ঢাকা, ২১ মে ২০২৫, বুধবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বাংলারজমিন

বান্দরবানে দু’টি সড়কে খুলছে সম্ভাবনার দুয়ার

নুরুল কবির, বান্দরবান থেকে
২১ মে ২০২৫, বুধবার
mzamin

বান্দরবানে দু’টি সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে খুলে যাচ্ছে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। লামা-সুয়ালক ও ইদগড় হতে পুনর্বাসন-বাইশারী বাজার পর্যন্ত সড়ক দু’টি নির্মাণের মাধ্যমে অর্থনীতিতেও বিরাট ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে পাহাড়ের আর্থ-সামাজিক নানা হিসাব। বদলে যাবে পাহাড়ের  যোগাযোগব্যবস্থা। ফলে দু’টি সড়কের মাধ্যমে পাল্টে যাবে দুর্গম এলাকার দৃশ্যপথ। এদিকে, রাস্তাগুলো টেকসই ও ভালোমানের হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলজিইডি’র কর্মকর্তারা। এতে ভারী যানবাহন বান্দরবান সদর থেকে লামা আলীকদম ও নাইক্ষংছড়ি হয়ে দ্রুত কক্সবাজার যেতে পারবে। এ কারণে পর্যটকদের মাঝে এক আশার আলো দেখা গেছে।
দেশের পার্বত্য অঞ্চলে অপার এক সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে। এখানকার পর্যটন খাত, কৃষি ও ফলদ চাষাবাদ-উৎপাদনের  ক্ষেত্রে নানা নতুন নতুন সম্ভাবনা  দেখা দিচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চলে উৎকৃষ্টমানের ড্রাগন, কাজু বাদাম, কমলা-মাল্টা, আনারস, আম, কলাসহ নানা কৃষি ও ফল-ফলাদি উৎপাদন হতে শুরু করেছে। এমনকি এখানে ভালো মানের কফি উৎপাদন শুরু হয়েছে। এরকম আরও নানা কৃষি সম্ভাবনা এখানে জেগে উঠেছে। এ অবস্থায় সড়ক দু’টি নির্মাণে নতুন সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয়রা। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছর শেষ নাগাদ এর কাজ শেষ হলে খুলে যাবে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। লাঘব হবে দীর্ঘদিনের সীমাহীন দুর্ভোগ আর ভোগান্তি। এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত কৃষিকাজকরণ ও নায্যমূল্যে দাম পাবে এই অঞ্চলে জনসাধারণ মানুষ। ফলে সহজেই পরিবহন  থেকে শুরু করেন নানা ভোগান্তি  থেকে রেহাই পাবে সাধারণ মানুষ। এলজিইডি’র তথ্যমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় দু’টি সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে।  লামা-সুয়ালক ও ইদগড় হতে পুনবার্সন-বাইশারী বাজার পর্যন্ত ৫ হাজার ২৫০ মিটার ও ৪ হাজার ১০০ মিটার এই দুটি সড়কের প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সড়ক দু’টি বাস্তবায়ন করছেন মের্সাস মারমা এন্টারপ্রাইজ স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার আবুল কালাম সেন্টু ও  মের্সাস মিল্টন ট্রেডার্স স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মো. মিজানুর রহমান সুজন। এলাকাবাসী জানান, ভাঙাচোরা সড়কে যানজটের ভোগান্তি নিত্যদিনের সঙ্গী এখন যাত্রীদের। দ্রুত প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হলে, যাতায়াতের সুব্যবস্থার পাশাপাশি ভাগ্য বদল হবে স্থানীয়দের। এখন পর্যন্ত একটি সড়কের শতভাগ ও আরেকটি সড়ক ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। 
সরজমিন দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ে নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে পুনর্বাসন-বাইশারী বাজার পর্যন্ত  ৪ হাজার ১০০ মিটার সড়কটি। তবে লামা-সুয়ালক পর্যন্ত ৫ হাজার ২৫০ মিটার সড়ক কাজের অগ্রগতি ৯৫ শতাংশ  শেষ হয়েছে। এই সড়কের পুরোদমে চলছে কার্পেটিং,  ড্রেনসহ বিশাল কর্মযজ্ঞ। দিনরাত প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের নিরলস প্রচেষ্টায় দৃশ্যমান হয়েছে সড়কটির অধিকাংশ সড়ক। রাস্তা উন্নতি হওয়াই খুশি দুই উপজেলার বাসিন্দারা। লামা ক্যাজুপাড়া ও বাইশারি বাসিন্দা জানে আলম ও সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রতিদিন এই দুটি সড়ক দিয়ে হাজার মানুষ চলাচল করে থাকেন। খানাখন্দে ভরা কারণে মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনার শিকার হতো। মূল সড়ক হিসেবে কৃষি পণ্য থেকে শুরু করে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এই সড়কটি ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে সড়কটি প্রশস্ত করাই রাস্তাগুলো বড় হয়ে  গেছে। এখন চলাচলে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে না। এই সড়কে মাধ্যমে অর্থনৈতিক আরও বৃদ্ধি পাবে। বান্দরবান এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তাসাউর জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় পুনর্বাসন বাইশারী বাজার পর্যন্ত শতভাগ সম্পন্ন ও লামা-সুয়ালক সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ ৯৫ শতাংশ হয়েছে। এ সড়কগুলো প্রশস্তকরণ শেষ হলে বান্দরবান সদরের সঙ্গে দুই উপজেলার মানুষ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। যেসব এলাকায় দুর্ভোগ  পোহাতে হতো সেখানে এই সড়কের মাধ্যমে উপকার হবে। চাষিরা নায্যমূল্যে দাম পাবে। আর এলাকা জনসাধারণ মানুষ চলাচলের নিশ্চিত হবে।

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status