৮ দিনে ৬৬টি, শুক্রবার ৮টি ফ্লাইট বাতিল

আহমেদাবাদের দুর্ঘটনার পর টাটা গোষ্ঠীর ফ্লাইট পরিষেবা সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার হাতে থাকা সমস্ত ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ এবং ৭৮৭-৯ বিমানের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে দেশের বেসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। এই নিরাপত্তাজনিত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা ছাড়াও খারাপ আবহাওয়া এবং আকাশসীমা বন্ধ থাকার কারণে একের পর এক ফ্লাইট বাতিল করা হচ্ছে।
শুক্রবার এয়ার ইন্ডিয়ার ৮টি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
বিমান সংস্থার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণের কারণে দুবাই থেকে চেন্নাইগামী এআই ৯০৬, দিল্লি থেকে মেলবোর্নগামী এআই৩০৮, মেলবোর্ন থেকে দিল্লিগামী এআই৩০৯, দুবাই থেকে হায়দরাবাদগামী এআই২২০৪ ফ্লাইট বাতিল থাকছে। শুধু তা-ই নয়, বাতিল করা হয়েছে পুণে থেকে দিল্লিগামী এআই৮৭৪, আহমেদাবাদ থেকে দিল্লিগামী এআই৪৫৬, হয়দরাবাদ থেকে মুম্বইগামী এআই২৮৭২ এবং চেন্নাই থেকে মুম্বইগামী এআই৫৭১ ফ্লাইটগুলি। রক্ষণাবেক্ষণ ছাড়াও খারাপ আবহাওয়া এবং আকাশসীমা বন্ধ থাকার কারণেও ফ্লাইট বাতিল করেছে এয়ার ইন্ডিয়া।
বেসামরিক বিমান পরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ-র তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনার পর থেকে ৬৬টি ড্রিমলাইনার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।  ১২ জুন ৫০টি ড্রিমলাইনার-পরিচালিত ফ্লাইটের মধ্যে ছয়টি গ্রাউন্ডেড করা হয়েছিল। নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিশ্চিত করেছে  ১৮ জুন পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়ার ৩৩টি ড্রিমলাইনার-এর মধ্যে ২৪টি পরীক্ষা করা হয়েছে, আগামী দিনে আরও বিমান নিরাপত্তা পর্যালোচনার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যার কারণে বর্তমানে দুটি জেট দিল্লিতে এয়ারক্রাফ্ট অন গ্রাউন্ড হিসাবে তালিকাভুক্ত রয়েছে।

ফ্লাইট বাতিলের জন্য যাত্রীদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। বিমানসংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, বাতিলের কারণে যাত্রীদের টিকিটের সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেয়া হবে। দুর্ঘটনার পর থেকেই এয়ার ইন্ডিয়ার পরিষেবা নিয়ে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেন অনেকে। সমাজমাধ্যমে যাত্রীরা এ-ও জানিয়েছেন, তারা এতটাই ভীত যে, টিকিট বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছেন। 

এয়ার ইন্ডিয়া আরও জানিয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানগুলিতে নানা রকম পরীক্ষা করা হচ্ছে। ত্রুটি ধরা পড়লেই তা মেরামতও করছেন কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছিল, প্রতি সপ্তাহে তাদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটের বিমান পরিষেবার সংখ্যা কমানো হবে। ২১ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত তিনটি রুটে বিমান চলাচল স্থগিত করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইরান-ইসরাইল সংঘাতও প্রভাব ফেলেছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান পরিষেবায়। এই সংঘাতের কারণে পশ্চিম এশিয়ার বেশ কিছু আকাশসীমা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে কিছু বিমান ঘুরপথে গন্তব্যে পৌঁছোচ্ছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, সময়ে বিমান গন্তব্যে পৌঁছোতে না পারায় আবার সেই বিমান সেখান থেকে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বাধ্য হয়ে বাতিল করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ফ্লাইটগুলিকে।