বিশ্বজমিন
নিষ্ঠুরতা!
মানবজমিন ডেস্ক
(১ বছর আগে) ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, শনিবার, ১:০৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৭ পূর্বাহ্ন
আটক রেখে ইউক্রেনের সেনাদের ওপর কি ভয়াবহ অত্যাচার চালিয়েছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সেনারা, তার ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে। বুধবার রাতে রাশিয়া ইউক্রেনের ২১৫ জন যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দেয়। তাদের একজন মিখাইলো দিয়ানভ। প্রায় চার মাস তাকে বন্দি রাখার ফলে যে ভয়াবহতা স্পষ্ট হয়েছে শরীরে, তা দেখলে আর ব্যাখ্যা করার কোনো প্রয়োজন পড়ে না। রাশিয়ার বন্দিদশা থেকে মুক্ত ইউক্রেনের সেনার যে ছবি প্রকাশ পেয়েছে তা হৃদয়ে কম্পন লাগায়। মারিওপোলে অবস্থিত আজোভস্টাল স্টিল কারখানায় কাজ করতেন দিয়ানভ। তাকে আটক করেছিল রাশিয়া। একটি ছবিতে দেখা যায়, তিনি হাসছেন। শান্তির একটি চিহ্ন দেখাচ্ছেন। তবে তার বাহুতে ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল।
দিয়ানভ এবং তার সহযোগী সেনারা এমনই কঠিন বাস্তবতার মধ্যে বেঁচে ছিলেন। জীবদ্দশায় তারা এমন অমানবিকতা দেখেননি কোনোদিন।
বন্দিদশা থেকে মুক্তির পর দিয়ানভ চেরনোবিলের একটি হাসপাতালে যান। সেখানেই পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে তার মিলন হয়। তার ও অন্য সেনাদের ওপর যে অত্যাচার চালানো হয়েছে তা অনলাইনে দেখে সাধারণ মানুষ বিস্মিত। ইউক্রেনের একজন সাংবাদিক বলেন, বন্দিবিনিময়ের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছেন মিখাইলো দিয়ানভ। তিনি একজন সঙ্গীতজ্ঞ। একজন সেনা সদস্য। প্রথম ছবিতে তাকে আজোভস্টাল কারখানায় অবরুদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। দ্বিতীয় ছবিটি হলো রাশিয়ার হাতে আটক থাকা অবস্থার। এটা দেখার পর কোনো ভাষা নেই এর নিন্দা জানানোর। ভয়াবহ ব্যাপার।
আরেকজন বলেন, এই ছবি খুলে নিজের ভিতর আঘাত অনুভব করলাম। কিভাবে এই মানুষগুলো বেঁচে আছেন! এখনই তাদেরকে আমাদের সাহায্য করা উচিত। মারিওপোলের আজোজ সামরিক ইউনিট রাশিয়ানরা দখল করে নেয়ার পর এসব ব্যক্তিকে তারা বন্দি করে। তাদের কাছে প্রায় চার মাস তারা বন্দি ছিলেন। সেটা হলো বন্দি নির্যাতন ক্যাম্প। তবে ক্রেমলিনের কট্টরপন্থিদের সমর্থরা দাবি তুলেছিলেন আজোজ থেকে আটক ইউক্রেনিয়ানদেরকে হত্যা করতে। কারণ, তাদের চোখে এসব মানুষ নাৎসী এবং যুদ্ধাপরাধী।
মে মাসে মারিওপোলে রাশিয়া তীব্র আক্রমণ শুরু করে। সে সময় বীরের মতো শেষ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন ইউক্রেনের এসব সেনা। কিন্তু তাদেরকে আটক করার পর বুধবারই তাদের চেহারা প্রকাশ্যে আসে। দিয়ানভ, তার কমান্ডার ডেনিস প্রোকোপেঙ্কো, ডেপুটি কমান্ডার সভেতোস্লাভ পালামার এবং মেরিন কমান্ডার শারহি ভোলিনস্কির নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। মুক্তি পেয়েছে কাতেনিনা বারডি পোলিশচাক। তিনি একজন চিকিৎসক। আজোভস্টাল স্টিল কারখানায় কর্মরতদের গান শুনিয়ে তিনি উৎসাহিত করতেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির একজন শীর্ষ উপদেষ্টা আন্দ্রেঁ ইয়ারমাক বলেছেন, তাদের মুক্তি পাওয়া যোদ্ধাদের মধ্যে একাধিক নারী যোদ্ধা অন্তঃসত্ত্বা। ফার্স্টলেডি ওলেনা জেলেনস্কি তাদের মুক্তির বিষয়টিতে বলেছেন, এ দিনটির জন্য ইউক্রেন অপেক্ষা করছিল। উল্লেখ্য, বুধবার রাশিয়া ২১৫ জন ইউক্রেনিয় যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দেয়।