ঢাকা, ৩০ মে ২০২৫, শুক্রবার, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

যুদ্ধাপরাধের বিচার ছিল ইচ্ছাকৃত নেতৃত্ব গণহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার
২৮ মে ২০২৫, বুধবার
mzamin

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টিকে ‘ইচ্ছাকৃত নেতৃত্ব গণহত্যা’ 
বলছেন দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মুক্তিযোদ্ধা হলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে শফিকুর রহমান বলেন, এই রায়ের মধ্যদিয়ে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে, এটা ছিল ইচ্ছাকৃত নেতৃত্ব গণহত্যা। তিনি বলেন, দায়িত্বশীল নেতা ঘরে ঘরে জন্মায় না, প্রতিদিন জন্মায় না। এটা আল্লাহর দান। একটা দেশ এবং দলকে নেতৃত্বশূন্য করার মানেই হচ্ছে জনগণকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয়া। জামায়াতের তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে আপিল বিভাগের বেকসুর খালাস দেয়ার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন- 

এই রায়ের মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, সত্যকে চেপে রাখা যায় না। সত্য মেঘের আড়াল ভেদ করে আলোর ঝলক নিয়ে আসে। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এই মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কাস্টমারি যে ল’ আছে, তা ফলো করা হয়নি, আবার ডোমেস্টিক কাস্টমারি যে ল’ আছে, সেটাও ফলো করা হয়নি। আমাদের দেশের এভিডেন্স যে ল’ আছে, সেটা মোটেই ফলো করা হয়নি। সেদিন সংবিধান কোনো বিষয়ই ছিল না, আইন কোনো বিষয়ই ছিল না। যাদের ইশারায় এই কোর্ট পরিচালনা করতেন, তাদের ইচ্ছাই ছিল রায়। সেটা বৈধ হোক অথবা অবৈধ হোক। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের এই মামলার একটা মামলা বৃটেনে পরিচালিত হয়েছে। বৃটেনের উচ্চ আদালত তাদের রায়ে বলেছে, এই মামলাগুলো বিচারের নামে প্রহসন ছিল জাস্ট জেনোসাইড অব দ্যা জাস্টিস। বিচারকে গণহত্যা করা হয়েছে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জেলে সবাই ছিলেন, আমিও ছিলাম। সেখানে সেজদায় গিয়ে অনেকগুলো দোয়া করতাম। একটা ছিল, আল্লাহ তোমার গোলাম এটিএম আজহারুল ইসলামকে তুমি বাঁচিয়ে রেখেছো। শেষমেষ তাকে দিয়ে সত্যটা প্রতিষ্ঠিত করে দিও। আল্লাহতায়ালা এই সত্যই আজকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখন দোয়া করি, তুমি তোমার গোলামের হায়াত বৃদ্ধি করে দাও, তাকে সুস্থতার পূর্ণ নিয়ামত দান করো। এই ময়দানে ফিরে এসে তিনি যেন জাতিকে নেতৃত্ব দিতে পারেন, তার জন্য তাকে কবুল করো। 
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা প্রতিশোধ নিইনি, আপনারা দেখেছেন, কিন্তু আমরা ন্যায়বিচার চাইবো। এই রায়ের মধ্যদিয়ে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে, এটা ছিল ইচ্ছাকৃতভাবে একটি দলের নেতৃত্বকে হত্যা করা। জামায়াত আমীর বলেন, মানুষ আমরা কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে না, দল হিসেবেও আমরা কেউ দাবি করি না ভুলের ঊর্ধ্বে। এই সংগঠনের প্রতিটি কর্মী-সহকর্মী কিংবা দলের দ্বারা যে যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন, সবার কাছে কোনো শর্ত নাই বিনা শর্তে মাফ চাই। আপনারা আমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জাতির অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। আমরা কথা দিচ্ছি, মহান আল্লাহর একান্ত ইচ্ছায় প্রিয় দেশবাসীর সমর্থন ও সহযোগিতায় যদি দেশের সেবা করার দায়িত্ব আমাদের উপরে আসে, আমরা ইনশাআল্লাহ প্রতিশোধের রাজনীতির অবসান ঘটাবো, বৈষম্যের রাজনীতির অবসান ইনশাআল্লাহ ঘটাবো এবং সমাজ থেকে বৈষম্য দূর করার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সবটুকু উজাড় করে দেবো।

তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি আমরা চাইবো, আমাদের সমাজ দুর্নীতি মুক্ত হোক, দুঃশাসন মুক্ত হোক, অপরাধ মুক্ত হোক, বৈষম্য মুক্ত হোক, কল্যাণধর্মী সমাজ হোক, মানবিক সমাজ হোক, সেই সমাজ গঠনে আপনাদের সাহচর্য, বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, সমর্থন ও দোয়া চাই। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, এহসান মাহবুব জুবায়ের, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল আলম, এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, নুরুল ইসলাম বুলবুল, মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, এটিএম আজহারুল ইসলাম সেলিমের ছেলে তাসনীম আজহার সুমন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status