নয়াপল্টনে তারুণ্যের সমাবেশ আজ

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র ৩ সংগঠন আজ তারুণ্যের সমাবেশ করবে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। বড় জমায়েতের চিন্তা করছে এই সংগঠন তিনটি। সমাবেশে ঢাকা, সিলেট, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ থেকে ১৫ লাখ তরুণের জমায়েত আশা করছে বিএনপি’র এই তিন সংগঠন। এতে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখবেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সমাবেশের আগের দিন গতকাল রাজধানীর ফার্মগেট খামার বাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা ও অর্থনৈতিক মুক্তি’ শীর্ষক এক সেমিনার যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, এখানে একটি ভুল ধারণার সৃষ্টি করা হয়েছে। এখানে একটি প্রতিপক্ষ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে বলে আমার মনে হচ্ছে। এটা কারা করছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। এখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ছাত্রদের নতুন দল, বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব যারা সৃষ্টি করছে, আমি মনে করি- এটা উদ্দেশ্যেমূলক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে অনেকে সেদিন বলেছিল। নতুন করে স্বাধীন হয়েছে কি না, আমি সেটা জানি না- বলবো না। আমি যেটা বলি, বাংলাদেশের সেদিন নতুন করে যাত্রা শুরু হয়েছিল। আজকে ৯ মাস পরে এসে সেই যাত্রা স্তিমিত হয়ে যাবে, স্থগিত হয়ে যাবে, ভুল পথে যাবে অথবা উল্টো পথে যাবে- সেটা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ হতে দেবে না। আজকের যে অস্থিরতা আপনারা দেখছেন, আমাদের সঠিক পথে যেতে হবে, যাতে আমরা সেই অস্থিরতা থেকে বের হয়ে আসতে পারি, সেই দায়িত্বটা কিন্তু পালন করতে হবে তরুণদের।

আগামীকালও (বুধবার) একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ড. মঈন বলেন, জুলাই-আগস্টে যারা রাজপথে ছিল, তারা নিজেরা কি বলেছে, সাধারণ ছাত্র। তারা তো সাধারণ ছাত্র ছিল। আমার একটি ছোট্ট প্রশ্ন ছিল, সেই সাধারণ ছাত্রের মধ্যে ছাত্রদলের ছেলেরা কি ছিল না? সেই সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে নুরু (নুরুল হক নুর) ও তার তরুণ ছেলেরা কি ছিল না? যে তরুণেরা সত্যিকারভাবে সঠিক পথে আছে। আজকে সেই তারণ্যের জয়গান গাইবো। আর যে তরুণেরা বিপথে যায় সেই তরুণদের আমি শ্রদ্ধা করি না। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোনোদিন গণতেন্ত্র বিশ্বাস করেনি। তারা মুখে বলেছে গণতন্ত্র এবং কাজে করেছে স্বৈরতন্ত্র। আমরা সেই অবস্থা থেকে মুক্তি চেয়েছি। আমরা বের হয়ে এসেছি। আমরা একটা পরিবর্তন চেয়েছি। কিন্তু সেই পরিবর্তন এমন যেন না হয়, আমরা আবার নতুন ট্র্যাপে পড়ে না যাই, আমার এই ভয়টি হচ্ছে, আমরা আবার নতুন কোনো ট্র্যাপে পড়ে যাচ্ছি কি না।   

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে আলোকচিত্রী ও মানবাধিকার কর্মী শহীদুল আলম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ডা. জাহেদ উর রহমান, আলাপের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও চিকিৎসক ডা. আব্দুন নূর তুষার, গবেষক ও বিশ্লেষক মেজর রেজাউল করিম, দি ডিসেন্টের সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির, সমকালের সহকারী সম্পাদক এহসান মাহমুদ বক্তব্য রাখেন। ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুবাশ্বার হাসান।
তরুণদের কাছে টানতে মে মাস জুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি’র এই তিন সংগঠন। চারটি বড় বিভাগ ও শহরে দুই দিন করে আট দিন সেমিনার ও সমাবেশ করছেন তারা। এর আগে চট্টগ্রাম, খুলনা আর বগুড়ায় সেমিনার ও সমাবেশ হয়েছে।