অনলাইন
মিয়ানমারকে সহায়তার জন্য আসিয়ানকে পাশে চায় জাপান
স্টাফ রিপোর্টার, মালয়েশিয়া
(৯ ঘন্টা আগে) ২১ মে ২০২৫, বুধবার, ৭:৫৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৩ পূর্বাহ্ন
মিয়ানমারে চলমান সংকট মোকাবেলায় এবং দেশটিতে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে জাপান এবার আসিয়ান এবং বিশেষ করে মালয়েশিয়ার পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে। গত মার্চে দেশটিতে ঘটে যাওয়া শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে বলে জানানো হয়েছে।
বারনামা জানিয়েছে, মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নোরিউকি শিকাতা বলেছেন, "মিয়ানমারে ভূমিকম্পের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছি এবং দেশটির পুনর্গঠনে অংশ নিতে আগ্রহী। তবে বর্তমানে কার্যকরভাবে এই সহায়তা কার্যক্রম চালানো অত্যন্ত কঠিন। আমি মালয়েশিয়ার কাছে বড় প্রত্যাশা রাখি যেহেতু তারা এ বছর আসিয়ানের চেয়ারম্যান। এই সংকট মোকাবেলায় মালয়েশিয়ার নেতৃত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাপান মালয়েশিয়ার নেতৃত্বে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।"
এদিকে আসিয়ান মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (এএইচএ) সেন্টার জানিয়েছে, গত ২৮ মার্চ মিয়ানমারের মান্দালয়ের কাছে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৩,৭০০ জন নিহত হয়েছেন। এই দুর্যোগে প্রায় ৫ লাখ ৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১শ ৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৮ হাজার ৫০০ এর বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত জাপানের এ রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, "জাপান সবসময় আসিয়ানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল এবং আমরা এই চ্যালেঞ্জিং সময়েও সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাই।"
উল্লেখ্য যে, জাপান ১৯৭৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আসিয়ানের ডায়লগ পার্টনার হয় এবং ২০২৩ সালে এই সম্পর্ক 'কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ'-এ পৌঁছায়। আসিয়ান প্লাস থ্রি, আসিয়ান প্লাস সিক্স, ইস্ট এশিয়া সামিট এবং আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের মাধ্যমে জাপান দীর্ঘদিন ধরেই আসিয়ানের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছে। বারনামা আরো জানিয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়া ও জাপান একসাথে 'এশিয়া জিরো এমিশন কমিউনিটি (এজেডইসি)' মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক আয়োজন করবে, যেখানে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি নিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও এগিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রসঙ্গে শিকাতা আরো বলেন, "জাপান ও মালয়েশিয়ার মধ্যে শিক্ষা খাতে দৃঢ় ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মালয়েশিয়ায় ২০২৪ সালে ইউনিভার্সিটি অফ তসুকুবার প্রথম আন্তর্জাতিক শাখা ক্যাম্পাস স্থাপিত হচ্ছে, যা জাপানের প্রথম বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এছাড়া, ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত মালয়েশিয়া-জাপান ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এমজিআইআইটি) আমাদের সহযোগিতার বড় উদাহরণ। শুধু 'লুক ইস্ট' নীতির বাইরে গিয়ে আমি চাই ‘এক অপরকে জানা’র নীতিতে আমরা এগিয়ে যেতে।”
এছাড়া জাপান ফিলিস্তিন ইস্যুতে আগের মতোই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কনফারেন্স ও কোঅপারেশন এমং ইস্ট এশিয়ান কান্ট্রিস ফর প্যালেস্টিনিয়ান ডেভেলপমেন্ট (সিইএপিএডি) এর মাধ্যমে জাপান ফিলিস্তিন, বিশেষত গাজার দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নে সহায়তা করে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষার সুযোগ এবং মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান তৈরি করলেই স্থায়ী শান্তি ও সমৃদ্ধির ভিত্তি গড়ে তোলা সম্ভব। এ ধরনের উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, এবং আমরা মালয়েশিয়া সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
পাঠকের মতামত
Why didn't Japan bring the same army kicked Roginga out of the country?