অনলাইন
অক্সফোর্ড ছাড়লেন ব্র্যাকের জন্য, পরে জানলেন অফার লেটার বাতিল
স্টাফ রিপোর্টার
(৩ ঘন্টা আগে) ১৯ মে ২০২৫, সোমবার, ৮:৪৪ অপরাহ্ন

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করছিলেন মুহাম্মদ উবায়দুল হক (জাবের উবায়েদ)। ব্র্যাকের চাকরির সুযোগ পেয়ে ছেড়ে দেন অক্সফোর্ডেরর চাকরি। তবে ‘অফার লেটার’ এবং কারণ ছাড়াই তা ‘সাসপেন্ড’ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এক শিক্ষক।
সোমবার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমনটাই জানান উবায়দুল হক। তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন- সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় আমার সাথে বড় ধরনের একটি অন্যায় আচরণ করেছে। আমি স্কুল অব জেনারেল এডুকেশনে ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে জয়েন করার জন্য আবেদন করি গত ফেব্রুয়ারিতে। দুই দফা ইন্টারভিউ, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা ও সব প্রক্রিয়া শেষে কনফার্মেশন ইমেইল পাই ২৮শে এপ্রিল। লেকচারার হিসেবে অফার লেটার পাই গত ৯ই মে। জয়েনিং ডেট উল্লেখ করা হয় জুনের ১ তারিখ। আমার সাথে এইচআর থেকে যিনি যোগাযোগ করছিলেন তার পরামর্শক্রমে আমি ইউকে থেকে দেশে ফেরার সার্বিক প্রস্তুতি নিতে থাকি।
আপনারা জানেন যে আমি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে Assessment Officer হিসেবে চাকরি করছিলাম গত মার্চ মাস থেকে। তবে দেশে আসতে চাচ্ছিলাম দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় যদি কিছু অবদান রাখা যায় সে চিন্তা থেকে।
সেই এইচআর অফিসারের সাথে আলাপের ভিত্তিতে আমি আমার অক্সফোর্ডের অফিসে মে মাসের শুরুতেই নোটিশ দেই। সে অনুযায়ী তারা আমার রিপ্লেসমেন্ট হায়ার করে গত ১৩ই মে। আর আমি রিজাইন করি ১৪ই মে। একই সাথে ২০ তারিখে দেশে আসার বিমানের টিকেটও বুক করি।
আমি যখন দেশে আসার সব প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছি এর মধ্যে গত ১৫ই মে একতরফাভাবে কোন কারণ না বলে আমার অফার লেটার সাসপেন্ড করে দেয় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। অক্সফোর্ডে আমার রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে নেয়ায় আগের জবে জয়েন করার আর সুযোগ নাই। আমি ব্র্যাকের ফিরতি ইমেইলে কারণ জানতে চেয়েছি। এর কোন জবাব পাই নি।
আজ আবার জেনারেল এডুকেশনে স্কুলের ডীনের সাথে যোগাযোগ করলে আমায় এইচআর এর নোটিশ ও জবাবের দিকে রেফার করেন। আর বিস্তারিত কারণ বলার প্রয়োজন বোধ করেন নি।
এইচআর এর যে অফিসার আমার সাথে সবকিছু নিয়ে আলাপ করেছেন শুরু থেকে তিনিও অফার সাসপেন্ডের ইমেইলের কপিতে আছে। তার এ ব্যাপারের জানার কথা থাকলেও উনি বলছেন যে কিছু জানেন না। উনি যেন কিছু লুকানোর চেষ্টা করছেন ও অসত্য বলছেন।
অফার লেটারে উল্লেখ ছিল যে জয়েনিং সন্তোষজনক ব্যাকগ্রাউন্ড ভেরিফিকেশনের উপরে নির্ভর করবে। আমার বিরুদ্ধে কোন ক্রিমিনাল রেকর্ড নাই। আমার মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড ও সোস্যাল মিডিয়ায় টুকটাক লিখি। জুলাই কেন্দ্রিক একটিভিজমকে প্রমোট করি।
আমি ব্র্যাক থেকে আমার সেকেন্ড মাস্টার্স করেছি। সম্মানজনক শিভেনিং স্কলারশিপ পেয়ে বিশ্বের ১ নামার এডুকেশন স্কুল (টাইমস হায়ার এডুকেশন সাবজেক্ট র্যাঙ্কিং অনুযায়ী) Institute of Education, UCL এ পড়েছি। আমি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১ জানুয়ারী থেকে ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত কর্মরতও ছিলাম। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মিলিয়ে ১ বছর কাজ করেছি Outreach Delivery Assistant এবং Assessment Officer হিসেবে। আমার বিভিন্ন সাকসেস স্টোরি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারও করেছে দুই বার। তার পরেও আমার সাথে এমন একটি অন্যায্য একটি জঘন্য আচরণ করলো; সেটা আমি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছিনা।
আমি আর ব্র্যাকে জয়েন করবো না। কিন্তু এমন আচরণ তারা কিভাবে একজন মানুষের সাথে করতে পারে সেটা বুঝতে চাই। কিভাবে আমার যোগ্যতাকে, দক্ষতাকে অগ্রাহ্য করে আমার সাথে অন্যায় আচরণ করলো এর জবাব চাই। আমার মতো একজনের সাথে এমন আচরণ করতে পারলে আরো কত মানুষের সাথে এমন হয় সেটা আমরা জানি না। এর প্রতিকার জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে হতেই হবে।
জানা যায়, উবায়দুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করার পর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে যোগদান করেন। এর আগে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড মাস্টার্স করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়টির বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বরাতে কমিউনিকেশন অফিস গণমাধ্যমকে জানান, ১৮৭২ সালের চুক্তি আইনের ধারা ৫ অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার অফার লেটারটি প্রত্যাহার করেছে। যথাযথ বিবেচনার পর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
পাঠকের মতামত
You shouldn't try to go back to BD unless you want to rob the country (ref ex Sylhet mayor, or ex Hobiganj MP or, Prof, Z Iqbal).
"লোভের সাগর পুকুরে যায়"
এখনো সেই বৃটিশ আইনেই অর্থাৎ ১৮৭২!!কি আশ্চর্য দেশের এই রোগাক্রান্ত ভোংগুর শিক্ষাব্যবস্হার হাল ধরতে চেয়েছিলেন যিনি তাঁর সাথে কেন এমন করা হলো সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া জরুরী।
জটিল বিষয়।