প্রথম পাতা
চালের দাম চড়া
স্টাফ রিপোর্টার
২১ জুন ২০২৫, শনিবার
রাজধানীর বাজারে আবারো বাড়তে শুরু করেছে চালের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ২ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। হঠাৎ চালের দাম বৃদ্ধিতে চাপে পড়েছে ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন মোকামের মালিকরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীর বাজারে। প্রতি বস্তায় ৫০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দাম ধরা হচ্ছে বলেও জানান তারা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরজমিন রাজধানীর রায়েরবাগ, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী এবং কাওরান বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদের পর থেকে চালের দাম বাড়ছে। বাজারে মোটা চাল (বিআর-২৮, পারিজা) বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, জিরা নাজিরশাইল ৭৪ থেকে ৭৮ টাকা, মিনিকেট ৭৫ থেকে ৮০ টাকা এবং কাটারিভোগ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে।
শনির আখড়ার দেশ বাংলা ভ্যারাইটিজ স্টোরের সাকিল হোসেন মানবজমিনকে বলেন, গত এক সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজি প্রতি ৬ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর মোটা ও মাঝারি চালের কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। মোকামগুলোতে চালের দাম বাড়ার কারণে চালকল মালিকরাও দাম বাড়িয়েছে। এতে ঈদের পর চালের দাম বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় চালের দাম ২৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আরেক চাল বিক্রেতা তারেক হোসেন বলেন, সব মোকামেই চালের দাম বেড়েছে। মিল মালিকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন ধানের দাম বাড়ার কারণে চালের দাম বেড়েছে।
স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে যাত্রাবাড়ী এলাকায় বসবাস করেন বেসরকারি চাকরিজীবী রবিন হোসেন। তিনি বলেন, সবজি, মুরগি ডিমের দাম কমতির দিকে থাকলেও চালের দাম চড়া। তাই বাজার করতে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা মধ্যবিত্ত মানুষ, সরকারের কাছে আমার শুধু একটাই চাওয়া, বাজারটা যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
এদিকে, ঈদের পর থেকে কিছুটা স্বস্তিদায়ক মুরগি, ডিম ও সবজির বাজার। কম দামে কেনা যাচ্ছে পিয়াজ, আলুসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যও। বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৬০ টাকায় নেমে এসেছে, যা ঈদের আগের তুলনায় ২০ টাকা কম। ব্রয়লারের পাশাপাশি সোনালি মুরগীর দামও কমেছে। বাজারে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে। আর ডিমের ডজন ১২০-১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সবজি বাজারেও রয়েছে স্বস্তির ছোঁয়া। ঢেঁড়স, ঝিঙে, পটোলসহ মৌসুমি সবজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এ ছাড়া ডিম এখন প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। তবে বিপরীত চিত্র গরুর মাংসের দামে। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা দরে।
মুরগি বিক্রেতা জাহিদ হাসান বলেন, ক্রেতা সমাগম এখনো তুলনামূলক কম। কোরবানির ঈদের পর অধিকাংশ ঘরেই মাংস থাকায় ডিম ও মুরগির চাহিদা কমে গেছে। ফলে দামও কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। ব্রয়লারের পাশাপাশি সোনালি মুরগির দামও কমেছে। বর্তমানে ব্রয়লার ১৫০ এবং সোনালি ২৬০ টাকা দরে বিক্রি করছি।
ব্যাংক কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, ঈদের পর বাজারে সবজির দাম কমতির দিকে। তবে চাল ও গরুর মাংসের দাম বেশি। তাই মুরগি কিনতে এসেছি। সব মিলিয়ে বলতে গেলে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দ্রব্যমূল্য নিম্নমুখী, তবে সরকারকে চালের সিন্ডিকেটের দিকে নজরদারি বাড়াতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকলে মধ্যবিত্তরা চিন্তামুক্তভাবে বাজার করতে পারে।