অনলাইন
সাফজয়ী আঁখির বাড়িতে গিয়ে বাবাকে শাসালো পুলিশ
গোলাম মোস্তফা রুবেল, সিরাজগঞ্জ থেকে
(২ বছর আগে) ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, বৃহস্পতিবার, ১২:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫২ অপরাহ্ন

সারাদেশ যখন সাফজয়ীদের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছে ঠিক তখন দুঃসংবাদ শুনতে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন দলের নারী ফুটবলার আঁখি খাতুনকে। সরকার থেকে পাওয়া জমি নিয়ে আদালতের সমন বুঝে নিতে তার বাবাকে শাসিয়ে গেছে শাহজাদপুর থানা পুলিশ। এমন অভিযোগ করেছেন আঁখি ও তার বাবা। আদালতের সেই কাগজে সই করতে রাজি না হওয়ায় আঁখির বাবাকে থানায় উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেন এসআই মামুন- এমনটাই অভিযোগ আঁখির।
এ বিষয়ে ডিফেন্ডার আঁখি বলেন, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় শাহজাদপুর থানা থেকে এসআই মামুন আমাদের বাড়িতে এসে আমার বাবাকে আদালতের একটি কাগজে সই করতে বলেন। আমার বাবা সেই কাগজে সই করেননি। তাই আমার বাবাকে এসআই মামুন থানায় নিয়ে যাবে বলে হুমকি দেন এবং গালাগাল করেন। পরে বাবা আমাকে ফোনে বিষয়টি জানান। এসআই নাকি বলেছেন- আমি বাড়ি যাওয়ার পর থানায় যেতে হবে আমাকে। আসলে গতকাল এমন এক আনন্দঘন মুহূর্তে এমন সংবাদে আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়।
আঁখির বাবা আক্তার হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় থানা থেকে এসআই মামুন সাহেব এসে আমাকে একটা কাগজ দিয়ে বলে- আঁখি তো বাড়িতে নেই। তার পরিবর্তে আপনি এই কাগজে সই দেন। আমি বলি কেন সই দেবো আমি তো বাদী বা আসামি কোনোটাই না। আমি পুলিশকে বলেছি, আপনারা ইউএনও মহোদয় বা ডিসি স্যারের সাথে কথা বলেন। তখন আমাকে কটূক্তি করেছে আরেক পুলিশ সদস্য আমাকে ধরে নিয়ে যাবে বলেছে। আসলে এই জায়গাতো আমাদের সরকার দিয়েছে। কোন মামলা বা অভিযোগ হলে সরকারের নামে হবে। আমাদের নামে কেন আদালত সমন পাঠাবে।
শাহজাদপুর থানার এসআই মামুন বলেন, আসলে গতকালের যে ঘটনাটা আপনারা বলছেন তা সত্য না। আঁখির নামে শাহজাদপুরের দাবারিয়াতে একটি জায়গা আছে সেই জায়গা নিয়ে মোকারম হোসেন নামে এক ব্যক্তি সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত শান্তির লক্ষে ১৪৪ ধারা জারি করে একটি নোটিশ প্রেরণ করে। আমি বিজ্ঞ আদালতের সেই কাজটি প্রেরণ আর বুঝিয়ে নিয়েছে সে জন্য একটি স্বাক্ষর দিতে বলি। কিন্তু আঁখির বাবা সেই স্বাক্ষর দিতে রাজি না হলে আমি থানায় চলে আসি। আমি তাকে কোন প্রকার হুমকি ধামকি দেইনি বা থানায়ও নিয়ে আসতে চাইনি।
শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বলেন, আসলে গতকালের ঘটনাটা একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে রাতেই আমি মিষ্টি নিয়ে ও আমার এসআইকে সাথে নিয়ে আঁখিদের বাড়িতে যাই এবং এই ভুল বোঝাবুঝির ঘটনাটা মিউচুয়াল করে দেই। আসলে আদালতের সমন এলে আমাদের সেই কাজ করতে হয়। বিষয়টি তেমন কিছু না।
শাহজাদপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম বলেন, তাদের ঘিরে যখন গোটা দেশ মেতেছে উৎসবে তখন এমন ঘটনা অপ্রত্যাশিতই বটে। তবে আমি রাতে শোনার সঙ্গে সঙ্গে ওসি সাহেবকে সাথে নিয়ে আঁখিদের বাড়িতে যাই। আঁখির বাবা ও মার সাথে কথা বলি। আর আঁখিকে যে জায়গা দেয়া হয়েছে সেটা সরকারের একটা নিষ্কন্ঠক জায়গা। এখানে কোন সমস্যা নেই। তবে এক ব্যক্তি যে অভিযোগ দিয়েছে তা আমরা তদন্ত করে দেখবো। সেই সাথে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেবো। আঁখির এই জায়গা নিয়ে কোন সমস্যা হবে না।