অনলাইন
ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর দূরপাল্লার কিছু ফ্লাইট স্থগিত করেছে এয়ার ইন্ডিয়া
মানবজমিন ডিজিটাল
(৪ ঘন্টা আগে) ২০ জুন ২০২৫, শুক্রবার, ১২:০৫ অপরাহ্ন

এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা শনিবার থেকে তাদের দূরপাল্লার কিছু ফ্লাইট স্থগিত করছে। গত বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদ থেকে গ্যাটউইকগামী একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমান ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গত এক দশকের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ এই বিমান দুর্ঘটনায় ২৪২ জন আরোহীর মধ্যে একজন ছাড়া সকলেই নিহত হন। বিমানটি বিধ্বস্ত হবার পর ঘটনাস্থলে থাকা প্রায় ৩০ জন ব্যক্তিও মারা যান। বুধবার নিশ্চিত করা হয়েছে যে, দুর্ঘটনার পর একমাত্র জীবিত ব্যক্তি, একজন বৃটিশ নাগরিক হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গেছেন। জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত দূরপাল্লার কিছু ফ্লাইট স্থগিত করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। যার মধ্যে বোয়িং ৭৮৭ এবং ৭৭৭ উভয় ধরণের বিমান এবং গ্যাটউইকের রুটও অন্তর্ভুক্ত। এয়ার ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে বলেছে যে বিমান ওড়ার আগে বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং মধ্যপ্রাচ্যে আকাশসীমা বন্ধের ফলে ফ্লাইটের অতিরিক্ত সময়কালের সাথে সামঞ্জস্য করার জন্য তারা আন্তর্জাতিক পরিষেবাগুলো কমিয়ে দিচ্ছে। দিল্লি-নাইরোবি, অমৃতসর-গ্যাটউইক এবং গোয়া-গ্যাটউইকের মধ্যে রুট সম্পূর্ণরূপে স্থগিত করা হচ্ছে।
দিল্লি, বেঙ্গালুরু এবং অমৃতসর থেকে উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইউরোপের কিছু নির্দিষ্ট গন্তব্যে (হিথ্রো এবং বার্মিংহাম সহ) অন্যান্য ফ্লাইটের ফ্রিকোয়েন্সিও হ্রাস করা হবে। আহমেদাবাদ এবং গ্যাটউইকের রুটে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এয়ার ইন্ডিয়া এই পরিবর্তনের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে। বিকল্প ফ্লাইট বা টিকিটের টাকা ফেরতের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের সাথে যোগাযোগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিমান সংস্থার চেয়ারম্যান নটরাজন চন্দ্রশেখরন জোর দিয়ে বলেছেন যে বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটির অতীতে কোনো দুর্ঘটনার ইতিহাস ছিল না। এদিকে, ভারতের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়াকে নিরাপত্তা নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য সতর্কতামূলক নোটিশ জারি করেছে, কারণ তাদের তিনটি এয়ারবাস ওভারটাইম চেকিং এবং সমস্যা সমাধানে বিলম্বের কারণে উড়ে গেছে। যদিও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে সতর্কতামূলক নোটিশ এবং তদন্ত প্রক্রিয়াটি গত সপ্তাহের দুর্ঘটনার সাথে কোনওভাবেই সম্পর্কিত ছিল না এবং সেই ঘটনার কয়েকদিন আগে পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে আহমেদাবাদে বিধস্ত বিমানটির ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার, যাকে ব্ল্যাক বক্সও বলা হয়, কোথায় বিশ্লেষণ করা হবে সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে যে তথ্য সংগ্রহের জন্য এগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর কথা ছিল। সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে যে ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB) সমস্ত প্রযুক্তিগত, নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা বিবেচনার ‘যথাযথ মূল্যায়ন’ করার পরে রেকর্ডারগুলো কোথায় পরীক্ষা করা হবে তা সিদ্ধান্ত নেবে। ব্ল্যাক বক্সের দুটি উপাদান থাকে- ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার। এটি দুর্ঘটনার পর তদন্তকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। বিমানের উচ্চতা, আকাশে ওড়ার গতি, নিয়ন্ত্রণের অবস্থা এবং পাইলটের কথোপকথন রেকর্ড থাকে ,যা দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ নির্ধারণে সহায়তা করে।
সূত্র : স্কাই নিউজ