চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মিছিলে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের হামলা, আহত ১৫

চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মিছিলে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। গতকাল বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে ছাত্রশিবিরের কর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতাকর্মীদের দেখা গেছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতারা জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধের দণ্ড থেকে খালাসপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের মুক্তির প্রতিবাদে তারা সেখানে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছিলেন। তবে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তাদের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি রিপা মজুমদার এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত বিশ্বাস সিকু ও অর্থ সম্পাদক সুদীপ্ত গুহ।

বিকাল ৩টায় বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হন। আগে থেকেই সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল। কিছুক্ষণ পর শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে একটি মিছিল প্রেস ক্লাবের সামনে আসে। তখন পুলিশ উভয়পক্ষের মাঝখানে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। এরমধ্যে ছোড়া ইটের টুকরায় কয়েকজন আহত হন। তখন গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা প্রেস ক্লাব ছেড়ে চেরাগি মোড়ের দিকে এগোতে থাকেন। এ সময় আবার শাহবাগবিরোধী ঐক্যের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে। এতে দু’জনের মাথা ফেটে যায়। 
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি পুষ্পিতা নাথ গণমাধ্যমকে বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় একজনকে খালাস দেয়া এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ করতে গিয়েছিলাম। মঙ্গলবার আমরা সমাবেশের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ থেকে এর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বিভিন্ন পোস্ট দেয়া হয়। এরপর প্রেস ক্লাবের সামনে গেলে আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলার ঘটনা ঘটে। কয়েকজন নারী নেত্রীসহ আমাদের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। 

অন্যদিকে জুলাই ঐক্যমঞ্চের চট্টগ্রামের প্রধান সমন্বয়কারী আবরার হাসান রিয়াদ বলেন, শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ বানিয়ে তথাকথিত আন্দোলনের নামে বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করেছিল। ড. ইউনূসের সরকার যখন বিচার বিভাগের আস্থা ফেরানোর কাজ শুরু করেছে, তখন তারা আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তারা যদি জুলাইয়ের চেতনা ধারণ না করে আবার ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলে আমরা তাদের প্রতিহত করবো। 

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, একটা সমাবেশ নিয়ে দু’পক্ষে পাল্টাপাল্টি উত্তেজনা হয়েছিল। মারামারিও হয়েছে। দু’জন আহত হয়েছেন। আমরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি।