বিশ্বজমিন
ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর ইসরাইলের গুলি
গাজায় আরও ৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত
মানবজমিন ডেস্ক
(৮ ঘন্টা আগে) ১৬ জুন ২০২৫, সোমবার, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:১৪ অপরাহ্ন

ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে গাজাজুড়ে আরও কমপক্ষে ৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছেন ত্রাণকেন্দ্রে খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল-সমর্থিত বিতর্কিত সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্র থেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে খাদ্য নয়, খেয়েছেন গুলি। তাদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে ‘যুদ্ধাপরাধীদের’ হাত। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে বলা হয়, নেটজারিম করিডোরের কাছে একটি জিএইচএফ ত্রাণকেন্দ্রের দিকে এগোনোর সময় ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং অনেকেই আহত হন। গাজার দক্ষিণে আরও কমপক্ষে ১০ জন ত্রাণপ্রার্থী নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের অনেককে রাফায় রেড ক্রস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজম গাজার দেইর আল-বালাহ অঞ্চল থেকে জানান, ক্ষুধার্ত জনতার দিকে গুলি চালানোর আগে ইসরাইলি সেনারা কোনো ধরনের সতর্কতা দেয়নি। একজন ত্রাণপ্রার্থী আহমেদ আল-মাসরি বলেন, এ ঘটনাগুলো ছিল একটা ফাঁদ। আমরা বাঁচতে এসেছিলাম, মরতে নয়। রোববার গাজার দক্ষিণে একাধিক বিমান হামলায় কমপক্ষে ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উত্তরের বেইত লাহিয়া শহরে ইসরাইলি হামলায় সাতজন এবং নুসেইরা শরণার্থী শিবিরে আরও আটজন নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানান। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সতর্কতা দিয়ে বলছেন, গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা তীব্র। দুর্ভিক্ষ অবস্থা না হলে মানুষ ত্রাণশিবিরে একজন দু’জন নয়, পঙ্গপালের মতো ছুটে যেতো না। আর তার বিনিময়ে গুলি খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়তো না। খাবারের সন্ধানে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সামান্য ত্রাণ সংগ্রহে ছুটছে। কিন্তু তাদের গন্তব্যে অপেক্ষা করছে ইসরাইলি স্নাইপার, ড্রোন ও বোমারু বিমানের আঘাত। শুধু শনিবারই ৭৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই ত্রাণ সংগ্রহের সময় প্রাণ হারিয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, জিএইচএফ ত্রাণকেন্দ্র চালু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২৭৪ জন নিহত ও ২০০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন এই কেন্দ্রগুলোর আশপাশে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে, তারা ত্রাণপ্রার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। তবে দাবি করেছে, সন্দেহভাজনরা নির্ধারিত রুট থেকে বিচ্যুত হয়েছিল। তাই গুলি চালানো হয়।
হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরাইল ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোকে গণহত্যার ফাঁদে পরিণত করছে। ইসরাইলের চলমান যুদ্ধ ইতিমধ্যে ৫৫,৩০০-এর বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর বেশিরভাগই বেসামরিক। গাজার বেশির ভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২০ লাখের বেশি মানুষ।