অনলাইন
জনগণকে মোবাইল থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মুছে ফেলতে বলেছে ইরান
মানবজমিন ডিজিটাল
(৯ ঘন্টা আগে) ১৮ জুন ২০২৫, বুধবার, ৩:০২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৫ পূর্বাহ্ন

জনগণকে তাদের স্মার্টফোন থেকে মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ মুছে ফেলার আহ্বান জানিয়েছে ইরান। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের মাধ্যমে এক ঘোষণায় এ আহ্বান জানানো হয়।
কর্তৃপক্ষের দাবি, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে তা ইসরায়েলের কাছে পাঠানো হচ্ছে—যদিও এ অভিযোগের পক্ষে কোনো নির্দিষ্ট প্রমাণ প্রকাশ করা হয়নি। তবে এক বিবৃতিতে, হোয়াটসঅ্যাপ বলেছে- এই মিথ্যা প্রতিবেদনগুলো আমাদের পরিষেবাগুলো ব্লক করার একটি অজুহাত, কারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি এই অ্যাপ ব্যবহার করে। হোয়াটসঅ্যাপ এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহার করে, যার অর্থ মাঝখানে থাকা কোনও পরিষেবা প্রদানকারী কোনও বার্তা পড়তে পারবে না।
হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ আরো জানিয়েছে, আমরা আপনার সঠিক অবস্থান ট্র্যাক করি না, আমরা কাকে বার্তা পাঠাচ্ছেন তার লগ রাখি না এবং লোকেরা একে অপরকে যে ব্যক্তিগত বার্তা পাঠাচ্ছে তাও ট্র্যাক করি না। আমরা কোনও সরকারকে তথ্যও সরবরাহ করি না।
এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের অর্থ হল বার্তাগুলো এমনভাবে প্রেরিত হয় যাতে কেবল প্রেরক এবং প্রাপকই সেগুলো দেখতে পান। যদি অন্য কেউ বার্তাটি খোলার চেষ্টা করে, তবে তারা কেবল একটি বিকৃত তথ্য দেখতে পাবে। যদিও কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ গ্রেগরি ফ্যালকো বলেন, ‘এটি প্রমাণিত হয়েছে যে হোয়াটসঅ্যাপের মেটাডেটা বোঝা সম্ভব যা এনক্রিপ্ট করা হয় না। তাই আপনি বুঝতে পারবেন যে লোকেরা কীভাবে অ্যাপটি ব্যবহার করছে এবং এটি একটি ধারাবাহিক সমস্যা। যে কারণে অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপের সাথে যুক্ত হতে আগ্রহী নয়।’
আরেকটি সমস্যা হল ডেটা সার্বভৌমত্ব। ফ্যালকো বলেন, ‘কোনও নির্দিষ্ট দেশের হোয়াটসঅ্যাপ ডেটা হোস্ট করা ডেটা সেন্টারগুলো অনেকসময়ই সংশ্লিষ্ট দেশে অবস্থিত হয় না। উদাহরণস্বরূপ, ইরান থেকে হোয়াটসঅ্যাপের ডেটা ইরানে হোস্ট করা সম্ভব নয়।
ফ্যালকোর কথায় ‘দেশগুলোকে’ তাদের ডেটা দেশেই সংরক্ষণ করতে হবে এবং তাদের নিজস্ব অ্যালগরিদম ব্যবহার করে দেশেই ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করতে হবে। কারণ বিশ্বব্যাপী ডেটা অবকাঠামোর ওপর আস্থা রাখা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মূল কোম্পানি মেটা প্ল্যাটফর্মের মালিকানাধীন। ইরান বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অ্যাক্সেস বন্ধ করে দিয়েছে, কিন্তু দেশটির অনেক মানুষ প্রক্সি এবং ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করে সেগুলো অ্যাক্সেস করে।
২০২২ সালে দেশটির নীতি পুলিশের হাতে আটক মাহিসা আমিনি নামে এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। সেই সময় সরকার হোয়াটসঅ্যাপ এবং গুগল প্লে নিষিদ্ধ করে। গত বছরের শেষের দিকে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ ইরানের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ ছিল। সূত্র: আরব নিউজ