অনলাইন
‘পারলে ধরে দেখাও', দেয়ালে লিখে আমেরিকার জেল ভেঙে পলাতক ১০
মানবজমিন ডিজিটাল
(৪ ঘন্টা আগে) ১৮ মে ২০২৫, রবিবার, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন

আমেরিকার নিউ অরলিন্স কারাগারে আটক ১০ জন ব্যক্তি যার মধ্যে চারটি হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত একজন ছিলেন, শুক্রবার ভোরে তারা প্রত্যেকে পালিয়ে গেছে জেল থেকে। জেল ভেঙে পালানোর পথে ছাপ রেখে বন্দিরা পুলিশকে বার্তা দিয়ে গেল, ‘পারলে আমাদের ধরো।’ সেখানে আঁকা অজস্র গ্রাফিতি। যার পরতে পরতে পুলিশকে কটাক্ষ। নিউ অরলিন্সের কারাগারে এমন ঘটনায় কার্যত টলে গিয়েছে জেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তদন্তে নেমেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
আমেরিকার নিউ অরলিন্সের জেলে কুখ্যাত কয়েদিদের বন্দি রাখা হয়। তাদেরই ১০ জন দুঃসাহসিক কাজটি করে ফেলেছে। শনিবার সকালে বন্দিদের হিসাব মেলাতে গিয়েই বিষয়টা ধরা পড়ে। দেখা যায়, ১০ জন কম। খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায়, বন্দিরা পালিয়েছে। শুধু তাই নয়, পালানোর পথে নিজেদের কীর্তির ছাপ রেখে গেছে। কারাগারের শৌচালয় ও তার পাইপলাইন সংলগ্ন পথ দিয়েই পালিয়েছে তারা। সেই রাস্তার কোথাও লেখা– ‘খুবই সহজ!’ কোথাও আবার সাফ চ্যালেঞ্জ – ‘পারলে আমাদের ধরো।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, রাতে তারা কমলা রঙের পোশাক পরা একদল ব্যক্তিকে জেলের মধ্যে দৌড়তে দেখেছেন, তবে তারা পালিয়ে যাচ্ছে বলে বুঝতে পারেননি।
নিউ অরলিন্সের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট অ্যান কার্কপ্যাট্রিক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বিষয়টিকে আমাদের গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে। আমরা জনসাধারণকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
প্রাথমিক তদন্তে গাফিলতির কথা মেনে নিয়েছেন সেখানকার শেরিফ হাটসন। দেখা যাচ্ছে, অনেক গরাদের তালা ভাঙা, কোথাও আবার দরজায় রয়েছে ত্রুটি। কারাগারে কর্মী সংখ্যাতেও সংকট। শতভাগ কর্মী নেই, কাজ করছেন ৬০ শতাংশ। আরও উল্লেখযোগ্য, জেলের মধ্যেকার সিসিটিভিগুলির এক তৃতীয়াংশই কাজ করে না।
পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন ডেরিক গ্রোভস, যিনি নিউ অরলিন্সের লোয়ার নাইনথ ওয়ার্ড এলাকায় ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ফ্যাট টিউজডে উদযাপনের সময় দুইজনকে গুলি করে হত্যা এবং আরও দুজনকে আহত করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন। জুরিরা তাকে দ্বিতীয়-ডিগ্রি হত্যা এবং হত্যার চেষ্টার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেন। অরলিন্স জাস্টিস সেন্টার পূর্বে অরলিন্স প্যারিশ কারাগার নামে পরিচিত ছিল। নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে এটি দীর্ঘদিন ধরে বিচার বিভাগের তদন্তের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার ফলে ২০১৬ সালে ফেডারেল সরকারের সাথে একটি সংস্কার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে প্রভাবিত করে এমন সমস্ত সম্মতি ডিক্রি পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছে। ট্রাম্পের মতে, ‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ আইন প্রয়োগকে অসম্ভব করে তুলেছে।’
প্রশাসন বলেছে যে, পর্যালোচনার লক্ষ্য- ‘আইন প্রয়োগকারী কার্য সম্পাদনে অযথা বাধা সৃষ্টি করে এমন সিস্টেমগুলো সংশোধন, বাতিল বা পদক্ষেপ নেয়া যুক্তিসঙ্গত কিনা তা নির্ধারণ করা।’
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান