অনলাইন
এবার বৃটেন-আমেরিকায় আইনি জটে পড়তে পারে এয়ার ইন্ডিয়া
মানবজমিন ডিজিটাল
(১৯ ঘন্টা আগে) ২ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ১:২৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১২ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক কিস্টোন ল এবং মার্কিন-ভিত্তিক উইসনার ল ফার্মের সমন্বয়ে গঠিত একটি আইনি দল এয়ার ইন্ডিয়ার মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য উভয় দেশেই বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।
আইনজীবীরা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন এবং বিদ্যমান আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে তাদের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা করছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, পরিকল্পিত মামলাগুলো টাটা সন্স কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে সহায়তা বা ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য, আর্থিক সহায়তাসহ, অন্য যেকোনো প্রচেষ্টা থেকে আলাদা হবে।
কিস্টোন ল-এর অংশীদার জেমস হিলি-প্র্যাট, যিনি এই সংস্থার তদন্তের সাথে জড়িত, তিনি ইকোনোমিক টাইমসকে বলেছেন, তাদের আন্তর্জাতিক আইনি দল গত সপ্তাহ ধরে যুক্তরাজ্যের দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সাথে আলোচনা করছে। তিনি আরও বলেন, তারা সমস্ত প্রমাণ নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করছেন এবং লন্ডনের হাইকোর্টে এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে একই রকম মামলা দায়ের করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার কথা বিবেচনা করছে।
আইনি দলের মতে, মন্ট্রিল কনভেনশনের মতো আন্তর্জাতিক আইন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের মতো দেশে মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয়। আইনে আরও বলা হয়েছে, যাত্রীর মৃত্যু বা আঘাতের জন্য বিমান সংস্থাগুলোকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী করা যেতে পারে। তাদের কত ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে তার কোনও সীমা নেই
আইনজীবীরা এয়ার ইন্ডিয়ার বীমাকারী, টাটা এআইজি কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে দেয়া প্রাথমিক নিষ্পত্তির প্রস্তাব পর্যালোচনা করছেন। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, পরিবারগুলোকে অগ্রিম অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে বিমান সংস্থার দায়িত্ব কী তাও তারা খতিয়ে দেখছেন।
আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার দুর্ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত চলছে। তদন্ত হয়ে গেলে, আইনি দল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষে মামলা দায়ের করার পরিকল্পনা করছে। এই আইনি প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছেন কিস্টোন ল-এর জেমস হিলি-প্র্যাট এবং ওয়েন হান্না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক উইসনার ল ফার্মের বিমান চালনা বিশেষজ্ঞরা।
উইসনার ২০২০ সালের এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পরামর্শ দেয়ার ক্ষেত্রেও সম্পৃক্ত ছিলেন। জানা গেছে, এ ধরনের দুর্ঘটনার জন্য এয়ার ইন্ডিয়া এবং বোয়িং-এর প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের বীমা কভারেজ রয়েছে। শুধুমাত্র এয়ার ইন্ডিয়ারই ১.৫ বিলিয়ন ডলারের একটি পলিসি রয়েছে যা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে আদালতের নির্দেশিত যেকোনো অর্থ প্রদানের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
কিছু পরিবার বৃটিশ আইনের অধীনে লন্ডন হাইকোর্টে এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। অন্যরা প্রমাণের ভিত্তিতে ভার্জিনিয়ার একটি মার্কিন ফেডারেল আদালতে বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। উভয় ক্ষেত্রেই, তারা দায়বদ্ধতার কোনও সীমা ছাড়াই সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে। লিটল অ্যান্ড কোং-এর ব্যবস্থাপনা অংশীদার অজয় খাতালাওয়ালা দ্য ইকোনমিক টাইমসকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে মামলা দায়ের করা আরও লাভজনক হতে পারে কারণ এই দেশগুলো আরও বিস্তৃত ক্ষতিপূরণ এবং আরও বিস্তারিত আইনি প্রক্রিয়ার সুযোগ দেয়।
সূত্র : ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস