ঢাকা, ২২ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

পরমাণু বিজ্ঞান গবেষণার আলোচনা সভায় ফরহাদ মজহার

বিদেশ ভ্রমণের টিকিট দিলেই আমলারা অনেক কিছু সাক্ষর করতে প্রস্তুত থাকেন

স্টাফ রিপোর্টার

(১২ ঘন্টা আগে) ২১ মে ২০২৫, বুধবার, ৬:২৪ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

mzamin

আশির দশক পর্যন্ত দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে সামরিক অংশগ্রহণ থাকত। কিন্তু এখন পরাশক্তিগুলো বিভিন্ন এজেন্সি ও প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এই নিয়ন্ত্রণ করে। আমলাদের পরিবারসহ বিদেশ ভ্রমণের টিকিট দিলে তারা অনেক কিছু স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত থাকেন বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।

বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরমাণু বিজ্ঞান গবেষণার সম্ভাবনা, সংকট ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার আরও বলেন, জনগণের অর্থে বিদেশে গিয়ে সরকারি আমলাদের করা পিএইচডির প্রায়োগিক ক্ষেত্র কোথায়? প্রশাসন সম্পর্কে ধারণা নিতে পিএইচডির প্রয়োজন হলে তাঁরা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই সেটা করতে পারেন। যে রাষ্ট্র স্বাধীনভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিচর্চা গড়ে তুলতে পারে না, তাদের সার্বভৌমত্ব অর্থহীন। আধুনিক রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হলে পরমাণু ও বিজ্ঞানচর্চায় স্বাধীনতার বিকল্প নেই। ৫৪ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের মানুষকে এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বহুবার জীবন দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে হবে। জ্ঞান উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এখনো মনোযোগী হওয়া যায়নি। এটা খুবই দুঃখজনক। রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করতে পরমাণু শক্তি কমিশনের স্বায়ত্তশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এখানকার বিজ্ঞানীদের গবেষণা কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতা দেয়া জরুরি। জানি না, প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেশ কতটা নিরাপদ। কারণ, জনগণের কাছে প্রধান উপদেষ্টাকে জবাবদিহি করার মতো কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি।
তিনি বলেন, গত ৮ই আগস্ট পুরোনো সংবিধানের অধীনে উপদেষ্টারা শপথ গ্রহণ করায় চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধ্বংস হয়ে গেছে। ছাত্ররা যে নতুন সংবিধানের কথা বলছেন, সেটা অর্জিত হলে সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের স্বাধীনতা ফিরে পাবে। এ সময় তিনি পরমাণু শক্তি কমিশনের উত্থাপিত ১১ দাবির প্রতি সমর্থন জানান।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শেখ মঞ্জুরা হক। আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেন, পরমাণু শক্তি কমিশনের আগের সেই জৌলুস এখন মলিন হয়ে গেছে। পাশের দেশ ভারতের পরমাণু শক্তি কমিশনের জৌলুস দূর থেকেও বোঝা যায়। পরমাণু শক্তি কমিশনের নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকাটা বিস্ময়কর। ভারত ও পাকিস্তানের পরমাণু কমিশন সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকে। বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান মন্ত্রণালয়ের অধীনে থেকে সফল হতে পারেনি। কারণ, সরকারি কর্মকর্তারা শুধু সার্টিফিকেট (সনদ) চেনেন।
তিনি বলেন, পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানীরা ফুল ব্রাইট স্কলারশিপ পেয়েও মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না পেয়ে সেটা হাতছাড়া করেছেন। জ্ঞান নিয়ন্ত্রণের এই মানসিকতা কেন? আমলাদের জ্ঞানহীনতার এমন উদাহরণ লজ্জার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দিন। তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিচর্চায় অবহেলা দেখা গেছে। পরমাণু শক্তি কমিশনের উত্থাপিত সমস্যা সমাধানের অন্যতম কারণ রাজনৈতিক সদিচ্ছা না থাকা। রাষ্ট্র তার পরমাণু ও বৈজ্ঞানিক উৎপাদনকে প্রাধান্য না দিলে উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়বে। এখানে মন্ত্রণালয়ের খবরদারি থাকলে কাজের মনোযোগটা থাকবে না। তাদের যে প্রণোদনা দেয়া হয় তা মোটেই যথেষ্ট না। তাদের আলাদা বেতন কাঠামো থাকা উচিত।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম সাইফুল্লাহ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সভার প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ রোমেল, পরমাণু শক্তি কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক ফারিয়া নাসরীনসহ কমিশনের বিজ্ঞানী ও বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

‘দ্য উইক’ ম্যাগাজিনে তারেক রহমানকে নিয়ে কাভার স্টোরি/ ‘নিয়তির সন্তান’

বৃটেনে ইমিগ্রেশন আইনে পরিবর্তন/ ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিলেন স্টারমার

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status