অনলাইন
‘বাংলাদেশ হেরিটেজ মাস’ উদযাপনের প্রস্তাব
আরিফ মাহফুজ, লন্ডন থেকে
(১০ ঘন্টা আগে) ১ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার, ১২:৪৯ অপরাহ্ন

যুক্তরাজ্যের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমানের সঙ্গে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন। স্থানীয় সময় সোমবার (৩০ জুন) মেয়রের কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের যৌথ সহযোগিতায় ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ মাস’ উদযাপনের প্রস্তাব দেন হাইকমিশনার।
এ সময় হাইকমিশনার আবিদা ইসলামকে স্বাগত জানান মেয়র লুৎফুর রহমান। ইউরোপে নির্বাচিত প্রথম মুসলিম ও অশ্বেতাঙ্গ মেয়র হিসেবে লুৎফুর রহমান £৬ বিলিয়ন বাজেট এবং ১২,৫০০ কর্মচারীর একটি বিশাল কর্মবল পরিচালনার মাধ্যমে কাউন্সিলের কৌশলগত দিকনির্দেশনা প্রদান করছেন।
তিনি হাইকমিশনারের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ মাস’ উদযাপনের প্রতি সমর্থন জানান। হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম সংস্কৃতি, রন্ধনশৈলী ও শিল্পের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক বিনিময়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশন ও টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের যৌথ সমন্বয়ে একটি কোর গ্রুপ গঠনের প্রস্তাব দেন, যারা এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করবে।
এছাড়াও, হাইকমিশনার জিসিএসই (GCSE-General Certificate of Secondary Education) পরীক্ষায় বাংলা ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। উল্লেখ্য, টাওয়ার হ্যামলেটস হচ্ছে যুক্তরাজ্যের এমন একটি বরো যেখানে বাংলাদেশিদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি (৩৫%) এবং মুসলিম জনসংখ্যাও সর্বাধিক (৪০%)।
হাইকমিশনার বলেন, ‘ বৃটিশ-বাংলাদেশি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরা জরুরি, যাতে তারা নিজেদের শিকড়ের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করতে পারে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বৃটিশ-বাংলাদেশি তরুণরা যুক্তরাজ্যের মূলধারার বিভিন্ন ক্ষেত্রে খুব ভালো করছে এবং তারা বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করতে পারে।
মেয়র লুৎফুর রহমান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি একজন বাংলাদেশি হিসেবে গর্বিত। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাওয়ার হ্যামলেটস একটি বহুসাংস্কৃতিক ও বহুধর্মীয় জনগোষ্ঠীর আবাসভূমি।’
টাওয়ার হ্যামলেটস যুক্তরাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র, যার বার্ষিক অর্থনৈতিক উৎপাদন £৩০ বিলিয়ন—যা বার্মিংহাম বা ম্যানচেস্টারের তুলনায় বেশি এবং মাল্টা, মোনাকোসহ অনেক দেশের জিডিপির চেয়েও বেশি। এটি লন্ডনের মাত্র ১% জমিজুড়ে অবস্থিত হলেও, পুরো লন্ডনের মোট অর্থনৈতিক আউটপুটের ৭% এবং যুক্তরাজ্যের ২% উৎপাদন করে। এই বরোতে রয়েছে কানারি ওয়ার্ফ, যা যুক্তরাজ্যের প্রধান ব্যবসা ও আর্থিক জেলা।
এছাড়া, এখানে অবস্থিত কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি, একটি বিশ্বখ্যাত গবেষণা কেন্দ্র এবং ইউরোপের বৃহত্তম হাসপাতাল রয়েল লন্ডন হাসপাতাল।
লুৎফুর রহমান ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এবং ২০২২ সালের মে মাস থেকে পুনরায় টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত টাওয়ার হ্যামলেটস লেবার পার্টির নেতা ছিলেন এবং বর্তমানে লন্ডনের ছয়জন নির্বাহী মেয়রের একজন।