দেশ বিদেশ
ইস্কাটনে বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা আব্বাস
বিএনপি কর্মীদের নাম, ঠিকানা সংগ্রহ করছে আওয়ামী লীগ
স্টাফ রিপোর্টার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, বুধবারবিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নাম, ঠিকানা সংগ্রহের চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটা প্রজ্ঞাপন দেখেছি, সকল উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপি করে এমন শীর্ষস্থানীয় পাঁচ থেকে আটজনের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পুলিশ সুপারদের। গতকাল বিকালে রাজধানীর ইস্কাটনে বিয়াম মিলনায়তনের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। লোডশেডিং, জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নিহত নূরে আলম, আব্দুর রহিম, শাওনের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ সময় জনসম্মুখে রাঙ্গামাটি জেলার একটি প্রজ্ঞাপন পড়ে প্রশ্ন তুলে মির্জা আব্বাস বলেন, এই নামগুলো দিয়ে আপনারা কি কাজ করবেন? এই নাম, ঠিকানা সংগ্রহ করে যদি একজনকেও গ্রেপ্তার করা হয় তাহলে সারা দেশের মানুষকে নিয়ে আমরা রাজপথে নেমে পড়বো।
একটি অবৈধ সরকারকে প্রতিহত করার জন্য জনবল সংগঠিত করার প্রয়োজন আছে। এটা আমার সংবিধানিক অধিকার। তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে গম আমদানি করা হবে। রাশিয়া থেকে জি টু জি, অর্থাৎ সরকার টু সরকার গম আসবে। পিআইবি থেকে প্রকাশিত হয়েছে, এরমধ্যে আবার একজন মিডিল ম্যান বসিয়ে দেয়া হয়েছে। টাকা চুরির আবার রাস্তা করছে।
কেউ আমাদের আটকে রাখতে পারবে না। মিটিং, মিছিল সমাবেশ করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকার যারা মানে না তারা গণতন্ত্র ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের এই গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতে হবে। মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, তেল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সারা দেশে আমাদের প্রতিবাদ সভা চলছিল। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও এই সরকারের তা সহ্য হয় নাই। কারণ আমরা ঘরে-ঘরে জানিয়ে দিতে চাই বিএনপি আপনাদের সঙ্গেই আছে। এই মিছিল করতে গিয়ে আমাদের চারজন ছেলে- নুরে আলম, রহিম, শাওনসহ কয়েকদিন আগে মুন্সীগঞ্জের শাওনকে আত্মাহুতি দিতে হয়েছে। তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এখন আমাদের সব দাবির সঙ্গে আরেকটি প্রতিবাদ যুক্ত হলো, এই খুনিদের আমরা বিচার চাই। এই সরকারের টিকে থাকা আর সম্ভব নয়। পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যে বন্দুক দিয়ে গুলি করছেন তা আমার, আপনার ট্যাক্সের টাকায় কেনা। বন্দুকটাও আমাদের টাকায় কেনা।
পুলিশের বেতনটাও আমাদের পকেট থেকে যায়। সেই বন্দুক দিয়ে গুলি করছেন এটা বিগত দিনে কোনো স্বৈরাচারী সরকার আগে টের পায়নি, আপনারাও পাচ্ছেন না। বন্দুকের নল কিন্তু যেকোনো সময় ঘুরে যেতে পারে। তাই সাবধান করছি, বন্দুকের নল সামলে রাখুন। তিনি আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশের কোনো কনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠান ঠিক নেই। কোর্ট-কাচারি, থানা-পুলিশের কোনো কিছুর ঠিক নেই, সবকিছু নষ্ট করে দিয়েছে। সবকিছুর শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য তারেক রহমান কর্মসূচি দিয়েছেন। সেই কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জনগণের অধিকার, ভোট দেয়ার অধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার আমরা ফিরিয়ে আনবো। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সভায় বক্তৃতা করেন, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নাল আবদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী এডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, প্রচার বিষয়ক সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী অ্যানি প্রমুখ।