১২ জন রোগীকে নিজের রক্ত উপহার দিয়েছেন তিনি।
এ ছাড়াও, করোনাকালীন সময়ে অসহায় মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন পুলিশ সদস্য জীবন মাহমুদ। সে সময় কখনো তিনি সাধারণ মানুষকে দিয়েছেন স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী, আবার কখনো অসহায়-হতদরিদ্র মানুষকে দিয়েছেন খাদ্যসামগ্রী। এভাবেই প্রতিনিয়ত অসহায় মানুষের জন্য নিরলসভাবে নিঃস্বার্থবানভাবে কাজ করে যাচ্ছেন জীবন মাহমুদ। তার এই মহান মানবিক কর্ম কেবল নিজ উপজেলা বা জেলায়-ই সীমাবদ্ধ নয়, জীবন মাহমুদের মানবিক এই কাজের বিস্তৃতি যেখানে তার অবস্থান সেখানেই।
এসব কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে পুলিশ সদস্য জীবন মাহমুদ বলেন, মানুষের বিপদের সময় যে পাশে থাকে সে-ই প্রকৃত বন্ধু। আমি কোনো জনপ্রতিনিধি বা মহৎ ব্যক্তি হতে চাই না। আমি চাই মানুষের দুঃসময়ের বন্ধু হতে। তাই নিজের সাধ্য অনুযায়ী সব সময় চেষ্টা করি সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। আমি যেহেতু একজন পুলিশ সদস্য, সেক্ষেত্রে ডিপার্টমেন্ট থেকে যদি এ কাজের জন্য আরও বেশি উৎসাহ পাই তাহলে আশা করি আমার এই কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশেরও সুনাম আরও অনেক বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে সচেতন মহল মনে করছেন, পুলিশ সদস্য হয়েও সমাজের অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণে এভাবে নিজেকে নিয়োজিত রাখা মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত। যার ফলে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি অক্ষণ্ন্ন থাকবে।
পাঠকের মতামত
Ona k e BPM, PPM dewaa uchit. Allah ona'r sohai hon...ameen
Prirhibita hoito allah akhono rakse aisob munush gula ace bole.
ভালো উদ্যোগ, আল্লাহ প্রতিদান দান করুন। বাংলাদেশের সন্দেহপ্রবন একজন মানুষ হিসেবে যদিও আমার মনে অহেতুক প্রশ্ন জাগছে, এত মানবিকতা দেখানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এই পুলিশ সদস্য কিভাবে ব্যবস্থা করছেন? সেখানে কি কোন অমানবিক কাহিনি আছে?
This type of police person will never ever get promotion to a higher post because govt will never ever give them. Honest person have no value in our police department that is the reason today in our country common people hate police like eblish
জীবন মাহমুদের সামর্থ কম কিন্তু তার কাজের ভার খুব বেশি। আল্লাহ পাক তাঁর সামর্থকে বাড়িয়ে দিন।
আমার কাছে ভাইয়া মানবিক আইকন
অভিনন্দন জীবন মাহমুদ আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।
তার সঙ্গে যোগাযোগ করার কি সুবিধা আছে । হোটঅ্যাপ যুক্ত ফোন নম্বর, যাতে বিদেশ থেকে কথা বলতে পারি । তার মহত্ কাজের অংশীদার হতে ইচ্ছুক আমার ফোন নম্বর দিলাম । তিনি সরাসরি ফোন করতে পারেন । রিপোর্টার সাহেব কি আমার ফোন তাকে পৌছে দিতে পারবেন । 1 647 741 4299. Kazi Abdul Majid
তাঁকে সালাম ও অভিনন্দন! বেদনার কথা হলো তাঁর উর্ধতন বা অধস্থনরা যদি সামান্য মানবিক হতো তাহলে তার প্রভাব ঐ এলাকার সর্ব স্তরে পড়তো। তবু একজন জীবন মাহমুদ যা করছেন তা তাঁর মনুষ্য জন্মকে সার্থক করে তুলবে। তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করি।