বাংলারজমিন
সিরাজগঞ্জে গ্রেপ্তার আয়নাঘরের মালিক, আদালতে স্বীকারোক্তি
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
১৫ মে ২০২৫, বৃহস্পতিবারসিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় একটি ব্যক্তিগত আয়নাঘরে দুইজন নারী ও পুরুষকে বন্দি করে রাখার ঘটনায় আলোচিত সেই বাড়ির মালিক গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালতে স্বীরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকালে সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট আদালত (১) এর বিচারক আলমগীর হোসেন ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। গ্রেপ্তার সুমন সেখ (২৩) রায়গঞ্জ উপজেলার সোনারাম মধ্যপাড়ার জহুরুল ইসলামের ছেলে এবং আলোচিত সেই আয়নাঘরের মালিক। বুধবার (১৪ই মে) সকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ ডিবি’র এসআই নাজমুল হক রতন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সোমবার রাতে সদর উপজেলার বহুলী বাজার এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার বিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সাড়ে ৩ ঘণ্টা জবানবন্দি রেকর্ড করার পর সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
নাজমুল হক আরও বলেন, জবানবন্দিতে সুমন জানিয়েছে পল্লী চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরাফাত তাদের বাসা ভাড়া নিয়ে নিচের ফ্লোরে দুইটি কক্ষ তৈরি করেন। যেখানে দুইজন নারী ও পুরুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। তিনি নিজে তাদের খাবার সরবরাহ করতেন। আরাফাতসহ অজ্ঞাত ২/৩ জন সেখানে নিয়মিত যাতায়াত করতো। এসআই নাজমুল হক বলেন, গ্রেপ্তার সুমন এ ঘটনায় দায়ের হওয়া দু’টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ঘটনার দিন এসব মামলার প্রধান আসামি নাজমুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের পূর্ব পাইকড়া গ্রামের আব্দুল জুব্বার (৭৫) ও লক্ষ্মী বিষ্ণু প্রসাদ গ্রামের শিল্পী বেগমকে (৪৮) সুমন সেখের বাড়িতে বন্দি করে রাখা হয়। ১ মে গভীর রাতে নিজেদের চেষ্টায় তৈরি করা সুড়ঙ্গ দিয়ে তারা বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন। পরেরদিন বিষয়টি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ লোকজন অভিযুক্ত আরাফাত ও সুমনের বসতবাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এদের মধ্যে আব্দুল জুব্বারকে ২০২৪ সালের ৮ই নভেম্বর এবং শিল্পী বেগমকে ১২ই ডিসেম্বর অপহরণ করা হয়েছিল। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুল জুব্বারের ছেলে শফিকুল ইসলাম ও শিল্পী বেগমের স্বামী মনসুর আলী বাদী হয়ে আলাদা দুইটি মামলা করেছেন। শফিকুলের মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জন এবং মনসুর আলীর মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। প্রধান নাজমুল উপজেলার পশ্চিম লক্ষ্মীকোলা গ্রামের বাসিন্দা ও ইনকিলাব পত্রিকার রায়গঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি। এ ঘটনার পর তাকে রায়গঞ্জ প্রেস ক্লাবের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।