অনলাইন
সাড়ে ২৩ কোটি বছর আগেও পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াতো প্রজাপতি, মথ!
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ সপ্তাহ আগে) ১০ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩:৩০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:১০ পূর্বাহ্ন

সাড়ে ২৩ কোটি বছরের পুরনো বিষ্ঠা থেকে মিলল লেপিডপ্টেরা (প্রজাপতি বা মথ জাতীয় পতঙ্গ)-এর আঁশ। আর্জেন্টিনার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যুক্ত জীবাশ্মবিদদের একটি দল যুক্তরাজ্যের একজন সহকর্মীর সঙ্গে কাজ করেন। তারা আর্জেন্টিনার তালাম্পায়া জাতীয় উদ্যানের একটি খননস্থল থেকে উদ্ধার করা বিষ্ঠার নমুনায় লেপিডোপ্টেরানের আঁশের প্রমাণ আবিষ্কার করেছে।
জার্নাল অব সাউথ আমেরিকান আর্থ সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত তাদের গবেষণাপত্রে বৈজ্ঞানিক দলটি লিখেছে, এত দিন পর্যন্ত লেপিডপ্টেরার অস্তিত্বের যেসব প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল, তার কোনওটিই এত পুরনো নয়। এ পর্যন্ত আবিষ্কার হওয়া লেপিডপ্টেরার প্রাচীনতম জীবাশ্মটি ছিল ২০কোটি বছর আগের। ফলে এত দিন গবেষণা ও বাস্তব প্রমাণের মধ্যে ব্যবধান ছিল প্রায় ৪ কোটি বছরের। এবার আর্জেন্টিনায় ২৩ কোটি ৬০ লাখ বছর পুরনো লেপিডোপ্টেরার আঁশ মেলায় সেই শূন্যস্থান পূরণ হল বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
২০১১ সালে তালাম্পায়া জাতীয় উদ্যানের একটি স্থানে খননকার্য শুরু হয়। কাজ শুরু হওয়ার পর বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, কোটি কোটি বছর আগে ওই স্থানটি শৌচকর্মের জন্য ব্যবহার করত জীবজন্তুরা! বিভিন্ন ধরনের প্রাণী ওই এলাকায় প্রস্রাব বা মলত্যাগ করত। সঙ্গে সঙ্গে ওই স্থান থেকে বিষ্ঠার প্রাচীন নমুনাগুলো সংগ্রহ করে গবেষণার জন্য আর্জেন্টিনার লা রিওজার গবেষণাগারে পাঠানো হয়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রায় ২৩ কোটি ৬০ লক্ষ বছরের পুরনো সেই বিষ্ঠার নমুনাতেই মেলে লেপিডোপ্টেরানের আঁশ! আকারে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ওই আঁশের দৈর্ঘ্য মাত্র ২০০ মাইক্রন, যা লেপিডোপ্টেরা অর্থাৎ মথ বা প্রজাপতি জাতীয় পতঙ্গের আঁশ বলে শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। সাড়ে ২৩ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ট্রায়াসিক যুগ চলছিল। এর মাত্র ১ কোটি ৬০ লাখ বছর আগেই শেষ হয়েছে পার্মিয়ান যুগ, যার সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে মুছে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে পৃথিবীর প্রায় ৯০ শতাংশ প্রাণী প্রজাতি! এবার সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগের বিষ্ঠার নমুনার খোঁজ মেলায় ওই যুগের প্রাণীজগৎ সম্পর্কে আরও বিশদে জানা যাবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে আধুনিক মথ বা প্রজাপতির সঙ্গে এদের মূল পার্থক্য হল, ট্রায়াসিক যুগে ফুলের অস্তিত্ব ছিল না। ফলে সে সময় সাইকাস জাতীয় গাছর বীজ (কোন) থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করতে হত এদের।
সূত্র: phys.org