প্রথম পাতা
দুই ছিনতাইয়ের ভিডিও ভাইরাল
ভুক্তভোগী তরুণের মুখে ভয়াবহ বর্ণনা
ফাহিমা আক্তার সুমি
২৭ মে ২০২৫, মঙ্গলবারহঠাৎ তিন ব্যক্তি আমাকে ঘিরে ধরে। তারমধ্যে দুই ব্যক্তি মোটরসাইকেল থেকে নেমে কোনো কথা না বলে আমাকে মারধর ও চাপাতি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। আমার কাছে থাকা ব্যাগ, মোবাইল-নগদ টাকা কেড়ে নেয়। চাপাতি দিয়ে চার-পাঁচটা কোপ দেয়। আমার পেট, কব্জি, পাসহ শরীরের আরও কয়েকটি জায়গায় আঘাত লাগে। ওদের অনেক আকুতি-মিনতি করেছিলাম কিন্তু ওরা আমার কোনো কিছু ফিরিয়ে দেয়নি। ভয়-আতঙ্ক নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন আবদুল্লাহ নামে এক তরুণ। তিনি পল্টনের একটি রেস্তরাঁয় কাজ করেন। ১৯শে মে সকালে রাজধানীর মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলিতে ছিনতাইয়ের শিকার হন তিনি। এদিন আবদুল্লাহ গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন। এ ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা করেন তিনি।
ভুক্তভোগী এই তরুণ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মানবজমিনকে বলেন, ঘটনার দিন আমি সকাল পাঁচটায় বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে নয়াটোলা ভাড়া বাসা থেকে বের হই। বাসের জন্য হেঁটে মগবাজার পর্যন্ত গিয়েছিলাম। মগবাজার গ্রিনওয়ে গলিতে আসা মাত্রই মোটরসাইকেলযোগে তিন ব্যক্তি এসে আমাকে ঘিরে ধরে। দু’জন নেমে আমার ব্যাগ টানতে থাকে এবং মারধর করে। ওই দুই ব্যক্তির হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে চার-পাঁচটা কোপ দেয়। পরে আমার কাছে থাকা নগদ টাকা-মোবাইল কেড়ে নেয়। আমি জিনিসগুলো দেয়ার জন্য ওদের কাছে আকুতি-মিনতি করেছিলাম কিন্তু ওরা দেয়নি উল্টা আরও আঘাত করে চাপাতি দিয়ে। হাতের কব্জির মধ্যে, পেটে, ডান পায়েসহ শরীরের আরও কয়েকটি জায়গায় আঘাত লাগে। খুব বেশি কেটে যায়নি কিন্তু বেশ ব্যথা শরীর জুড়ে। সে সময় যতটা পেরেছি নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি ঘটে ভোর ৫টা ২১ মিনিটের দিকে। প্রায় নগদ ১৪ হাজার টাকা ছিল আমার কাছে। চাপাতি দিয়ে অনেক জোরেই কোপ দিয়েছিল। সে সময় যেমন ভয় পেয়েছি তেমন খুব চিন্তা হচ্ছিলো পরিবারের কথা ভেবে। এখনো আমার ভেতর থেকে ভয় আর আতঙ্ক কাটছে না। শুধু ভয়ঙ্কর দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভাসছে। আবদুল্লাহ বলেন, ঘটনার সময় আশপাশে কয়েকজন ব্যক্তি ছিলেন কিন্তু ভয়ে সবাই দৌড়ে চলে যায়, কেউ আমাকে সাহায্য করতে আসেনি। আবার তখন বেশি চিৎকারও করিনি; কারণ চিৎকার করলে আমার উপরে আরও বেশি আক্রমণ করবে সেজন্য। আমার জীবনে এই প্রথম এইরকম ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। এমন ঘটনা ঘটবে কখনো বুঝতে পারিনি। অনেক বড় বিপদের মুখ থেকে সৃষ্টিকর্তা আমাকে বাঁচিয়েছেন।
এ ঘটনার একটি ভিডিও রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন আবদুল্লাহ। মোটরসাইকেলে চালকসহ তিনজন আরোহী ছিলেন। দুইজন আরোহী অবদুল্লাহর পথ আটকায়। তাদের একজনের মাথায় হেলমেট ও আরেকজনের মুখে মাস্ক পরা ছিল। দুজনের হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে এই তরুণকে আঘাত করে কাছে থাকা জিনিসপত্র কেড়ে নেয়।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু মানবজমিনকে বলেন, এ ঘটনায় রোববার রাতে একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী আবদুল্লাহ। তিনি ঘটনার দিন গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলেন। এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে ঢাকার পল্লবী মেট্রো স্টেশনের নিচে ফুটপাথে আরেকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ধস্তাধস্তি করে অস্ত্রের মুখে এক তরুণের ফোন ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। ভিডিওতে দেখা যায়, পল্লবী মেট্রো স্টেশনের নিচে ফুটপাথ ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। তার কাঁধে ব্যাগ ছিল। তার পেছনে আসছিলেন তিনজন। এরমধ্যে একজন সামনের দিকে চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তিনজন তার গতি রোধ করে। পরবর্তীতে ছিনতাইকারীরা ধস্তাধস্তি করে ভুক্তভোগী তরুণের কাছে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এসময় ছিনতাইকারীদের মধ্যে একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। জানা যায়, ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম আল-আমিন রানা। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। রাজধানীর পল্লবী এলাকায় থাকেন। ঘটনাটি ২৪শে মে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে ঘটে।
পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম মানবজমিনকে বলেন, ঘটনাটি সত্য। এ ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি এখনো। ঘটনাটি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।
পাঠকের মতামত
ছিনতাই আগেও ছিল কিন্তু এখন যেভাবে প্রকাশ্যে প্রতিনিয়ত হচ্ছে এটা পরিকল্পনা মাফিক করছে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য পেশাদার ছিনতাই কারীকে প্রলোভন দেখিয়ে এর সাথে সার্থেন্বাষী কিছু লোক জড়িত হয়ে এগুলো করছে,সরকার শুধু দাবি দাওয়া এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মন সন্তুষ্ট করতেই ব্যস্ত -যা জনগনকে অবহেলা করা হচ্ছে
আমার ধারণা এসব ঘটনা পতিত আওয়ামী লীগের লোকজন করছে। সরকার এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।
খুন, ছিনতাই, এখন নিত্য দিনের সাথী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান সরকারকে বলছি আমাদের জীবনের নিরাপত্তা দিন। আপনারা তো পুলিশ প্রহারায় আছেন। সাধারন মানুষের কথা চিন্তা করুন ।
The situation is the same not only in Dhaka, but all over Bangladesh. Serious deterioration of law and order,
ARMY should arrest them immediately and will give them examplanatory punishment.
স্বৈরাচারের দোসর অনেকে এতদিন রাজনৈতিক ধান্দায় এত দিন পেট চালিয়ে আসলে ও এখন সেই ধান্ধা অন্ধ হয়ে যাওয়াতে অনেকে ছিনতাইয়ের পথ বেছে নিয়েছে।