অনলাইন
বাংলাদেশের বিপ্লবের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে ৫ই আগস্ট
মানবজমিন ডেস্ক
(৫ ঘন্টা আগে) ১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের বিপ্লবের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে ৫ই আগস্ট। সেদিন ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন’ রাজনীতিতে শুধু পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়নি, বরং জাতির বিপ্লবী ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে অনুষ্ঠিত ইউএস-বাংলাদেশ অ্যাডভোকেসি কাউন্সিল (ইউবিএসি) আয়োজিত ‘দ্য ফিউচার ডেমোক্রেসি: দ্য রুল অব ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী। সভায় আরো ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা ও মার্শা বার্নিকাটও। দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণকে সহজতর করতে ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমর্থন করা উচিত বলে মনে করেন তারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শেখ হাসিনা মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে ছিলেন। ৫ আগস্ট সেই অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। তরুণরা এই পরিবর্তনের নায়ক, যারা জীবন দিয়ে গণতন্ত্রের পথ রচনা করেছে।
তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে ১১টি স্বাধীন কমিশন গঠন করেছে যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হবে।
তিনি আরও জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের মধ্যে সদ্য অনুষ্ঠিত বৈঠক একটি টার্নিং পয়েন্ট, এবং আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ তৈরি করা হচ্ছে।
ড্যান মজিনা বলেন, ৫ আগস্টে আমরা এমন এক ঘটনা দেখেছি যা সত্যিকারের বিপ্লব। হাসিনার শাসন দেখেছি বহু বছর, কিন্তু এত দ্রুত পতন হবে ভাবিনি। হেলিকপ্টারে তার পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য বাংলাদেশের ইতিহাসে বিস্ময়কর ঘটনা হয়ে থাকবে। এই বিপ্লবের মাধ্যমে কোনো অরাজকতা হয়নি, বরং শুরু হয়েছে স্থিতিশীল গণতন্ত্রের পথচলা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসকে বেছে নেয়া একটি নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন তিনি।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ, যার সবচেয়ে বড় সম্পদ তার জনগণ, বিশেষ করে তরুণরা। ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে তরুণদের সংগঠিত, শান্তিপূর্ণ ভূমিকা আমাকে অভিভূত করেছিল। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যেমন অভিবাসীরা গণতন্ত্রে ভূমিকা রাখছে, তেমনি প্রবাসী বাংলাদেশিরাও বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখতে পারে।
কবি, লেখক এবং সংগঠক শামসুদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কপিন স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিন অধ্যাপক জামাল উদ্দিন। সভা সঞ্চালনা করেন মেজর (অব.) সাফায়াত আহমেদ।