সিলেটে জুলাই যোদ্ধাকে বেধড়ক পিটিয়েছে পুলিশ

সিলেটে জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধা ইসলাম উদ্দিনকে বেধড়ক পিটিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে ঘটনার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নগরের শেখঘাট জিতু মিয়ার পয়েন্টে শনিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে আহত জুলাই যোদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছেন সিলেটের অন্যান্য জুলাই যোদ্ধারা। নগরের কুয়ারপাড়ের বাসিন্দা ইসলাম উদ্দিন পেশায় একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক ছিলেন। তিনি বিগত জুলাই আন্দোলনে শরিক হয়ে মাথায় স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার সহকর্মী জুলাই যোদ্ধারা জানিয়েছেন- ইসলাম উদ্দিন মাথায় স্প্লিন্টার বিদ্ধ হওয়ার কারণে আর গাড়ি চালাতে পারেন না। এখন তিনি শেখঘাটের জিতু মিয়ার পয়েন্টে চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ভোরে তিনি যখন দোকান খুলে বসেন তখন তার কাছে যান কোতোয়ালি থানার এএসআই জসিম উদ্দিন। তিনি তাকে দোকান খুলতে বারণ করেন। এ সময় ইসলাম উদ্দিন নিজেকে জুলাই যোদ্ধা পরিচয় দিয়ে বলেন, আগে গাড়ি চালাতেন। মাথায় স্প্লিন্টার বিদ্ধ হওয়ার কারণে দোকান দিয়েই সংসার চালান। এ কথা শোনার পর জসিম উদ্দিন তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় তাকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশের নির্যাতনে একপর্যায়ে দোকান ফেলে কুয়ারপাড়ের বাসাতে চলে যান ইসলাম উদ্দিন। 

মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে এসে ওই পুলিশ সদস্যদের ভিডিও তুলতে গেলে তাকে আরেক দফা মারধর করা হয় এবং মোবাইল ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে উপস্থিত লোকজনের সহযোগিতায় সে উদ্ধার হয়ে বাড়ি যায়। ওখানে গিয়ে তার উপর নির্যাতনের ভিডিও জুলাই যোদ্ধাদের ভার্চ্যুয়াল গ্রুপে ছেড়ে দিলে তোলপাড় শুরু হয়। বিষয়টি জানার পর নগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য সচিব আলাল আহমদ ছুটে এসে তাকে আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে ইসলামউদ্দিন ওই ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। আলাল আহমদ মানবজমিনকে জানিয়েছেন- জুলাই যোদ্ধা শোনার পর ক্ষেপে গিয়ে পুলিশ তার ওপর হামলা করে। ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি আমাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান নগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। তিনি মানবজমিনকে জানিয়েছেন- পোশাকধারী পুলিশ এখনো আওয়ামী লীগের হয়ে হিংস্রতা ও বর্বরতা চালাচ্ছে। তাদের কাছে কেউ নিরাপদ নয়। চা দোকানি ইসলাম উদ্দিনের এ ঘটনা এর প্রমাণ। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘটনার পর এএসআই জসিমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজন এডিসি শাহাদাতকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।